ডাবল এজেন্ট – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।
বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ কাজী আনোয়ার হোসেন
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ২২৭
ডাবল এজেন্ট – বইটির এক ঝলকঃ
লাগল। এখান থেকে হাত বাড়ালে পাশের বিল্ডিঙটা ছোঁয়া যাবে বলে মনে হল। বাম দিকে পেঁচানো লোহার সিঁড়ি নিচে নেমে গেছে।
“বিল্ডিঙ থেকে বেরুব কিভাবে?’ জানতে চাইল রানা। ‘মানে, নিচে নামার পর?’ ঝুঁকে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে ও। আকাশ ছোঁয়া বিল্ডিঙের মাঝখানে ছোট্ট একটা উঠন ছাড়া আর কিছু দেখতে পাচ্ছে না।
‘বেরুবার দরজাটা ব্যবহার করতে পারবে, শুধু যার কাছে চাবি আছে,’ বলল মমতাজ। ‘মোট চার সেট চাবি তিনটে আছে আমার তিন ম্যানেজারের কাছে, একটা আমার কাছে। দরজাটা খুলে সরু প্যাসেজে ঢুকব আমরা, একটা কার শো-রুমের পাশ দিয়ে এগিয়ে গেছে, শেষ মাথায় আরও একটা দরজা। একই চাবি দিয়ে দুটো দরজা খোলা যায়। দ্বিতীয় দরজা খুললে বার্কলি স্ট্রীটে পৌঁছে যাবে তুমি।
‘যাও তাহলে, ছোটো!’
লোহার সিঁড়ির দিকে ঘুরল মমতাজ, রেইলটা এক হাতে ধরল। ঠিক সেই মুহূর্তে ইমার্জেন্সিডোর-এর ওপাশ থেকে ছুটন্ত পায়ের আওয়াজ শুনতে পেল রানা ।
‘জলদি!’ চাপা গলায় বলল ও। ‘তোমাকে আমি পালাতে বলছি! নিচে নামো! দরজা বন্ধ কোরো না। গাঢ় সবুজ একটা বেন্টলি দেখতে পাবে হোটেল মেফেয়ারের উল্টোদিকে। হোটেলের লবিতে আমার জন্যে অপেক্ষা করবে। যদি আমার দুটো হাতই দেখতে পাও, বেরিয়ে এসে গাড়ির দিকে ছুটবে। আর যদি দেখ আমার এক হাত পকেটে, আধ ঘন্টার জন্যে হারিয়ে যাবে। আধ ঘন্টা পর আবার ফিরে এসে অপেক্ষা করবে আমার জন্যে। তখনও ওই একই সঙ্কেত। যাও এবার, যাও!’
এক সেকেও ইতস্তত করল মমতাজ, তারপর পেঁচানো সিঁড়ি বেয়ে দ্রুত নামতে শুরু করল। সিঁড়িটা এমন দুলতে শুরু করল, মনে হল ভেঙে পড়ে যাবে। চোখ সরিয়ে নিয়ে ইমার্জেন্সী এগজিট-এর দরজার দিকে ঘুরল রানা, হাতে চলে এল এএসপি নাইন এমএম, ধরে আছে কোমরের কাছে।
ছুটন্ত পায়ের শব্দ কাছে চলে আসছে। আওয়াজ শুনে যখন মনে হল দূরত্বটা ঠিক আছে, সবেগে দরজার কবাট দুটো খুলে ফেলল রানা। এ- ধরনের সঙ্কটে সময়ের চুলচেরা হিসাব একান্ত দরকার, ভুল হলে জীবন দিয়ে মাশুল গুনতে হতে পারে। ওর টার্গেট পুলিস নয়, শুধু এটা নিশ্চিতভাবে জানার জন্যে মাপা একটু সময় রাখল রানা হাতে। পুলিস যদি ওকে অপরাধী বা অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বলে মনে করে, এভাবে ধাওয়া করা সম্ভব ।
তবে লোকগুলোকে পুলিস মনে করার কোন কারণ নেই, কারণ ব্রিটিশ পুলিস কোল্ট 45 ব্যবহার করে না। রানা দরজা খুলতেই সামনের লোকটা দাঁড়িয়ে পড়ল। অদ্ভুত ব্যাপার, ইতিমধ্যে প্যাসেজের আলো জ্বেলেছে তারা, ফলে দু’জনকেই পরিষ্কার দেখতে পেল রানা। অবশ্য, দরজার একপাশে দাঁড়িয়ে থাকলেও, ওকেও তারা পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছে। সামনের লোকটাকে থামতে দেখে, পিছনের লোকটাও দাঁড়িয়ে পড়ল। দু’জনেই শক্তিশালী । পেশীবহুল । সন্দেহ নেই, হিট টিমের সদস্য।
সামনের লোকটা গুলি করল। রানার ডান দিকে রয়েছে সে। বদ্ধ প্যাসেজে বোমা বিস্ফোরণের মত আওয়াজ হল। কবাটের বেশ বড় একটা অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল, চারদিকে ছড়িয়ে পড়ল কাঠের টুকরো। দ্বিতীয় গুলিটা ভেতরে ঢুকল, বেরিয়ে গেল রানার মাথার পাশ দিয়ে। এবার রানাও গুলি করেছে, তবে দুটো টার্গেটের একটার দিকেও সরাসরি নয়। গুলি করল নিচের দিকে, লাগলে যাতে শুধু হাঁটুর নিচে পায়ের কোথাও লাগে। এএসপির সাহায্যে মানুষ খুন করা কোন ব্যাপারই না, কিন্তু রাহাত খানের সুস্পষ্ট নির্দেশ ভোলেনি রানা—বিপদে জড়িয়ে পড়লে বিসিআই ওকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসবে না। খুনের অপরাধে ইংল্যাণ্ডে জেল খাটতে রাজি নয় রানা। পরপর দুটো গুলি করল ও, দুটোই দু’দিকের দেয়াল লক্ষ্য করে। গুলি ও গোঙানির শব্দ প্রায় একসাথে শুনতে পেল। পরমুহূর্তে একটা চিৎকার। কার কোথায় লেগেছে দেখার জন্যে অপেক্ষা করল না, পেঁচানো সিঁড়ি বেয়ে ঝড়ের বেগে নামতে শুরু করল নিচে। নিচে মমতাজকে কোথাও দেখা গেল না ।
প্রথম দরজার কাছে পৌঁছেছে, এই সময় যেন আরও একটা চিৎকার ভেসে এল ওপর থেকে। দরজাটা মমতাজ খুলে রেখে গেছে। সেটা টপকে ইয়েল ক্যাচ আটকাল রানা, প্যাসেজ ধরে ছুটল, কয়েক সেকেণ্ডের মধ্যে বেরিয়ে এল রাস্তায়। প্রথমে বাম দিকে বাঁক ঘুরল ও, তারপর আবার বাম দিকে, হাত দুটো পকেটে ঢোকায়নি। গাড়ির চাবি নিয়ে উদয় হল হোটেলের ডোরম্যান, বেন্টলির দরজা খুলল। মোটা বকশিশ দিল তাকে রানা, হোটেলের মুখ থেকে মমতাজকে বেরিয়ে আসতে দেখে হাসল মৃদু।
বার্কলি স্ট্রীটের দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে রয়েছে বেন্টলি। স্টার্ট দিয়ে বার্কলি স্কয়ারে চলে এল রানা। একবার বাম দিকে, তারপর ডান দিকে মোড় ঘুরে ঢুকে পড়ল এসডেনর স্কোয়্যারে। ওখান থেকে আপার এসভেনর স্ট্রীট, তারপর যানবাহনে ঠাসা পার্ক লেনে।
‘একটা চোখ খোলা রাখো, শাকিলা মমতাজকে পরামর্শ দিল রানা, ওর পাশেই চুপচাপ বসে আছে সে। ‘ধরে নিচ্ছি পিছনে লোক লাগলে তুমি টের পাবে। পার্ক হয়ে, এগজিবিশন রোড পেরিয়ে, বাম দিকে বাঁক নিয়ে পড়ব এমফোর-এ। নিয়ম-টিয়ম সবই তোমার জানা আছে, শুধু যদি ভুলে গিয়ে থাক…’
ভুলিনি, ঝাঁঝের সাথে বলল মমতাজ। ‘আমরা পালাচ্ছি, তাই না?”
‘হ্যাঁ, ট্রেনিঙে শেখা নিয়ম ধরে। আধ মিনিটের বেশি সোজা পথে থাকব না। পিছনটা দেখে না নিয়ে সামনে বাড়ব না। প্রতি মুহূর্তে ধোঁকা দেয়ার চেষ্টা করব।’
*এমনকি ওদের নজরে থাকা অবস্থায়ও,’ যোগ করল মমতাজ, স্পষ্ট উচ্চারণে।
‘রাইট।’ হাসল রানা, যদিও চেহারায় এখনও নিষ্ঠুর একটা ভাব লেগে রয়েছে। ‘তোমার লাগেজের ব্যাপারটা কি হবে, ভেবেছ কিছু, মমতাজ?’
জানতে চাইল ও।
‘বাড়িতে একটা সুটকেস গোছানো আছে। কিন্তু সেখানে যাওয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না।’
এয়ারপোর্ট থেকে টুথব্রাশ কিনে নিতে হবে। আয়ারল্যাণ্ডে না পৌঁছুনো পর্যন্ত বাকি সব ভুলে থাকতে হবে। তুমি কি নিজের নামে টিকেট বুক করেছ?’
‘হ্যাঁ।’
“টিকেটটা তাহলে বাতিল করতে হবে। আশা করি ওয়েটিং লিস্টটা খুব একটা লম্বা হবে না। সার্ভিস স্টেশন থেকে ফোন করব আমরা, কেমন?’ ‘রানা…’ অস্ফুটে ডাকল মমতাজ, যেন ভীতিকর কিছু একটা মনে পড়ে
গেছে!
‘বলো।’
‘ওরা আমাকে….
‘আপাতত বিপদ কেটে গেছে, মমতাজু। তবে ওই লোক দুটোও কর্নেল কুর্শির প্রতিনিধি, আশা করছিল তোমার খুলি ফাটা লাশ দেখতে পাবে। ওরা এসেছিল লাশের জিভ কাটার জন্যে। চেহারা, হাবভাব দেখে মনে হল, এ- ধরনের কাজ ওদের দ্বারা সম্ভব।’
‘তুমি কি…’
‘খুন করেছি কিনা? না—তবে অন্তত একজন আহত হয়েছে, দু’জনও হতে পারে। দেখার জন্যে থামিনি। এবার, শূন্যস্থান পূরণ করো। শাকিলা মমতাজ, ওরফে…?’
‘হাসিনা।’
“না! ভাল হয় ইসলামী নাম না হলে। তোমার গায়ের ও চোখের যা রঙ, অনায়াসে ইংলিশ ললনা বলে চালিয়ে দেয়া যায়। এমন একটা নাম ঠিক করো, যাতে তোমাকে ইংরেজ বলেও মনে হতে পারে, আবার আরব্য উপন্যাসের নায়িকা হিসেবেও চালানো যায়।’
‘লিলি লিলি সাবিনা।’
“বাহ! চমৎকার! খাসা নাম! এখনও কি নিঃসঙ্গ আমরা, লিলি?’
“পিছনে একটা জাওয়ার এক্স-এল ছিল, দেখে বিশেষ সুবিধের মনে হয়নি। তবে মোড় ঘুরে আরেকদিকে চলে গেছে। মনে হচ্ছে কেউ আমাদের পিছু নেয়নি। ‘
বেশ এবার শোন, মমতাজ। এয়ার লিংগাসের টিকেট ক্যানসেল করো তুমি, তারপর লিলি সাবিনার নামে আরেকটা টিকেট কাটো। এয়ারপোর্টে পৌছে এটাই তোমার প্রথম কাজ। বাকি সব আমি দেখব। ঠিক আছে?’
‘তুমি যা বল।’ সম্পূর্ণ শান্ত হয়ে গেছে মমতাজ, অন্তত তার চেহারা। গলার স্বরে ক্ষীণ একটু উত্তেজনার ভাব যদি বা থাকে, ধরা না পড়ার মত। যোগ-বিয়োগ করে বোঝার উপায় নেই আসলে ঠিক কতটা প্রফেশনাল সে।
এমফোর-এর প্রথম সার্ভিস স্টেশনে থামল ওরা, হিথ্রো এগজিট থেকে
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!