দ্বীপান্তরের বৃত্তান্ত – শফিউদ্দিন সরদার – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।
বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ শফিউদ্দিন সরদার
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ২৫৫
দ্বীপান্তরের বৃত্তান্ত – বইটির এক ঝলকঃ
: হ্যাঁ বলছি। সওয়াব কামাই হবে না ওতে; বরং গুনাহ হবে । : ভাইজান!
আল্লাহ তায়ালা কোন পীর দরবেশকে অলৌকিক ক্ষমতা দেননি । ওদের মধ্যে কোন ঐশ্বরিক মোজেজা নেই । ওদের বন্দনা করা মানেই গুনাহ করা । বলেন কি? এতদিন শুধু ভূতের বেগার খাটলাম! কোন সওয়াবই অর্জন হলো না তাতে?
না, হলো না। যদি সওয়াব অর্জন করতে চাও, তাহলে ঐ সব কেচ্ছা- কাহিনীর পেছনে না ছুটে নামায-রোযা করো, আল্লাহ রসুলের যিকির-আযকার করো, পরকালের অশেষ পুণ্য, মানে সওয়াব অর্জন করার সাথে ইহকালের অনেক শান্তি আর সজীবতা লাভ করবে।
: তাই? কিন্তু ঐ পীরের গীতগুলো তো বড়ই মন কাড়ে ভাইজান!
কাড়ুক । ওতে কোন সওয়াব নেই। তার চেয়ে ঐ যে ঐ মাঝিটা যে গান গাইছে, ওটা শোনো । ওটা শুনলে কিছু সওয়াব হবে, মনটাও প্রফুল্ল হবে । বলেই তিনি মন দিলেন সেই দিকে। তা দেখে হজরত আলীও সেই দিকে মন দিলো । ভাটির স্রোতে হাল ধরে থেকে মাঝিটা তখন তন্ময় হয়ে গাইছে- জীবন পারাবারের মাঝি আলোক-অন্ধকারে
প্রাণ রসদের খেয়াতরী, এপার ওপাড় দিচ্ছে পাড়ি,
দিনের শেষে অপর পাড়ে ভিড়ায় তরীটারে….।
কথাবার্তা বন্ধ করে আশপাশের সকলেই আগ্রহ ভরে মাঝির এই গানটা শুনছিল। কিন্তু সব পণ্ড করলো। টোকাই মার্কা এক উচ্ছৃঙ্খল যুবক। সে লাফ দিয়ে মাঝির কাছে এসে চিৎকার করে বলতে লাগলো- এ্যান্টেনাস এ্যান্ট, ট্যান্টেনাস ট্যান্ট ।
বাধা পড়লো মাঝির গানে । সে গান থামিয়ে প্রশ্ন করলো- মানে?
টোকাইটা হুকুমের সুরে বললো- মানে ইংলিশ। ইংলিশ বোলো, ইংলিশ! ইংলিশছে বাত করে ।
থমকে গিয়ে মাঝি বললো – ইংলিশ ?
টোকাইটা বললো- জরুর! ইংলিশ রাজত্বে বাস করবে আর ইংলিশ বলবে না!
গানটা থেমে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ হলেন কাসিদ আহসান উল্লাহ ! তখনই তিনি উঠে টোকাইটার কাছে গেলেন এবং তাকে প্রশ্ন করলেন- তুমি তাহলে ওটা কি বলছো? ইংলিশ?
টোকাইটা বুক ফুলিয়ে বললো- আলবাত্! এ্যান্টেনাস এ্যান্ট, ট্যান্টেনাস ট্যান্ট ।
বটে? ওটার মানে কি হলো?
মানে? মানে হলো- আমি একজন এক নম্বরের জেন্টল ম্যান। এ্যান্টেনাস এ্যান্ট।
এ্যান্ট! বলো কি? এ্যান্ট মানে তো পিঁপড়া ।
সে কথায় গুরুত্ব না দিয়ে টোকাইটা আরো বুক ফুলিয়ে বলে চললো- হোক হোক, ডাই পিঁপড়ে যা হয় হোক। এ্যান্টেনাস্ এ্যান্ট ট্যান্টেনাস ট্যান্ট । কাসিদ আহসান উল্লাহ বিরক্ত হয়ে বললেন- আরে থামো। কি এসব বলছো? : ইংলিশ ইংলিশ । ইংলিশ ছাড়া আমি কোনো কথাই বলি না আজকাল । হুঁউ । তোমার ইংলিশের ধরন দেখেই তা বুঝেছি । পেশাটা কি তোমার? কি করে খাও ?
কি করে খাই?
হ্যাঁ, হ্যাঁ । চুরি করে নাকি ?
চুরি? নো-নো । সার্ভিস, সার্ভিস করে খাই । বিরাট সম্মানী পেশা আমার । বটে! তা সার্ভিসটা তোমার কোন চুলোয় ? কি রকম সার্ভিস তোমার? হোম সার্ভিস, হোম সার্ভিস ।
হোম সার্ভিস? একদম? ফরেন সার্ভিস নয়?
আরে দূর দূর! ফড়িং সার্ভিস হবে কেন? একদম হোমে সার্ভিস আমার । হোমে? তাই বলো । তা কার হোমে?
আমার স্যারের হোমে ।
স্যারের হোমে? নাম কি তোমার স্যারের?
ডগ সাহেব, ডগ সাহেব। খাঁটি বিলাইতি লোক । এই এলাকার দণ্ডমুণ্ডের কর্তা ।
কি নাম বললে? ডগ সাহেব?
হ্যাঁ হ্যাঁ, ডগ সাহেব । কানে কি কম শুনেন?
কি আশ্চর্য! ডগ কোন মানুষের নাম হয়?
টোকাইটা কিঞ্চিৎ চিন্তা করে বললো- হয় না? তাহলে ডগ সাহেব নয়, হগ সাহেব । আমারই তাহলে ভুল হয়ে গেছে ।
কাসিদ সাহেব হেসে বললেন- যাব্বাবা! কুকুর থেকে শূকর ?
আরে হ্যাঁ হ্যাঁ, কুকুর না হলে শূকর । আস্ত শূকর ।
: সাব্বাশ! আস্ত শূকর ?
বিলকুল । বিলাইতি কারবার, বুঝলেন? কোনো ঘুরপ্যাচ নেই । হগ বললে হগ, ডগ বললে ডগ ।
মারহাবা মারহাবা! তা তোমার নামটা কি?
: আমার নাম? খাসা নাম। মিঃ ফ্যাটিগ চেন ।
: ফ্যাটিগ চেন! কি তাজ্জব! এ আবার কি নাম? ইংলিশ নাম। খাস্ ইংলিশ নাম ।
ইংলিশ নাম? বাংলা নামটা কি তাহলে?
: বাংলা নাম ?
হ্যাঁ। ফ্যাটিগ মানে তো ফ্যাক খাটা। শাস্তি ভোগ করা। চেন মানে শিকল । শিকলে বেঁধে তোমাকে ফ্যাক খাটানো হয় বলেই কি নামটা তোমার ফ্যাটিগ
চেন?
দূর দূর! তা হবে কেন? আমার সাহেব আমাকে ‘ফ্যাটিগ চেন’ বলে ডাকেন । আমার সাহেবের রাখা নাম। ওটা কি কোন ফালতু ঘটনা? এই জন্যেই তো নামটা আমার জবরদস্ত নাম ।
: তাজ্জব! তোমার জবরদস্ত নামটার তো মাথা মুণ্ডু কিছুই বুঝতে পারছিনে । পারবেন কি করে? ইংলিশ নাম বুঝতে হলে ইংলিশ জানতে হয়। আমার মতো ট্যান্টেনাস ট্যান্ট ।
কাসিদ আহসান উল্লাহ সাহেব ধমক দিয়ে বললেন, খামুশ! বেহুদা কাঁহাকার তোমার কি কোন বাংলা নাম নেই? ঐ ইংলিশ সাহেব ছাড়া তোমার বাপ-মা কি কোন নামই রাখেননি তোমার?
রাখবেন না কেন? ঐ নামটা তো আমার বাপ-মায়ের রাখা নামই । আমার সাহেব ওটাকে ইংলিশ করে নিয়েছেন ।
কি রকম?
সাহেব ফটিক বলতে পারেন না বলে ‘ফ্যাটিগ’ আর চান- মানে চান্দ; ঐ চান বলতে না পেরে বলেন ‘চেন’। নইলে তো আমার বাংলা নামটা হলো- ফটিক চান ।
আহসান উল্লাহ সাহেব হেসে উঠে বললেন- ও, ফটিক চান, মানে ফটকে? ফটকে? মানে?
মানে, আসল নামটা তোমার তাহলে ফটকে । ফটিক চান্দ বা ফটিক চান বলতে যায় আর ক’জন? তোমাকে নিশ্চয়ই সবাই ফটকে বলে ডাকে । বলো, ঠিক বলছি কিনা?
ফটিক চান ফটকে থতমত করে বললো- বলুক, বলুক তা, বললেই কি আমার দাম কম হয়ে যাবে?
দাম! তুমি খুবই দামী মানুষ নাকি ?
দামী নই মানে? আমার ডগ সাহেবকে বলে এখনই আমি আপনাকে ফাটকে তুলতে পারি, তা জানেন?
ফাটকে? ফটকে তুলবে আমায় ফাটকে? তবেই হয়েছে ।
হাসতে লাগলেন আহসান উল্লাহ সাহেব। ফটিক চান ফটকে ক্ষিপ্তকণ্ঠে বললো- হাসছেন কেন? বিশ্বাস হয় না? আমার ডগ সাহেবকে বললে এক নিমিষের মধ্যে আপনাকে উনি ফাটকে তুলে ফেলবেন । আমার ডগ সাহেব যে সে মানুষ নয় ।
তাই? তা ডগ আবার মানুষ হয় নাকি?
কি বললেন? মানুষ হয় না? মানুষ হয় না মানে? আমার হগ সাহেব, থুড়ি খুড়ি, ডগ সাহেব, মানে ডগলাস – ডগলাস, তার উপর মরদের বেটা মরদ । আচ্ছা! তোমার সাহেবের নাম তাহলে ডগলাস সাহেব?
ডগলাস ডগলাস! এই এলাকার বাঘ । এদেশের মানুষের মতো কোন ছাগল ভেড়া নয় ।
বলো কি? এদেশের মানুষ ছাগল বেড়া? বিলকুল বিলকুল । সবগুলো ভেড়া ।
আর তোমার ইংলিশ সাহেবরা ?
বাঘ বাঘ । প্রত্যেকেই আস্ত বাঘ । ভাগ্যে, ওরা এদেশে এসে দেশটা দখল করে নিয়েছিল। নইলে আজীবন আমাকে এদেশের এইসব ভেড়ার দলের চাকর হয়ে থাকতে হতো । বটে !
এখন দেখুন, কেমন বাঘের চাকরি করি আমি। আমার স্যার তো স্যার, আমাকে দেখেও এ দেশের সব ব্যাটা এখন থর থর করে কাঁপে ।
শরম করে না তোমার? স্বদেশী ভাই বেরাদরদের ভেড়া আর বিদেশী বেপারীদের বাঘ বলতে লজ্জা হয় না তোমার ?
তা হবে কেন? আমার ইংলিশ স্যারেরা হলেন গিয়ে দেবতুল্য লোক । দেবতার সুখ্যাতি করতে লজ্জা হবে কেন?
কে-ন, তা বোঝার মতো জ্ঞান কি তোমার আছে? তা থাকলে কি স্বদেশী স্বজনদের ভেড়া আর বিদেশী কুকুরদের দেবতা বলো তুমি?
দুই চোখ বিস্ফারিত করে ফটিক চান ফটকে বললো- আচ্ছা, এই সা বাত? ধরে ফেলেছি, আপনাকে ঠিক ধরে ফেলেছি এবার ।
ধরে ফেলেছো কি রকম ?
আপনি ঠিক আমার ইংলিশ হুজুরদের দুশমন। আপনি একজন এলেমদার মুসলমান। মোল্লা-মুসল্লী মানুষ। আমার স্যারদের আপনি দুশমন না হয়েই যান না।
: তাই নাকি?
ধরে ফেলেছি । আপনি আমাকে ধরতে না পারলেও আপনাকে আমি ঠিক ঠিক ধরে ফেলেছি।
: কি রকম? তোমাকে ধরতে না পারলেও মানে?
ফটিক চান ফটকে দম্ভের সাথে বললো- টিকটিকি টিকটিকি। সাহেবদের পক্ষের একজন তুখোর গোয়েন্দা আমি । আপনাদের মতো ইংলিশ-বিরোধী লোকদের খুঁজে খুঁজে বের করার জন্যেই আমায় ইংলিশ হুজুরেরা নিয়োগ করেছেন । আমাকে মোটা মাইনে দেন মাসে মাসে ।
: সাব্বাশ!
সাব্বাশ নয়, সাব্বাশ নয়। এবার আপনার নাম ধামটা বলে দিন। আমার ডগ সাহেবের, মানে ডগলাস সাহেবের কাছে এখনই পেশ করি গিয়ে।
: আমার নাম ধাম ?
হ্যাঁ, নামধাম মানে ঠিকানা । আমার ডগ সাহেবের কাছে আপনার সঠিক বৃত্তান্তটা পেশ করলে উনি জব্বোর খুশি হবেন ।
: আমার কি বৃত্তান্ত পেশ করবে তুমি?
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!