দেশপ্রেম – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

দেশপ্রেম – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ কাজী আনোয়ার হোসেন

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১৭৭

দেশপ্রেম – বইটির এক ঝলকঃ

ক্যাসেটে আমরা যা দেখেছি এখানেও ঠিক তাই দেখছি, তাই না? প্রথম ফোঁটা দুটো আসলে মার্কিনীদের ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল ভি-এক্স আর ভি-ওয়াই।’
‘তারমানে গ্রাউন্ড থেকে, ওই কন্ট্রোল প্যানেলের সাহায্যে, আমেরিকান মিসাইল দুটোকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে,’ বলল রানা। ‘কিন্তু, স্যার, এরকম যন্ত্রের কথা আগে তো কখনও শুনিনি। তাছাড়া আমেরিকানরা চীন বা রাশিয়ার মিসাইল কিভাবে নিয়ন্ত্ৰণ করছে?’
‘তুমি ধরেই নিচ্ছ যন্ত্রটা আমেরিকানদের,’ রাহাত খান বললেন। ‘তা কিন্তু সত্যি নয়।’
‘আমেরিকানদের নয়!’ রানাকে কেউ যেন ধাক্কা দিয়েছে। ‘না। ওটা আমাদের।’
‘আমাদের’ ঝট করে দাঁড়িয়ে পড়ল রানা, পায়ের ধাক্কায় চেয়ারটা উল্টে পড়ল কার্পেটে। ‘স্যার!’ আর কিছু বলতে না পেরে ফ্যালফ্যাল করে বসের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকল। কথাটা আর কারও মুখে শুনলে নির্ঘাত তাকে পাগল ভাবত ও। আবার সন্দেহ হলো, স্বপ্ন দেখছে? নাকি বস্ পাগল হয়ে গেছেন? ‘চেয়ারটা তুলে শান্ত হয়ে বসো। রাহাত খান গম্ভীর। ইতিমধ্যে সুইচ টিপে ভিসিআর বন্ধ করে দিয়েছেন।
চেয়ারটা তুলে আবার বসল রানা, বস্ কি বলেন শোনার জন্যে রুদ্ধশ্বাসে অপেক্ষা করছে।
‘নিউক্লিয়ার ফিজিসিস্ট প্রফেসর মইনুল হাসানের নাম শুনেছ?’
মাথা নাড়ল রানা। ‘জ্বী-না।’
কথা বলার ফাঁকে খোলা একটা ফোল্ডারে চোখ বুলাচ্ছেন রাহাত খান। ‘বছর তিনেক আগে প্রফেসর মইনুল হাসান যুক্তরাষ্ট্রের নাসায় একটা গবেষণার কাজ পান। ওই সময় দ্বৈত নাগরিকত্ব ছিল তাঁর। ভদ্রলোকের গবেষণার বিষয় ছিল লেইযার- গাইডেড মিসাইল। অপটিক্যাল মেইজার বা লেইযার ডিভাইস ব্যবহার করে সম্পূর্ণ নতুন ধরনের একটা লাইট বীম এবং ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ওয়েভ আবিষ্কার করেন তিনি। তাঁর আবিষ্কারের পুরো ফলাফল তিনি প্রকাশ করেননি, তবে যতটুকু প্রকাশ করেন তা থেকে নাসা তাদের মিসাইল গাইডেন্স সিস্টেম অনেক উন্নত করে তোলার সুযোগ পায়। তখনই বিজ্ঞানী মহলে দারুণ সাড়া পড়ে যায়। সবাই টের পেয়ে যায় প্রফেসর হাসানের আবিষ্কারের মধ্যে অসাধ্য সাধন করার উপাদান আছে ।
‘নাসার সঙ্গে ভদ্রলোকের চুক্তি ছিল এক বছরের। মেয়াদ শেষ হবার ঠিক আগে আমরা তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম । জানিয়েছিলাম, ইচ্ছে করলে তিনি দেশে ফিরে এসে পছন্দমত যে-কোনও সাবজেক্টে গবেষণা করতে পারেন, আমরা আমাদের সাধ্যমত সব রকম ‘আধুনিক ফ্যাসিলিটির ব্যবস্থা করে দেব। বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধে প্রসঙ্গে বলা হয়েছিল, তাঁর ইচ্ছেমতই সব কিছু নির্ধারণ করা হবে। একবিন্দু দ্বিধা না করে প্রস্তাবটা সানন্দে গ্রহণ করেন প্রফেসর হাসান, আজ থেকে আঠারো মাস আগে সপরিবারে চলে আসেন ঢাকায়। নিজের বেতন ধার্য করেছেন আমেরিকায় যা পেতেন তার হাজার ভাগের এক ভাগ মাত্র। তাঁর যুক্তি, এদেশে খরচ কম।
“আমাদের আণবিক শক্তি কমিশন ঢাকায় তাদের কমপাউন্ডে একটা বিশেষ গবেষণা সেল তৈরি করে, সেই সেলের প্রধান গবেষক করা হয় প্রফেসর হাসানকে। এখানে প্রায় এক বছর গবেষণা করার পর ওই যন্ত্রটা তৈরি করেন তিনি।’
“তারমানে ক্যাসেটে যে যন্ত্রটা দেখলাম সেটা ঢাকায়? ঢাকা থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হলো মিসাইলগুলোকে, তারপর ফেলে দেয়া হলো সাগরে?’ রানার দম বন্ধ হয়ে আসছে।
মাথা ঝাঁকালেন রাহাত খান। ‘হ্যাঁ।’
‘যদি বলি অসম্ভব, তাহলেও কম বলা হয়, স্যার! সত্যি যদি বাংলাদেশ এরকম কিছু আবিষ্কার করে থাকে, তাহলে তো আমরা সুপারপাওয়ার হয়ে গেছি! কয়েক হাজার মাইল দূরের মিসাইল ইচ্ছেমত নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হলে, যে-কোন প্লেন, যে-কোন যুদ্ধজাহাজ, রকেট ইত্যাদি সবই…’
একটা হাত তুলে রানাকে থামিয়ে দিলেন রাহাত খান। ‘সুপারপাওয়ার হতে আমাদের অনেক দেরি আছে, রানা। ক্যাসেটের সব ঘটনা তুমি খুঁটিয়ে দেখোনি। যন্ত্রটা শুধু নিউক্লিয়ার ওঅরহেডসহ চারটে ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল নিয়ন্ত্রণ করেছে, ইন্টারসেপটর মিসাইলগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করেনি। এ থেকে কি বোঝা যায়?”
কয়েক সেকেন্ড্ চিন্তা করল রানা। ‘ও, আচ্ছা! তারমানে যে মিসাইলে নিউক্লিয়ার ওঅরহেড থাকবে, যন্ত্রটা শুধু সেটাকেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। কিন্তু তাই বা কম কি, স্যার! দুনিয়াকে আমরা আণবিক যুদ্ধের হুমকি থেকে চিরকালের জন্যে মুক্তি দিতে পারব যদি…’
‘হ্যাঁ, যন্ত্রটা আবিষ্কারের পর প্রফেসর হাসান এবং বাংলাদেশ সরকার একমত হয়, দুনিয়ার বুকে চিরস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যে ব্যবহার করা হবে ওটা। সিদ্ধান্ত হয়, এই যন্ত্র অনেকগুলো বানানো হবে, এবং ছোটবড় সব দেশকেই একটা করে দেয়া হবে। তবে মূল যন্ত্র এবং পরবর্তী সংস্করণের মধ্যে কিছু পার্থক্য থাকবে। কোন দেশের কোথায় ক’টা আণবিক বোমা আছে, এটা শুধু মূল যন্ত্রে ধরা পড়বে ওগুলো অ্যাকটিভেট করা হোক বা স্থানান্তরিত করা হোক, তাও সঙ্গে সঙ্গে জানা যাবে। আর বিলি করা যন্ত্রে ধরা পড়বে শুধু সংশ্লিষ্ট দেশে আঘাত হানতে রওনা হওয়া ওঅরহেডসহ মিসাইল, হেলিকপ্টার, প্লেন বা রকেট। শুধু ধরা পড়বে না, ওই যন্ত্রের সাহায্যে দেশটি ওগুলোকে, এমন কি ওদের বাহনকেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। মূলযন্ত্র আমরা কাউকে দেব না, ওটা বাংলাদেশে থাকবে।’
‘সবাই একসময় উপলব্ধি করবে, আণবিক বোমা বানিয়ে আর কোন লাভ নেই,’ বলল রানা। ‘কারণ ব্যবহার করাই তো সম্ভব হবে না।’
সায় দিয়ে মাথা ঝাঁকালেন রাহাত খান, তারপর অন্য প্রসঙ্গে চলে গেলেন। ‘যন্ত্রটা বানাতে প্রচুর টাকা খরচ হয়েছে, রানা। এত বেশি যে, আমাদের ফরেন কারেন্সির রিজার্ভ প্রায় শেষ হয়ে গেছে। সরকার তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, নতুন যন্ত্র বানিয়ে বিভিন্ন দেশের কাছে কেনার জন্য প্রস্তাব দেবে। ধনী দেশগুলোর জন্য প্রতিটি যন্ত্রের দাম ধরা হবে পাঁচ হাজার কোটি ডলার। মাঝারি দেশ পাবে তিন হাজার কোটি ডলারে, আর গরীর দেশ পাবে মাত্র একশো কোটি ডলারে। আলোচনার মাধ্যমে ঠিক হয়, লাভের শতকরা পাঁচ ভাগ পাবেন প্রফেসর মইনুল হাসান, বাকিটা জমা হবে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে। এরপরই আমরা যন্ত্রটার আন্তর্জাতিক পেটেন্ট পাওয়ার জন্যে আবেদন করি। তখনই ব্যাপারটা জানাজানি হয়ে যায়। তবে এক আমেরিকা ছাড়া প্রথমে আর কেউ বিশ্বাসই করেনি যে এরকম একটা যন্ত্র আমরা আবিষ্কার করতে পারি।’
‘আমেরিকা বিশ্বাস করল, কারণ ওরা নিউক্লিয়ার ফিজিসিস্ট প্রফেসর হাসান সম্পর্কে জানে,’ বলল রানা। ‘নাসায় তিনি ওদের হয়ে গবেষণা করেছিলেন।
‘সেটাই আসল কারণ,’ বললেন রাহাত খান। ‘অ্যাটম বোমা সহ ভি-এক্স ও ভি-ওয়াই সাগরে ডুবে যাওয়ায়, এবং অলৌকিক ভাবে দু-দুটো পারমাণবিক বোমার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেয়ে যাওয়ায় ওরা প্রায় নিঃসন্দেহে ধরে নেয় কাজটা আর কারও নয়- প্রফেসর হাসানের। ওদের ‘ওই দুই মিসাইলের উৎক্ষেপণ ও যাত্রাপথ ক্যামেরায় বন্দী করা ছিল, তারই একটা ক্যাসেট আমাদেরকে পাঠায় ওরা, সেই সঙ্গে অভিযোগ তুলে বলে-যা কিছু ঘটেছে তার জন্যে বাংলাদেশই দায়ী।’
‘তারপর?’ ‘আরও একশোটা দেশ সহ ওদেরকেও আমরা যন্ত্রের পরবর্তী সংস্করণ কেনার প্রস্তাব দিলাম। যন্ত্রটা সত্যি কাজ করে, এটা “দেখানোর জন্যে ডিসপ্লের ব্যবস্থা করা হয়। প্রতিটি দেশ সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যায়। প্রত্যেকের কাছে পঞ্চাশ কোটি ডলার অগ্রিম চাই আমরা। সব মিলিয়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকা হাতে এলে নতুন যন্ত্রগুলো তৈরির কাজে হাত দিতে পারতেন প্রফেসর হাসান।’
‘দেশগুলো কি অগ্রিম দিতে রাজি হয়নি?’ রানার, গলায়
উদ্বেগ ।
‘না-না, টাকা দিতে সবাই রাজি,’ বললেন রাহাত খান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই টাকা আমরা নিতে পারিনি।’
“নিতে পারিনি! কেন?”
‘কারণ, মাস তিনেক আগে, কে বা কারা যেন মূল যন্ত্রটা ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়ে গেছে। ‘
‘সর্বনাশ!’ বিষম খাবার অবস্থা হলো রানার। ‘কে করল এই স্যাবটাজ?’
রাহাত খান বিষণ্ণ, মাথা নাড়লেন। ‘তা জানা যায়নি।’
*এখন তাহলে উপায়, স্যার?’ বেসুরো গলায় জানতে চাইল রানা ।,
একটা দীর্ঘশ্বাস চাপলেন বিসিআই চীফ। ‘সমস্যা কি জানো, যন্ত্রটা কিভাবে কাজ করে তা কাউকে জানাবেন না বলে প্রফেসর হাসান তাঁর থিওরি ও ফর্মুলা কোথাও লিখে রাখেননি।’
“তারমানে কি যন্ত্রটা নতুন করে বানানো সম্ভব নয়?’ ‘সম্ভব, কিন্তু তাতে সময় লেগে যাবে অনেক বেশি। ‘কত বেশি, স্যার?’ হাঁফ ছেড়ে জানতে চাইল রানা ।
‘আরও ধরো বছরখানেক। কিন্তু সময়টা এখন সমস্যা নয়। সমস্যা অন্যখানে।’ চেয়ার ছেড়ে দাঁড়ালেন রাহাত খান, হাত দুটো পিছনে বেঁধে বন্ধ জানালার কাঁচের সামনে গিয়ে দূরে তাকালেন। “নিউক্লিয়ার ফিজিসিস্টদের একটা আন্তর্জাতিক

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top