দামেস্কের কারাগারে – এনায়েতুল্লাহ আলতামাশ – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

দামেস্কের কারাগারে – এনায়েতুল্লাহ আলতামাশ – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ এনায়েতুল্লাহ আলতামাশ

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ২৫৭

দামেস্কের কারাগারে – বইটির এক ঝলকঃ

চাপা দেয়া হয়েছে, গর্ত শেষ হয়ে গেছে কিন্তু লাশ শেষ হয়নি। বাকি শবদেহ সমুদ্রে নিক্ষেপ করা হচ্ছে। ছয়শত অশ্ব হস্তগত হয়েছে। মৃত দুশমনের হাতিয়ারের স্তূপ জমেছে।
এখন অতিরিক্ত ফৌজের সাহায্য প্রয়োজন। খবর পেয়েছি, স্পেন ফৌজ অনেক বেশী এবং সম্মুখে কেল্লাবন্দি শহর। আমি অতিরিক্ত ফৌজের জন্যে ইন্তেজার করে সম্মুখে অগ্রসর হব। আমাদের কামিয়াবীর জন্যে দোয়া করবেন। আমরা যদি পরাজিত হই তাহলে আর ফিরে আসব না, কারণ ফিরে আসার কোন রাস্তাই নেই। আমরা যে চারটি জাহাজে এসেছিলাম তা অগ্নিসংযোগ করে ভস্মিভূত করা হয়েছে।” মুসা ইবনে নুসাইর হর্ষৎফুল্ল হয়ে বলে উঠলেন, সাবাশ! তোমাকে কোন শক্তি পরাজিত করতে পারবে না।
মুসা ইবনে নুসাইর তারেক ইবনে যিয়াদের বিজয় খবর ও তার জন্যে সাহায্যের আবেদন করে তখনই খলীফা ওয়ালীদ ইবনে মালেকের নামে একটা পয়গাম লিখিয়ে পাঠিয়ে দিলেন।
পামপিলুনাতে রডারিক হুকুম জারি করলেন, এখান থেকে টলেডো পর্যন্ত যেন এ ঘোষণা দিয়ে দেয়া হয় যে, স্পেনে বহিরাগত কওম অনুপ্রবেশ করেছে যারা এত শক্তিশালী ও রক্তপিপাসু যে, তাদের চেয়ে দ্বিগুণ ফৌজকে তারা খতম করে দিয়েছে। রডারিক তার ফরমানে একথাও বলে ছিল যে আক্রমণকারীদের ব্যাপারে যেন মানুষকে ভয় দেখান হয় এবং বলা হয়, তারা দস্যুদল, তারা তোমাদের ধন- সম্পদ ও আওরতদেরকে ছিনিয়ে নিয়ে যাবে আর তোমাদের মুলকে লাগাবে আগুন, তোমাদেরকে করবে হত্যা।
সরকারী কর্মচারীরা তাৎক্ষণিক ঘোড়া ছুটিয়ে চলল। তারা প্রত্যেক গ্রাম- মহল্লার কর্মচারীর কাছে এ পয়গাম পৌঁছিয়ে টলেডোতে গিয়ে পৌঁছল তারপর প্রত্যেক বস্তি ও গির্জাতে এলান হতে লাগল,
“সমুদ্রের দিক থেকে এক অজ্ঞাত মুকের এক বড় দস্যুদল ও লুটেরা আমাদের মুলকে প্রবেশ করেছে। তারা আমাদের অনেক বড় ফৌজী দলকে হালাক করে দিয়ে তুফানের মত সম্মুখে অগ্রসর হচ্ছে। তারা বাড়ীতে হানা দিয়ে নগদ টাকা-পয়সা, ধন-সম্পদ কবজা করছে আর জওয়ান আওরতদেরকে নিজেদের সাথে নিয়ে যাচ্ছে তারপর হত্যা যজ্ঞ চালিয়ে ঘরে অগ্নি সংযোগ করছে। তাদের এ ধ্বংসলীলা হতে ইবাদতগাহও রক্ষা পাচ্ছে না। নিষ্পাপ মাসুম বাচ্চাদেরকে বর্শার আঘাতে হত্যা করছে আর অট্টহাসিতে ফেটে পড়ছে।
শাহান শাহেউন্দুলুস, তার ফৌজ নিয়ে ঐ ভয়ানক লস্করের মুকাবালায় বেরুচ্ছেন, বাদশাহ্ রডারিক নির্দেশ দিয়েছেন, যে সকল লোক তীর আন্দাজী, তলোয়ার পরিচালনা করতে পারে তারা যেন ফৌজে শামিল হয়। যারা ফৌজে শামিল হবে তারা ভাতা পাবে অধিকন্তু দস্যু দল থেকে যা করতলগত হবে তারও একটা অংশ থাকবে। তবে সবচেয়ে বড় ফায়দা হবে তোমাদের জান-মাল, তোমাদের ঘর-বাড়ীও লাড়কীরা নিরাপত্তা পাবে…….
লোক সকল প্রস্তুত হয়ে যাও। হাতিয়ার ও ঘোড়ায় সোয়ার হয়ে নিজের ইজ্জত ও ধন-সম্পদ লুট থেকে বাঁচাও আর তা যদি না কর তাহলে আজই বাল-বাচ্চা নিয়ে জঙ্গলে চলে যাও এবং কমজোর বুজদিল হয়ে জানোয়ারের মত দিন গুজরান কর। তারপর যখন ফিরে আসবে তখন নিজেদের ঘর-বাড়ীর আর কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাবে না।
জওয়ান ও অর্ধ বয়সী লোকেরা অত্যন্ত স্পৃহা ও উদ্দীপনার সাথে গায়ের মুলকী লস্করকের মুকাবালার জন্যে তৈরী হতে লাগল। তাদেরকে বলা হলো বাদশাহ্ রডারিক অমুক রাস্তা দিয়ে টলেডো যাবেন; ফৌজে শামিল হতে ইচ্ছুক সে যেন রাস্তায় অপেক্ষমান থাকে ।
কিছু ইবাদত খানায় এ এলান হচ্ছিল না, সেগুলো ছিল ইহুদীদের ইবাদত খানা। তাদের সংখ্যা বেশী ছিল না। ইতিপূর্বে বলা হয়েছে স্পেনে ইহুদীরা ছিল অত্যন্ত মাজলুম। কারীগরি, প্রকৌশলী, ব্যবসা-বাণিজ্য ছিল ইহুদীদের হাতে কিন্তু তাদের পয়সা ছিল না। তাদের থেকে এত পরিমাণ কর আদায় করা হত যার ফলে তাদের কাছে দু’মুটো খাবারের পয়সা ছাড়া আর কিছু অবশিষ্ট থাকত না। তাদের নিম্ন শ্রেণীকে অস্পর্শ মনে করা হত ।
স্পেনের শাহী মসনদ যখন ডেজার হাতে আসল তখন সে খ্রীষ্টানদের মত ইহুদীদেরকে পদ মর্যাদা দিয়ে টেক্স কমিয়ে দিল। ইহুদীদের খুব সুরত লাড়কীদেরকে জোরপূর্বক গির্জার অধীনে অর্পন করা হত, ডেজা এ নিপীড়নের পথও বন্ধ করে দিল। কেবল ইহুদীদেরই নয় বরং সর্বসাধারণের জীবন মানও সে উন্নত করল আর এটাই তার পতনের কারণ হয়ে দাঁড়াল। রডারিক তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করিয়ে নিজে শাহী মসনদে বসল। স্পেনের শাহী মুকুট নিজের মাথায় পরেই সে ডেজাকে হত্যা করল ।
বহিরাগত শত্রুর মুকাবালায় লোক ফৌজে শামিল হবার ব্যাপারে যখন গির্জায়, শহরের চৌকিতে, গ্রামে-গ্রামে, পল্লীতে পল্লীতে এলান হচ্ছিল তখন ইহুদীদের ইবাদত খানায় অন্যদিক নিয়ে গোপন আলোচনা চলছিল।
ইহুদীদেরকে ফৌজে শামিল হওয়া থেকে কিভাবে বাধা দেয়া যায় এ ব্যাপারে আলোচনা করার জন্যে একদিন পাঁচ-ছয়জন ইহুদী সর্দার এক ইবাদত খানাতে একত্রিত হলো । তারা কোন অবস্থাতেই রডারিককে সাহায্য করতে প্রস্তুত ছিল না । ইহুদীদের এক ধর্মগুরু বলল, রডারিকের ফৌজে শামিল হবার বিষয়টাই কেবল নয় বরং তাকে কিভাবে ক্ষতি করা যায় সে ব্যাপারেও আমাদের চিন্তে-ভাবনা করতে হবে।
অন্য আরেকজন ধর্মগুরু বলল, আগে থেকেই ফৌজে কিছু ইহুদী শামিল রয়েছে, তাদেরকে কিভাবে বের করে আনা যায় সে ব্যাপারে ভাবার দরকার।
অন্য আরেকজন বলল, আমি অন্যদিক চিন্তে করছি। যারা ফৌজে রয়েছে তাদেরকে ফৌজে রেখে রডারিকের ফৌজের বিরুদ্ধে তাদেরকে লাগানো যেতে পারে।
একজন প্রশ্ন করল, তাদের বিরুদ্ধাচরণের কথা যদি কেউ জেনে যায়?
জবাবে অপর জন, কেউ জানতে পারবে না।
অন্যজন বলল, যদি এটা জানাজানি হয়ে যায় তাহলে আমি এর চেয়ে আরো বড় ষড়যন্ত্রের জাল বিছাতে পারব।
সৃষ্টিগতভাবেই ইহুদীরা ষড়যন্ত্রকারী। মাটির নিচ থেকে গোড়া কাটার ব্যাপারে তারা যেমন পারদর্শী অন্যকোন কওম এমনটি নয়। তাদের ধর্মগুরু এ ব্যাপারে ফায়সালা করল যে, প্রতিটি ইহুদীর ঘরে এ খবর পৌঁছে দিতে হবে যেন কেউ রডারিকের ফৌজে শামিল না হয়।
অর্ধবয়সী এক আওরত। নাম তার মেরীনা। যৌবন চলে গিয়েছিল কিন্তু লম্বা দেহলতা ও ছন্দময়ী চেহারাতে প্রেমের আবেদন ও আকর্ষণ পূর্ণ মাত্রায় বিদ্যমান ছিল। তার প্রতি যারা লক্ষ্য করত তাদেরকে তার যাদুময়ী আঁখি যুগল পাগল করে ফেলত। সে কোন সাধারণ ও মামুলী আওরত ছিল না। তাকে শাহী মহলের বেগমদের মাঝে গণ্য করা হত। সে রডারিকের রক্ষিতা ছিল এবং একমাত্র সেই কেবল যৌবন চলে যাবার পরও শাহী মহলে বহাল তীয়তে বিদ্যমান ছিল। মহলের কোন রমণী ত্রিশ বছরে উপনীত হলেই তাকে গায়েব করে দেয়া হত বা ইনয়াম হিসেবে ফৌজের কোন আলা-অফিসারকে দিয়ে দেয়া হত।
মেরীনা ইহুদী ছিল। ইহুদীদের স্বভাব মুতাবেক সেও ষড়যন্ত্রকারীনি ছিল। একেতো সে ছিল রমণী দ্বিতীয়ত: ছিল অত্যন্ত সুদন্দরী ও মায়াবী। অধিকন্তু চক্রান্তকারী সুচতুর ইহুদীর মেধা। এ সকল সিফত ও বৈশিষ্ট্য বলে সে মহলে বিশেষ স্থান দখল করেছিল। সেজে ছিল শাহী হেরেমের রাণী। তার কৃষ্ণকালো আখি যুগল ও বচন ভংগিতে ছিল যাদু পরশ ও সম্মোহনী প্রবল আকর্ষণ। যার হাত থেকে রডারিকও পারেনি বাঁচতে।
সে সময় স্পেনের রাজধানী টলেডোর শাহী মহল হতে এক দেড় মাইল দূরে সবুজ শ্যামলে ঘেরা একটা ঝিল ছিল, সে ঝিলের এক পাশে ছিল গাছ-পালা লতা- ‘গুল্মে ঢাকা একটা উঁচু টিলা। সে ঝিলের কাছে কোন পুরুষের যাবার অনুমতি ছিল না কারণ তা শাহী মহলের আওরতদের জন্যে খাছ করে দেয়া হয়েছিল। পড়ন্ত বিকেলে সেথায় আওরতরা সন্তরন, নৃত্য, গান-বাজনা ও আমোদ-প্রমোদের জন্যে যেত।
বিকাল বেলা। সূর্য বিদায়ের জন্যে পশ্চিম দিগন্তে উঁকি-ঝুঁকি মারছে। ঝিল পাড়ে পঁচিশ-ত্রিশজন রমণী গল্প-গুজব, খেলা-ধুলা, হাসি-তামাশায় মেতেউঠেছে। তাদের মাঝে কিশোরী ও পূর্ণযৌবনা ললনারাও রয়েছে। প্রতিদিনই তারা এ ঝিল পাড়ে এ ধরনের কর্মে লিপ্ত হত। তাদেরকে নেগরানী করত মেরিনা। সে বিকেলেও মেরীনা তাদের নেগরানী করছিল।
ঝিল অদূরে গাছের আড়ালে ললনাদের অশ্ব গাড়ী দাঁড়িয়ে ছিল যার কোচওয়ান ছিল পুরুষ। কোচওয়ানদের একজন দেখতে পেল এক ব্যক্তি ঐ সীমানার ভিতরে এসে গেছে যার কাছে কাউকে আসার অনুমতি দেয়া হয় না। কোচওয়ানরা তাকে ফিরে যাবার জন্যে ইশারা করল কিন্তু সে তার প্রতি লক্ষ্য না করে সম্মুখে অগ্রসর হয়েই চলল, কোচওয়ানরা তাকে বাধা দেয়ার জন্যে উঠে দাঁড়ালে সে রাস্তা পরিবর্তন করে অগ্রসর হতে লাগল, তাকে বাধা দিতে দিতে সে ঝিল পাড়ে গিয়ে উপনীত হলো। কোচওয়ানরা তাকে পাকড়াও করল, সে কেবল চোখ দু’টো খোলা রেখে মাথা ও মুখমণ্ডল পুরো চাদরে ঢেকে রেখেছিল। সে পা পর্যন্ত লম্বাচোগা পরিহিত ছিল। কোচওয়ানরা তাকে পাকড়াও করলে সে চিৎকার শুরু করল। ঝিল পাড়ে আমোদ-প্রমোদে লিপ্ত আওরতরা সে আওয়াজ শুনে মনে করল কোন জানোয়ারের আওয়াজ। তারা তার প্রতি তেমন লক্ষ্য করল না। কেবল মেরীনা তার প্রতি গভীরভাবে লক্ষ্য করল কারণ ইতি পূর্বে কিছু মানুষের আওয়াজ শুনতে পেয়েছিল। সে যেহেতু নেগরান ছিল তাই কাপড় পরিধান করে যেদিক থেকে আওয়াজ এসেছিল সেদিকে রওনা হল। মেরীনা সামনে অগ্রসর হয়ে দেখল, কোচওয়ানরা পাগলের ন্যায় এক ব্যক্তিকে ধরে টানা-হেঁছড়া করছে আর সে আশ্চর্যজনকভাবে চিৎকার করছে। কেবল কোন পাগলের পক্ষেই সম্ভব ছিল সে নিষিদ্ধ এলাকায় প্রবেশ করা। সে মেরীনাকে দেখেই অট্টহাসিতে ফেটে পড়ল ।
সে উচ্চস্বরে চিৎকার করে বলে উঠল, ঐ যে রানী এসে গেছে। এ কথা বলেই মেরীনার দিকে দৌড় দিল। কোচওয়ানরা তাকে ধরার চেষ্টা করল কিন্তু দ্রুত দৌড়াচ্ছিল তাই তারা ধরতে পারল না ফলে সে মেরীনার কাছে গিয়ে পৌঁছুল। মেরীনার পদতলে লুটিয়ে পড়ল। মেরীনা কিছুটা পিছে সরে গেল ।
সে মাথা তুলে বলল, মেরীনা! আমি আওপাস, তোমার মিলনে এসেছি। কোচওয়ান এসে তাকে পাকড়াও করে নিয়ে যেতে চাইল ।
মেরীনা : ছেড়ে দাও। বেচারা পাগল, কারো কোন ক্ষতি করবে না। তেমারা চলে যাও। আওপাস দুঃখ ভরা স্বরে বলল, আমি পাগল নই মেরীন! পাগল নই! আমি ফরীয়াদি, আমি মাজলুম ।
সে ডেজার ভাই আওপাস ছিল, যে ডেজার বিরুদ্ধে রডারিক বিদ্রোহ করিয়ে তাকে হত্যা করে নিজে শাহী মসনদ দখল করেছে। সে সময় আওপাসের বয়স ছিল সতের-আঠার বছর। আওপাস ছিল গোথা বংশীয়। ডেজা ছিল সর্বশেষ গোথা বাদশাহ্। মেরীনা এক ইহুদী ব্যবসায়ীর বেটী। ডেজার হুকুমতের সময় তার ওমর ছিল ষোল-সতের বছর। আওপাস মেরীনাকে প্রথম দেখাতে ভালবেসে ফেলেছিল কিন্তু মেরীনা তার সে ভালবাসাকে গ্রহণ করতে ভয় পাচ্ছি।
মেরীনা আওপাসকে বলেছিল, এই মরিচিকাকে কেন ভালবাসা বলছ? আমি ইহুদী বেটী হবার পরও এখনও কেন যে শাহী খান্দানের থাবা থেকে বেঁচে আছি তা জানি না। তুমি তোমার গোলামদেরকে হুকুম দাও তারা আমাকে জোর পূর্বক তোমাদের বিলাস বহুল স্বপ্নীল মহলে পৌঁছে দেবে। তুমিতো শাহ্জাদা। বাদশাহর
ভাই ।
আওপাস : তুমি কি জান না কেন তুমি শাহী খান্দানের হাত থেকে বেঁছে আছ? তোমার কি জানা নেই যে, আমার ভাই মসনদে বসার পর ফরমান জারী করেছেন, কোন ইহুদী লাড়কীকে জোর পূর্বক কোন গির্জায় বা শাহী খান্দানের কারো কাছে সোপর্দ করা গুরুতর অপরাধ। এর বিরুদ্ধাচরণকারীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হবে।
আমি বাদশাহর ভাই আর তুমি প্রজা এ কারণে তোমাকে আমি শাহী মহলে নিয়ে যাব না। যেদিন আমি তোমাকে পরিনয় সূত্রে আবদ্ধ করব সেদিন তোমাকে মহলে নিয়ে যাব।…… মেরীনা! আমি তোমাকে পেয়ার করি। মহল থেকে দূরে কোথাও তোমার সাথে আমি সাক্ষাৎ করব।
মেরীনার অন্তরেও আওপাসের মহব্বত জায়গা করে নিয়ে ছিল। তারপর থেকে তারা মহলের বাহিরে কোথাও একত্রে মধুর মিলনে লিপ্ত হতে থাকে। একদিন তাদের মুলাকাতের খবর আওপাসের ভাই ডেজার কাছে পৌঁছে।
ডেজা : তুমি যে শাহী খান্দানের সন্তান এ অনুভূতি কি হারিয়ে ফেলেছ? ঐ লাড়কী কে? যার সাথে তুমি মেলা-মেশা কর ।
আওপাস : ইহুদী, আমাদের পরস্পরের সম্পর্ক শারীরিক নয় আর আমি তার সাথে বাদশাহর ভাই হিসেবে সাক্ষাৎ করি না।
ডেজা : তুমি কেবল সেই লাড়কীর সাথেই মিলতে পারবে যার সাথে তোমার শাদী দেব। আর সে লাড়কী কে তুমি তো জানই ।
আওপাস : আপনি যার সাথে আমার শাদী দেবেন তার সাথে আমি মিলব না । আমি তো ঐ ইহুদী লাড়কীকেই শাদী করব।

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top