কোকেন সম্রাট – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।
বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ কাজী আনোয়ার হোসেন
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৩৮২
কোকেন সম্রাট – বইটির এক ঝলকঃ
‘মেডিলিনে তেমন কেউ আছে আপনার ?’
“শহরের কাউকে আমি চিনি না।’
‘তাহলে বলতে হয়, ব্যাপারটা অদ্ভুত, সিনর । ভারি অদ্ভুত।’
রানা জানে এরপর লোকটা কি প্রশ্ন আশা করছে। ‘কেন ?’ ‘কারণ, আমি ভয় করছি, কেউ আপনাকে চেনে ।
ভাবতে পছন্দ করে রানা, ও কখনো বিস্মিত হয় না। মাঝে মধ্যে বিভ্রান্ত হয় বটে, যতোক্ষণ না প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ পায়। বৰ্তমান অ্যাসাইনমেন্টে ওকে কেউ সাহায্য করছে না, এমন কোনো সূত্র নেই যা অনুসরণ করা যেতে পারে, আর দুনিয়ার মাত্র তিনজন মানুষ জানে কোথায় যাচ্ছে ও। বিস্তারিত জানে মাত্র একজন। ‘কি ধরনের গাড়ি?’ জানতে চাইলো ও।
‘জাপানী,’ জবাব দিলো ড্রাইভার ।
‘ক’টা মাথা ?’
‘দুটো দেখতে পাচ্ছি,’ বললো সে, একটা আঙুলের পুরোটা খাড়া করলো, ভাঁজ করা অর্ধেক দ্বিতীয়টার।
শিকারী শিকারে পরিণত হলে উত্তেজনা বাড়েই। যে শিকারকে খুঁজে বের করার নির্দেশ ও অনুরোধ পেয়েছে রানা, তাঁর দ্বারা ক্ষতি- গ্রস্ত দু’একজনের স্মৃতি বাদে, গত চল্লিশ বছরে তাঁকে কোথাও দেখা যায়নি। সম্ভব হলে জীবিত আটক করতে হবে তাঁকে। এক সময় তিনি ইন্টেলিজেন্স অফিসার ছিলেন, তাঁর যুগের সেরা প্রতিভাদের একজন, অর্থাৎ যেমন নিষ্ঠুর তেমনি দক্ষ । তাঁর সন্ধান পাওয়া খুব সহজ হবে বলে আশা করে না রানা।
চওড়া অটোপিসটা-য় ষাট ডিগ্রী বাঁক ঘুরছে ট্যাক্সি, পিছনের গাড়ি- টার দিকে তাকাবার জন্যে এই মুহূর্তটাই বেছে নিলো রানা। একটা হোণ্ডা প্রিলিউড। দক্ষ হাতে পড়েছে গাড়িটা, রাস্তার এক পাশ ঘেঁষে সাবলীল গতিতে আসছে। দুটোই মাথা। তবে সহজে চোখে পড়ে না ৷ দুটোর কোনোটাই গাড়ির হেডরেস্টের চূড়ো ছুঁতে পারেনি। ব্যাপারটা মোটেও স্বস্তিকর নয়। শরীর-স্বাস্থ্য ও বুদ্ধির অভাব সাধারণত স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে পূরণ করা হয়। রান। যার খোঁজে এসেছে, আজকাল তিনি নিজের পরিচয় দেন রলফ মুয়েলার বলে। নিজেকে ডাচ বলে দাবি করেন, কলম্বিয়ায় স্থায়ী আসন গেড়েছেন, সফল একজন ব্যব- সায়ী। হোতার আরোহীরা যদি তাঁর লোক হয়, অবশ্যই পেশাদার হবে ওরা, মোটা টাকার বিনিময়ে কাজ করছে।
‘আমরা কি করবো, সিনর ?’ জানতে চাইলো ড্রাইভার। ‘আপনি আমাকে নির্দেশ দেবেন না ?’
‘কিছুই করো না, বললো রানা। ‘হোটেল শেরাটনের দিকে যেতে থাকো।’
আবার রিয়ারভিউ মিররে চোখ রাখলো ড্রাইভার। নতুন করে আরোহীর মাপজোক নিলো সে। প্রথমবারও সে তার আরোহীকে ট্যুরিস্ট বা হাবাগোবা বলে ধরে নেয়নি, তবে এবার তার শান্ত নির্লিপ্ত চেহারা দেখে আন্দাজ করলো, মাছটা গভীর জলেই হবে। চরিত্র ও প্রকৃতি বোঝার চেষ্টা বাদ দিয়ে দু’বার চোখ মিটমিট করলো সে। তারপর মুখ খুললো, ‘সিনর আপনার মতো ঠাণ্ডা মানুষকে অপমান করার স্পর্ধা আমার নেই। তবে, আপনাকে জানানো কর্তব্য বলে মনে করছি যে চলতি বছর আমাদের মেডিলিন শহরে পনেরো শোর বেশি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। এই তথ্য আমি আমার দুলাভাইয়ের কাছ থেকে পেয়েছি, পুলিশ বিভাগে আছেন তিনি। জোর দিয়ে বলতে পারি; হিসেবটায় কোনো ভুল নেই।’ “পারিবারিক অঘটনের কথা বলছো তুমি ?” ‘হু’একটা, সিনর। বাকি সব ককেরসদের কাজ। ‘ককেরস ?’
‘আপনার ডিকশনারিয়োতে শব্দটা পাবেন না, সিনর। শব্দটার একাধিক অর্থের একটা হলো, যারা কোকেন ব্যবহার করে। তবে আজকাল সবকিছুর মতো শব্দটার মানেও বদলে গেছে। ককেরস বলতে মানুষ এখন বোঝায়, সম্ভবত, একজন কাউবয়। কোকেন কাউ- ৰয়।’
‘তুমি কি বলতে চাইছো যে বন্দুকে এরা খুব ওস্তাদ ?’
‘সিনর, আমি আপনাকে বলছি, ককেরসরা খুন করার ব্যাপারে বাছবিচার করে না। আমাদের দেশে আপনি একজন মেহমান, অবশ্যই শ্রদ্ধেয়, কিন্তু ওরা বিচারকদেরও খুন করেছে, এমন কি সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতি বা সরকারের উচ্চপদস্থ অফিসারকেও বাদ দেয়নি। চলতি বছর শুধু পুলিশই খুন হয়েছে কয়েক শো। এ-সব তথ্যও আমি আমার দুলাভাইয়ের কাছ থেকে পেয়েছি।’
লোকটার দেয়া পরিসংখ্যান অবিশ্বাস করলো না রানা। ছনিয়া- দারির খবর রাখা যাদের অভ্যেস, কলম্বিয়ার অবস্থা সম্পর্কে তাদেরকে নতুন করে কিছু বলার দরকার নেই। দেশটার পরিস্থিতি সম্পর্কে ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন-এর তথ্য ভাণ্ডারও পরিষ্কার একটা ছবি পেতে সাহায্য করেছে ওকে। ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সির বিশে- ষজ্ঞরাও ওকে ব্রিফিং করেছে। দুটোই মার্কিন সংগঠন। মেডিলিন হলো কলম্বিয়ান ড্রাগ কার্টেল এর হেডকোয়ার্টার, কোকেন সম্রাটদের স্বর্গরাজ্য। বিশের দশকে শিকাগোয় যে ভয়ংকর পরিস্থিতি ছিলো, আজকের কলম্বিয়ার অবস্থা ঠিক সেরকম, পার্থক্য এইটুকু যে ধরার জন্যে আরো কয়েক লক্ষ গুণ বেশি টাকা উড়ছে এখানে, অস্ত্রগুলোও সেই হারে মারাত্মক ।
‘তোমার নাম কি বললে না যে?
‘পিটার পিনেল, সিনর ‘
ড্যাশবোর্ডের একটা মূর্তির ব্যাখ্যা পাওয়া গেল-নামের খাতিরে যিশুর উপস্থিতি। রানা অনুভব করলো, চে-র উপস্থিতি সম্পর্কে ব্যাখ্যা চাওয়ার কোনো ইচ্ছে ওর মনে জাগছে না। ‘পিনেল, আমি তোমাকে নিশ্চয়তা দিচ্ছি, ড্রাগ ব্যবসার সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।
‘এভাবে যখন বলছেন, আপনার কথা আমি বিশ্বাস করবো।
‘তবে জাপানী গাড়িটা যদি সরাসরি পাশে চলে আসার চেষ্টা করে, নিরাপত্তার খাতিরে যে-কোনো কৌশল খাটাবার অধিকার তোমার আছে।’
আয়নায় এক মুহূর্ত চোখ রেখে কৃতজ্ঞতার সাথে হাসলো পিনেল । নির্দেশ, নির্দেশের ভাষা, দুটোই তার ভারি পছন্দ হলো। এ-ধরনের পরিস্থিতিতে পড়লে তার দুলাভাই ঠিক এই ভাষাই ব্যবহার করতো। রানার বিশ্বাস, গাড়ি দুটোর মাঝখানের ব্যবধান অবশ্যই বাড়াতে পারবে পিনেল, হোতাকে যদি খসাতে না-ও পারে। চেহারা দেখে ওর মনে হয়েছে, নিজের পেশায় লোকটা দক্ষ।
কিন্তু নৈপুণ্য দেখাবার সুযোগ পিনেলকে দেয়া হলো না। ওদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপই নিলো না হোণ্ডা, আগের মতোই বরাবর দুশো গজ পিছনে থাকলে।। অটোপিসটা ছেড়ে মেডিলিন শহরের মাঝখানে ঢোকার খানিক আগে থেকেই ট্রাফিকের সংখ্যা বেড়ে গেল, সেই সাথে সতর্ক হয়ে উঠলো পিনেল। এই প্রথম দূরত্ব কমিয়ে আনার চেষ্টা করলো হোণ্ডার ড্রাইভার। খানিকটা কাছে এলো বটে, কিন্তু এতো কাছে নয় যে আরোহীদের চেহারা পরিষ্কার দেখা যায়। শেরা- টনের সামনে ট্যাক্সি থামালো পিনেল, ক্যারের। ফিফটি-ওয়ানে খালি একটা জায়গা দেখে ঢুকে পড়লো হোণ্ডা ।
পরিস্থিতি যতোই বিরূপ হোক না কেন, সুবিধেজনক দু’একটা দিক সবসময় থাকে। যার ওপর নজর রাখা হয়েছে সে-ও কিছু সুবিধে ভোগ করে। পিনেলের সাথে কথা বলে ঠিক করে নিলো রানা আবার কখন কোথায় দেখা হবে ওদের, তারপর হোটেলে নাম লেখালো, এলিভেটরে চড়ে উঠে এলো পাঁচতলায়। এখানে লাগেজগুলো রাখলো ও। রুমসার্ভিসকে ডেকে কিছু পেসো সাধলো, বিনিময়ে জেনে নিলো সার্ভিস এলিভেটরটা কোনদিকে। শেরাটন ভবন থেকে চুপিসারে বেরিয়ে এলে। পিছনের রাস্তায়। হোণ্ডার লোকগুলো যদি রুমসার্ভিসকে প্রশ্ন করে, জানতে পারবে তাদের সাবজেক্ট ফাঁকি দিয়েছে। আর যদি প্রশ্ন না করে, খালি একটা স্যুইট পাহারা দেবে তারা। দ্বিতীয়টা হলে ভালো হয়, ভাবলো রানা, কারণ ফেরার পর কিছু প্রশ্ন করার ইচ্ছে রাখে ও
প্লাজা দে বলিভার পর্যন্ত হেঁটে এলো রানা, সময় লাগলো পনেরো মিনিট। প্রতিপক্ষদের ব্যাক-আপ টিম থাকতেও পারে, এই আশংকায় সতর্কতা অবলম্বন না করলে সাত মিনিটে পৌঁছতে পারতো ও। রেল- ওয়ের একটা কাউন্টার থেকে রানঅ্যাওয়ে ট্রেন-এর টিকেট কিনলো, পাশের দোকান থেকে কিনলো বাদামি রঙের একটা হ্যাট— প্রথমটা থেকে বেরোবার সময় ইমার্জেন্সী এগজিট ব্যবহার করলো, দ্বিতীয়টা থেকে বেরোলো পিছনের দরজা দিয়ে। এরপর প্রায় সরল একটা পথ ধরে প্লাজা দে বলিভারে চলে এলো, যেখানে ওর জন্যে ট্যাক্সি নিয়ে
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!