কায়রো – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।
বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ কাজী আনোয়ার হোসেন
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৯৮
কায়রো – বইটির এক ঝলকঃ
রানা অফিসের জন্যে তৈরি হচ্ছিল। এমন সময় এল তৃতীয় টেলিফোন- জাহেদ।
পাকিস্তান কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সের জাহেদ।
হাসল ওপাশ থেকে। একদম অবাক হয়ে গেলি, স্না।
‘তুই এখানে কেন?’ গম্ভীর কণ্ঠে বলল রানা।
স্লী, বস্ বনে আজিব চেঞ্জ মালুম হচ্ছে?’ জাহেদ বলল, ‘অনেক কথা জমে আছে…চলে আয় প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেসের কাছে রেস্তোরায়।
না, আমরা ট্যাপড হচ্ছি। তুই এখনই ওখান থেকে সরে পড়। কেন এসেছিস?’
জাহেদ চুপ করে গেল হঠাৎ। তারপর শোনা গেল ওর গলা। রানা প্রথম ঘাবড়ে গেল—গ্রীস থেকে ফিরে গ্রীক বলা শুরু করল নাকি! জাহেদ বলছিল, ‘চিতো কুর চিসা কুথে চিত্র কুনে চিক কুক চিথা কুআ চিছে—চিশা কুলা ।
শেষের দুটো শব্দকে বিশ্লেষণ করে পুরো রহস্য উদ্ধার করে ফেলল রানা । বাঙালী তরুণীদের নিজস্ব ডায়ালেক্ট। রেহানার কাছ থেকে শেখা। হাঃ হাঃ করে হাসল রানা।
জাহেদ বলে উঠল, “চিহ্ন কুল চিনা। ‘চিহা কুস চিতে কুহ চিবে চিহাঃ কুহাঃ : কুহা:–চিবু কুঝ চিলি, কুশা চিলা?’
চিহাঃ
জাহেদের হাসার নিয়ম শুনে আরও হাসল রানা। তারপর একটু ভেবে বলল, ‘চিকিকু কুকচি.চিথাকু কুরচি চিকু, কুশাবি চিলাকু…’
জাহেদের কথা শোনা গেল না কিছুক্ষণ। তারপর ওর মিনতি ভেসে এল, “দেখ শালা, রানা, চি আর কু শিখতেই জান বেরিয়ে গেছে। এ আবার কি শুরু করছিস? প্লীজ, সোজা করে বল, দোস্ত।’
“চিকি কুক চিথা?’ রানা বলল।
‘চিফো কুনে চিব কুলা চিয়া কুবে চিনা,’ জাহেদ বলল। “চিত্র কুক চিটা কুপ চিরি কুক চিল কুপ চিনা কুক চির কুঁতে চিহ্ন কুবে। চিতো কুর চিসা কুথে চিকো কুথা চিয় কুদে চিখা কুহ চিবে?’
রানা একটু ভেবে একই পদ্ধতিতে বলল, ‘তুই এক কাজ কর। গামহুরিয়া রোডের অপেরা হাউজে গিয়ে আজকের সন্ধ্যার দুটো টিকেট কেটে সাইনের রেস্তোরাঁয় গিয়ে অপেক্ষা করবি ঠিক সন্ধ্যার আগে। আমি রেস্তোরায় ফোর টেবিলে গিয়ে বসব। তুই আমাকে চেনার কোন ভাব প্রকাশ করবি না। টিকেটটা টোলে রেখে উঠে যাবি এবং অপেরা হাউজে গিয়ে বসবি। আমি অন্ধকার হলে যাব। এবং এভাবেই কথা বলব।’
কথা ক’টা বলতে রানার অনেক সময় লাগল। উত্তরে জাহেদ আরও অনেক কিছু বকবক করতে যাচ্ছিল। সানা রিসিভার নামিয়ে রেখে দিল ক্রেডলে।
অফিসে গিয়ে দেখা হলো ফায়জার সাথে। অফিসটা একটা ঘরেই সীমাবদ্ধ। তৌফিক রোডের একটা অফিস বাড়ির ছ’তলায়। একটা আলমিরা দিয়ে তার থেকে ফায়জার টেবিল বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। একজন আরবীয় পিয়ন অফিসের তৃতীয় কর্মী ।
ফায়জা ফাইলপত্র বের করতে যাচ্ছিল—রানা বলল, ‘আজ তোমার সাথে আলাপ করা যাক। ফাইল পরে দেখব।’
ফায়জা অবাক হলো । বসল শান্ত হয়ে। রানা ডাবল-ভালই হয়েছে মাঝখানে কোন পার্টিশন না থেকে। একা অফিস করা যেত না। তাছাড়া মেয়েটির পা দুটো সুগোল, মসৃণ এবং সুন্দর। বসার পর টাইট স্কার্ট হাঁটুর বেশ খানিক উপর পর্যন্ত প্রায় নগ্ন করে দিয়েছে।
রানা সিনিয়র সার্ভিস ধরিয়ে আরাম করে বসে ঊরুর ভারীত্ব এবং তার ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা সম্পর্কে নাতিদীর্ঘ চিন্তা করল। গত রাতের কথা মনে পড়ল। ডক্টর জিসান বাট। নামের কাঁটাতারের বেড়ার আড়ালে প্রতীকহীন ভাবে এক সুকোমল নারীদেহ ও মন। হ্যাঁ মনও। অদ্ভুত ভয় পেতে পারে মেয়েটি। পাওয়া স্বাভাবিক। আহসান এমনি ফোন পেয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল—এবং নিরুদ্দেশ হয়েছিল। তারপর তাকে পাওয়া যায় নীলের পানিতে। জিসান ভয় পেয়েছিল।… ফায়জা তার মিনি স্কার্ট আর নামাতে পারছে না। একটু কাত হয়ে বসল। এবার নিতম্বের গড়ন রানার চিন্তাকে রীতিমত প্রভাবিত করল। মেয়েটি দৈনিক টেনে নিয়েছে। ইংরেজি দৈনিক। মেয়েটি পুরো অর্থে মিশরীয় সুন্দরী ।
‘মিস ফয়সল,’ রানা বলল। ‘তোমার আগের বসের বয়স কত ছিল?’
ফায়জা চোখ তুলে তাকাল। রানাকে অবাক চোখে নিরীক্ষণ করে হাসল ঠোঁটের কোণে। মৃদু হাসি, কিন্তু বাঁ গালে গভীরভাবে টোল পড়ল। কাগজটা গুটিয়ে রেখে বলল, ‘তিনি একজন ভদ্রলোক ছিলেন।
‘মানে?’ রানা চোখ দুটোকে প্রশ্নবোধক করল, বলল, ‘তাঁর বয়স কি সত্তরের ওপর ছিল? কিন্তু, ও বয়সের লোককে তো আমাদের দেশ থেকে রিপ্রেজেন্টেশনে পাঠানো হয় না!”
_মেয়েটা গম্ভীর হবার চেষ্টা করল। কিন্তু হাসি চেপে রাখতে পারল না। খিলখিল করে হেসে নিয়ে বলল, ‘দুঃখিত।’ হাসি সামলাবার চেষ্টা করল। ফোন বেজে উঠল ফায়জার হাসির মত।
ফোন তুলে ফায়জা বলল, ‘সোনালী প্রোডাক্টস…,’ তারপর আরবীতে বলল, “হ্যাঁ, আমাদের নতুন বস্ এসেছেন। এক মিনিট…’
কান থেকে রিসিভার নামিয়ে বুকের সানুদেশে চেপে ধরে বলল, ‘স্যার, এগ্রিকালচার ডিপার্টমেন্ট আমাদের কাছ থেকে নমুনা নিয়েছিল—ওরা বেশ বড় রকমের অর্ডার দেবে—তার আগে আপনার সঙ্গে আলোচনা করতে চায়।
রানা কথা ক’টা মনোযোগ দিয়ে শুনে ডেস্ক ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টিয়ে দশ- এগারো দিন পরের তারিখটায় লিখল এগ্রিকালচার ডিপার্টমেন্ট। বলল, ‘২৯ জুলাই- এ এনগেজমেন্ট ফিক্স করো।
‘স্যার,’ ফায়জা বলল, ‘বেশি দেরি হয়ে যায়। এদিকে একটা মালয়েশিয়ান এজেন্সী আমাদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করছে।’
‘ঊনত্রিশে জুলাই,’ রানা গম্ভীরভাবে উচ্চারণ করল কথাটা ।
ফায়জা থতমত খেয়ে রিসিভার আবার কানে তুলল, ‘হ্যালো, মিস্টার মাসুদ রানা ঊনত্রিশে জুলাই আপনাদের দপ্তরে দেখা করবেন,’ বলেই রিসিভার নামিয়ে রাখল।
ফায়জার মুখ ডেনজার সিগন্যালের লাল আলোর মত জ্বলছে। মুখের চুইংগাম দ্রুত চিবুচ্ছে। এগারো দিন নয়— সাত দিনের মধ্যে মেয়েটি বুঝে নেবে তার নতুন বসের উদ্দেশ্য কি—তখন রানা ঢাকাগামী প্লেনে।
আবার ফোন বেজে উঠল। ফায়জা রিসিভার তুলল। তারপর রানার উদ্দেশে বলল, ‘আপনার, একজন মহিলা।’
রানা তার টেবিলের রিসিভার তুলে নিল, ‘হ্যালো?’
যা অনুমান করেছিল ঠিক তাই- জিসান বলছে। ‘তুমি আমাকে না জাগিয়ে চলে গেলে কেন?’
‘তোমাকে ঘুমন্ত দেখতে ভীষণ ভাল লাগছিল, তাই,’ রানা বলল। ‘কোত্থেকে বলছ?’
উঃ-বিছানা থেকে,’ জিসান বলল। ‘তোমার হোটেলে ফোন করেছিলাম… ‘হসপিটাল যাওনি?’
‘না, হসপিটাল আর গেলাম না, ফার্স্ট এইডের ব্যবস্থা আমি ঘরেই রাখি,’ জিসান বলল। ‘তুমি একটা ডাকাত!’ একটু থেমে বলল, ‘সাত দিনের ছুটি নিলাম এইমাত্র, ফোন করে। তুমিও সাত দিনের ছুটি নাও।’
‘তোমাকে মেন্টাল হসপিটালে পাঠানো উচিত,’ রানা বলল। ‘আজ কেবল অফিসে জয়েন করলাম, আজই ছুটি নিলে চাকরি থাকবে না।”
‘তুমি মিশর দেখবে না?’ জিসান বলল, “স্ফিংস… গিজার পিরামিড, খুফু…’ ‘আমি মিশরকে দেখেছি, ‘ রানা বলল। ‘নাসেরের প্রেমিকা—মিশরকে আমি দেখেছি।
‘দুষ্ট।’ জিসানের হাসি শোনা গেল, ‘রাতেও কি অফিস? তোমার সেক্রেটারি মেয়েটি সুন্দরী? ‘
‘হুঁ। ফায়জার দিকে তাকাল রানা, ফায়জার চোখ কাগজে, কান খাড়া। ‘সুন্দরী, হ্যাঁ, নিঃসন্দেহে। এবং ছেলেমানুষ। বয়স বোধহয় একুশের বেশি হবে না। সুগঠিত নিতম্ব, উন্নত বক্ষ । লালচে চুল, সবুজ চোখ। রানার কথা থেমে যেতে দেখেই বোধহয় মুখ তুলে তাকাল ফায়জা। রাগ নেই মুখে। অভিমান শব্দের প্রতিশব্দ কি আরবীতে আছে? মনে করতে পারল না রানা। হয়তো নেই। কিন্তু জেলাসী আছে। কিন্তু তাও নয়—চোখে ফায়জার ছেলেমানুষী ক্ষুব্ধতা। হাসল শব্দ
করে…
জিসান বলল, ‘কি, কথা বলছ না যে?’
‘কথা হারিয়ে ফেলেছি,’ রানা বলল, ‘পৃথিবীতে অসুন্দরী মেয়ে নেই—তবে কেউ কেউ আছে সুন্দরী হতে জানে না।’
“অসকার ওয়াইল্ড!’ জিসান বলল ।
‘ওহ্-বেশি তথ্য-জ্ঞানী হবার চেষ্টা কোরো না,’ রানা বিরক্তির সঙ্গে বলল। ‘সবচে আন-সেক্সি জিনিস মেয়েদের জন্যে।’
‘ওটা গার্লি-ম্যাগাজিনের কোটেশন,’ জিসান বলল। ‘আজ রাতে দেখা হবে?
‘এইতো মেয়েলী কথা,’ রানা বলল। ‘দশটার পরে রাত দশটা।’ ‘তোমার হোটেলে?’
‘হ্যাঁ, হতে পারে।’ ফোন রেখে দিল রানা। ফায়জার মুখ এখনও লাল। আবার ফোন বাজল। ফায়জা তুলে নিল ফোন। এবং সঙ্গে সঙ্গে ওর মুখ ফ্যাকাসে হয়ে গেল। বলল, ‘রং নাম্বার।
রানা ফায়জার দিকে তাকাল। ফায়জা রানার চোখে চোখে তাকাল। এখন ওর মুখের ভাব বোঝা যাচ্ছে না। নির্বিকার কণ্ঠে বলল, ‘স্যার, আমি আজ যেতে পারি? এখানে যখন কোন কাজ নেই ।’
পারি?’
‘ক’দিনের ছুটি চাই?’ রানা সন্দেহের সঙ্গে জিজ্ঞেস করে, ‘সাতদিন?’ “শুধু আজকেই ছুটি চাই।’
রানীও উঠল, ‘চলো, সবাই মিলে ছুটি নিই আজ।’,
ফায়জা ব্যাগ তুলে নিল। রানা বলল, “আমরা কি একসঙ্গে লাঞ্চ করতে
ফায়জা চোখ তুলে তাকাল, বলল, ‘আমি একাকী খেতে ভালবাসি।’
সন্দেহের চোখে তাকাল রানা, বলল, ‘তোমারও প্রেম কি নাসের?’
ফায়জা দাঁড়াল, অবাক হয়ে দেখল রানাকে। বলল, ‘হ্যাঁ, নাসেরকে আমি ভালবাসি। কিন্তু আমি মিশর নই।’
দ্রুত বেরিয়ে গেল ফায়জা। মেয়েটিকে রানা যত ছেলেমানুষ ভেবেছিল তত ছেলেমানুষ নয়।
আরবী পিয়নটা হাঁ করে তাকিয়ে ছিল। রানা বলল, ‘তোমার নাম কি?’ ‘ফারুক।’
“রাজা ফারুক?’
‘ওয়াক থু।’ থুথু ফেলল ফারুক। বলল, ‘না, আমি কাশিমের পুত্র ফারুক। তুমিও নাসেরকে ভালবাস?”
লোকটা রানার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকল। তারপর বলল, ‘হ্যাঁ, বাসি । আর নাসের আমাদের সবাইকে ভালবাসে। লোকটার কণ্ঠে একটা সরল বিস্ময় ছিল। সেমিটিক চেহারা। ছ’ফুট লম্বা দেহ। মুখে খোঁচা খোঁচা দাড়ি। বলল, ‘আমার দেশ গাজাতে। ইহুদিরা কেড়ে নিয়েছে। আমাদের বের করে দিয়েছে। আমার বোনকে ধরে নিয়ে গেছে। ছলছল করে উঠল কাশিমের পুত্র ফারুকের চোখ। বলল, ‘নাসের আমাদের ভিটে কেড়ে এনে দেবে। বোনকে ফিরিয়ে আনবে।’
প্রচণ্ড এক চড় খেয়ে যেন দাঁড়িয়ে পড়ল রানা। লোকটার দিকে তাকাল। লোকটার চোখে একটা প্রশ্ন ফুটে উঠল, বলল, ‘নাসের পারবে?’
‘পারবে,’ রানা বলল, জানালা দিয়ে বাইরে রাজপথে তাকাল। বলল, ‘নাসের নিশ্চয়ই পারবে।’
অন্ধকারে রানার পাশে বসে চি-কু দিয়ে দ্রুত বলে যাচ্ছিল মেজর জাহেদ তার পরিকল্পনা। জাহেদের কথা বোঝা কোঁন আরবীর তো দূরের কথা বাঙালীরও সাধ্য নয়। রানার চোখ স্টেজে, কান জাহেদের কথায় ।
মেজর জেনারেলের নির্দেশে এথেন্স থেকে বৈরুত, জর্ডন ঘুরে এখানে এসেছে জাহেদ। ইসরাইল নতুনভাবে আক্রমণ করবে আরব ভূ-খণ্ড। আল-ফাত্তাহর বাঙালী দলগুলো নতুন করে যোগাযোগ করবে রানার সঙ্গে। আপাতত তারা বিচ্ছিন্নভাবে ইসরাইলে ঢুকে পড়েছে। তাদের লক্ষ্য ছিল হাইফার তেল শোধনাগার। ওটা ধ্বংস হয়েছে। এতে বোঝা যাচ্ছে গণ্ডগোলটা কায়রোতেই হচ্ছিল। এ-ও হতে পারে আহসান নিজেই বিশ্বাসঘাতকতা করে আল-ফাত্তাহর হাতে শেষ হয়েছে।
রানা বাধা দিয়ে বলল, ‘আহসানকে হত্যা করার পেছনে আল-ফাত্তাহর ফোন যুক্তি থাকতে পারে না। তাদের সন্দেহ হলে ভয় দেখিয়ে কথা আদায় করত ওর কাছ থেকে—খুন করত না। আহসান মারা গেছে জিওনিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইন্টারন্যাশনালের হাতে।’
‘হয়তো আহসান এমন কিছু জেনে ফেলেছিল…’
‘সেটাই আমাদের বের করতে হবে, কী জেনেছিল,’ রানা বলল ।
“ওটা তোর কাজ। আমি এথেন্সে এবং কাবিল জেনেভায় শীঘ্রি কিছু কাজ দেখাব ম্যাজিকের মত। ত্রিপোলীতে আফসার খবর দেবে,’ জাহেদ বলল। এখানে আমার সব খবর পাবি – আল বুস্তান রোড যেখানে আল নাইল রোডের সঙ্গে মিশেছে—সেই মোড়ের পেট্রল পাম্পের পেট্রল বয়ের কাছে। ও এখানকার বাঙালী আল-ফাত্তাহর হেড অপারেটর সিক্রেট নাম্বার থ্রী এক্স–তোর ডায়েরীতে নিশ্চয়ই আছে। ও তোকে সাহায্য করবে, সামনাসামনি
“তা সম্ভব নয়।”
‘ও তোকে চেনে।
“কি করে?’ রানা প্রায় লাফিয়ে উঠতে চায় ।
জাহেদ হাসে। এবার চি-কু ব্যবহার না করেই বলে, ‘তোর সেক্রেটারিটা শালা কড়া জিনিস বলে? কিন্তু, দোস্ত, পাম্প-বয় তোর ভিলেন হবে। ও শালা ওখানে লাইন লাগাবার তালে আছে। তোকে এয়ারপোর্টে দেখেছিল এই মনসুর। আজ আমার সঙ্গে দেখেছে তোকে। চিনে নিয়েছে। ‘
“তোর সঙ্গে দেখবে কি করে?’ রানা অবাক হয় ।
‘চালু ছোকরা বাবা! আমার টেবিলে তুই বসলি, আমি কথা বললাম না-ও বুঝে নিল। জাহেদ খুক খুক করে হেসে কনুই দিয়ে পেটে গুঁতো মারে রানার। রানা কিছু বলবার আগেই জাহেদ বলে, ‘লৈ শালা, ঘাবড়ে গেলি তুই না পাকি…সরি চিপা কুকি চিন্তা কুন চিই কুন্টে কুলি চিজে কুন্সে চির কুগৌ চির কুব, চিমা কুসু চিদ কুরা চিনা! চিবু কুড়ো চির কুপো চিষ্য কুপু চিত্র? এটা বড় কঠিন বানান, রে শালা।’
হাসল রানা। আস্তে করে বলল, “এবার কেটে পড়—তোকে কেউ যেন না চেনে।
জাহেদ উঠে দাঁড়াল। রানা বলল, ‘চিঘু কুরে চিত্র কুন্য চিগে কুট চিদি কুয়ে চিযা কস—গুডবাই।’
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!