বন্দী গগল – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

বন্দী গগল – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ কাজী আনোয়ার হোসেন

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১২৭

বন্দী গগল – বইটির এক ঝলকঃ

করতে পারছে না। রোমে দিন কয়েক থাকছে, বলা যায় না, কেসটার সুরাহা হয়তো দেখে যেতে পারবে ও। তাছাড়া, রানা ভুলে যেতে পারছে না, একজন সাহায্য চেয়েছিল ওর, যে এখন সত্যিই বিপন্ন।
ঠিক পৌনে আটটার সময় এল টেলিফোন। নিশ্চয়ই মোনিকা! দ্রুত হাত বাড়িয়ে রিসিভার তুলল রানা। ‘হ্যালো?’ নাচ-গানের অস্পষ্ট আওয়াজ পেল ও।
‘সিনর রানা?’ একটা অচেনা মেয়ের গলা। শুধু মিষ্টি নয়, সুমধুর। এই ধরনের কণ্ঠস্বরই বেশিরভাগ পুরুষের বুকে পুলকের ঢেউ তোলে। অন্তত রানার তুলল।
‘বলছি,’ বলল রানা।
“সিনর রানা, মৃদু, মার্জিত সুরে বলল মেয়েটা, ‘আমি পাপিয়া ক্যালিয়ারি। সার্কাসা ক্লাব থেকে বলছি। আপনার সঙ্গে একটা অ্যাপয়েন্টমেন্ট চাই। সময় হবে?’
এড়িয়ে যাওয়ার একটা তাগাদা অনুভব করল রানা। বলল, ‘এখন তো সময় দিতে পারব না। আপনি বরং…’
‘আপনার কখন সময় হবে, বলুন?’ জানতে চাইল ও প্রান্তের ঢেউ- জাগানিয়া স্বর ।
“সেটা নির্ভর করছে কি জন্যে অ্যাপয়েন্টমেন্ট চাইছেন আপনি তার ওপর।’
এবার কয়েক সেকেন্ডের বিরতি, তারপর মৃদু গলায় সিনোরা ক্যালিয়ারি বলল, “আমি আপনার সাহায্য চাই, সিনর রানা। ফোনে তো সব কথা খুলে বলা সম্ভব নয়, তাই…’
চট করে বলল রানা, ‘সম্ভবত কিডন্যাপিঙের ব্যাপারে সাহায্য চান আপনি, তাই না? কিন্তু ওটা তো পুলিসের কেস, আমাদের কিছু করার আছে বলে মনে হয় না।’
‘প্লীজ, সিনর রানা!’ আবেদনের সুরে বলল পাপিয়া, ‘বিশেষ জরুরী একটা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে বলেই আমি আপনার সাহায্য চাইছি। হোক গুনিস কেস, আপনি সাহায্য করতে পারবেন জেনেই ফোন করছি, অ্যাপয়েন্টমেন্ট চাইছি আমি। কখন সময় হবে আপনার, প্লীজ?’
না। আবারও সেই কৌতূহলটা মাথা তুলে দাঁড়াল। এক কোপে নামিয়ে দেবে তার কন্না? একটা সময় দিল রানা, বলল, ‘রাত সাড়ে ন’টায়।’
পাপিয়া ক্যালিয়ারির স্বস্তির নিঃশ্বাসটা পরিষ্কার শুনতে পেল রানা। ‘কোথায়, সিনর রানা?’
*আপনাকে আর আসতে হবে না,’ বলল রানা। ‘ক্লাবে কতক্ষণ আছেন আপনি?’
‘বারোটা পর্যন্ত; সাড়ে ন’টার সময় আপনার জন্যে আমি পার্কিং লটে অপেক্ষা করব। কালো একটা আলফা রোমিও।’
‘আলফা রোমিও?’
‘হ্যাঁ, অসংখ্য ধন্যবাদ, সিনর রানা।’
রিসিভার রেখে দিল রানা। কৌতূহলটা এখন তীব্রভাবে আকর্ষণ করছে ওকে। সত্যি কোন প্যাচ আছে এর মধ্যে? অসাধারণ কোন বুদ্ধির প্যাচ? নাকি ব্যাপারটা স্রেফ কল্পনা ওঁর? কাঁধ ঝাঁকিয়ে চিন্তাটা মাথা থেকে বের করে দিতে চাইল ও। আগে তো ডিনার খাওয়া শেষ হোক, তারপর শোনা যাবে পাপিয়া ক্যালিয়ারির কথা। কারও কথা শুনতে আপত্তি নেই, ওর ইচ্ছের বিরুদ্ধে কেউ তো আর ওকে কোন ঝামেলায় জড়াতে পারছে না ।
সার্কাসা ক্লাব।
রোমের অভিজাত মহলের কেউকেটারাই এ ক্লাবের সদস্য। ফলে বিধিনিষেধের বেশ কড়াকড়ি। সদস্য ছাড়া আর কাউকে ভেতরে ঢুকতে দেয়া হয় না। রানা সদস্য নয়, কিন্তু ওর ধারণা ছিল টেলিফোন করে গেটে বলে রাখবে সিনোরা ক্যালিয়ারি। ধারণাটা মিথ্যে হলো না। ভেতরে ঢুকে রাস্তার দু’পাশে ফুলের বাগান দেখল ও। বাগানের এখানে-সেখানে আসর জমে উঠেছে, ছুটোছুটি করছে বয়-বেয়ারা। এরপর ওর ডান দিকে পড়ল মস্ত এক সুইমিং পুল। ফ্লাড লাইটের আলোয় ভেসে যাচ্ছে চারদিক। ক্লোরিন মেশানো স্বচ্ছ পানিতে মগ্ন হয়ে আছে সন্তরণ সুখী কয়েকজন নারী-পুরুষ। পার্কিং লটে এসে গাড়ি থামাল রানা। স্টার্ট বন্ধ করে নিচে নেমে সমস্যাটা টের পেল ও। সারি সারি অসংখ্য গাড়ি দাঁড়িয়ে রয়েছে, এর মধ্যে থেকে কালো একটা আলফা রোমিও খুঁজে বের করা প্রায় অসম্ভব। সময় নষ্ট না করে প্রথম সারির সামনে দিয়ে হাঁটতে শুরু করল ও। একটু পরই লক্ষ করল, সারির শেষ প্রান্তে একটা গাড়ির পার্কিং লাইট জ্বলছে আর নিভছে। দূর থেকে গাড়িটা আলফা রোমিও কিনা বোঝা গেল না। তবু সেদিকেই এগোল রানা। কাছে গিয়ে দেখল এই গাড়িটাই বেন ভেনুতোয় দেখেছিল ও। ঝুঁকে পড়ে জানালা দিয়ে ভেতরে তাকাল।
“সিনর রানা?”
হাতে সিগারেট নিয়ে হুইলের পিছনে বসে আছে পাপিয়া। প্রথমে রানার চোখ পড়ল চুলে জড়ানো সোনালি একটা জালের সাথে আটকানো হীরকখণ্ডগুলোর দিকে, আগুনের ফুলকি যেন, চারদিকে দ্যুতি ছড়াচ্ছে। সরাসরি তার মুখে এসে পড়েছে চাঁদের আলো। পাথরের নারী-মূর্তির মত রহস্যময়ী লাগছে তাকে। পরনে সোনালি স্ট্র্যাপলেস পোশাক। চোখ তুলে তাকাল রানার চোখে। এমন গভীর আয়তচোখ আর কোন মেয়ের দেখেনি রানা।
‘হ্যাঁ,’ বলল রানা।
ধন্যবাদ, সিনর, মৃদু হাসল পাপিয়া। ‘ঠিক সময় এসে পৌঁছেছেন আপনি।’ পাশের সীটে সরে গেল সে। উঠে পড়ুন।
একটু ইতস্তত করল রানা। জানতে চাইল, ‘আমরা কি এখানেই কথা বলব?’
‘যদি অন্য কোথাও যেতে না চান।’
‘গলফ কোর্সের পাশে একটা নদী আছে,’ বলল রানা।
‘বেশ তো, ওখানেই,’ গাড়ির দরজা খুলে দিল পাপিয়া। ‘আপনিই ড্রাইভ করুন, প্লীজ।’
হুইলের পিছনে এসে বসল রানা। সুইচ অন করে স্টার্ট দিল। পার্কিং লট থেকে রাস্তায় উঠে এসে ঘাড় ফিরিয়ে তাকাল ও। ধরা পড়ে গিয়ে অপ্রতিভ হলো যেন পাপিয়া। রানার দিকে তাকিয়ে ছিল। চোখাচোখি হতেই ধীরে ধীরে মুখ ফিরিয়ে সামনের দিকে তাকাল। একটু পরই অন্যমনস্ক হয়ে পড়ল। একাকী লাগছে তাকে রানার। মুখটা সাদা কাগজের মত ভাবলেশহীন।
নদীর ধারে এসে গাড়ি থামাল রানা। পথে কোন কথা হয়নি ওদের মধ্যে। ‘নিচে নামবেন?’
চমকে উঠল পাপিয়া। ঘাড় ফিরিয়ে তাকাল রানার দিকে। চিন্তাজান, ছিঁড়ে এখনও বাস্তবে ফিরে আসেনি। তারপর বিষণ্ণ একটু হাসল সে, অনেকটা ক্ষমা প্রার্থনার ভঙ্গিতে। জানালা গলিয়ে ফেলে দিল সিগারেট। নিস্তব্ধ রাত, পানিতে সিগারেট পড়তেই ছ্যাঁৎ করে শব্দ হলো। ‘অযথা আপনার সময় নষ্ট করতে চাই না,’ বলল সে। এখানে বসেই সংক্ষেপে কয়েকটা কথা বলতে চাই।’
প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট বের করল রানা।
‘সোয়ান দালার লাশ তো আপনিই প্রথম দেখেন, তাই না, সিনর রানা? ‘হ্যাঁ,’ বলল রানা। তারপর নিতান্ত ভদ্রতার খাতিরে জানতে চাইল, ‘আপনার স্বামীর কোন খবর পেলেন?’
“আজ রাতে ফোন করেছিল ওরা। দশ লক্ষ মার্কিন ডলার চায়। বারবার বলল, আপনার দুবে ভাল আছে।’ শান্ত, ঠাণ্ডা গলায় কথা বলছে পাপিয়া, কিন্তু ভয় আর উদ্বেগ তাতে চাপা পড়েনি। ‘পরশু রাতে পৌঁছে দিতে হবে টাকাটা। টাকা ওদের হাতে পৌঁছুবার পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব দুবেকে ওরা ছেড়ে দেবে।’ আরও কি যেন বলতে গিয়েও ইতস্তত করে থেমে গেল সে।
সঙ্গে সঙ্গে কোন কথা বলল না রানা। অপেক্ষা করছে ও। কিন্তু পাপিয়া ইতস্তত ভাবটা কাটিয়ে উঠতে পারছে না লক্ষ করে জিজ্ঞেস করল, ‘আমার সঙ্গে অ্যাপয়েন্টমেন্ট চেয়েছিলেন কেন?’
‘কথাটা কিভাবে শুরু করি ভেবে পাচ্ছি না,’ বলল পাপিয়া। ‘আমার অনুরোধ, আপনি যেন কিছু মনে করবেন না। কাজটা সামান্য, আপনার ফার্মের উপযুক্ত না, জানি। সেজন্যেই বলতে সাহস পাচ্ছি না। কিন্তু আপনাদের ছাড়া আর কাকে বিশ্বাস করব তাও বুঝতে পারছি না।’
‘কি কাজ?’
‘এ-ধরনের কাজ আপনারা করেন না জানি তবু,’ অনুরোধটা করতে ইতস্তত করছে পাপিয়া। যত টাকা ফি লাগে দেব আমি। কিন্তু আমার একজন বিশ্বস্ত লোক চাই। সে রকম লোক নিশ্চয়ই আছে আপনার এজেন্সীতে। তাকে টাকাটা পৌঁছে দিতে হবে।
‘খোঁজ করলে সেরকম লোক আপনিও অনেক পাবেন,’ বলল রানা।
‘ভয়টা কেন? অনেক টাকা, তাই?’
‘না,’ মৃদু গলায় বলল পাপিয়া। ‘আপনি বলছেন টাকা পৌঁছে দেয়ার জন্যে অনেক লোক পাওয়া যাবে, কিন্তু এ পর্যন্ত আমি তো কম চেষ্টা করিনি, কই, একজনও তো তেমন উৎসাহ দেখাল না।’
ব্যাপারটা উপলব্ধি করল রানা। কিডন্যাপারদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে যাওয়া আসলেই সাংঘাতিক ঝুঁকির ব্যাপার। প্রায় ক্ষেত্রেই দেখা যায়, দাবির টাকা পৌঁছে দেয়ার জন্যে ধাঁকে পাঠানো হয় তাকে তারা খুন করেছে। দুঃসাহসী লোক ছাড়া এ ধরনের ঝুঁকি কেউ নিতে চায় না। সাবেক প্রধানমন্ত্রী আলদো মরোর ব্যাপারেও দেখা গেছে এমনি ঘটনা ।
“বিশ্বস্ত লোক দরকার কেন?”
‘আসলে এমন একজন লোক দরকার আমার, যে আমার ইচ্ছেটার মর্যাদা দেবে,’ বলল পাপিয়া। ‘আমি কিডন্যাপারদের সমস্ত শর্ত অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে চাই। এমন একজন লোক দরকার আমার, যে পুলিসকে এ ব্যাপারে কিছুই জানাবে না। এবং আমি যা বলব ঠিক তাই করবে, নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে কোন চালাকি করতে গিয়ে আমার স্বামীর বিপদ ডেকে আনবে না। এই সাহায্যটুকুই আপনার কাছ থেকে আমি চাই। তাকে আপনার ফার্মের লোক হতে হবে।’
বুদ্ধির প্যাচ কষে এক কথায় লক্ষ মার্কিন ডলার আদায় করে নিচ্ছে—কে? কারা? টাকা পেয়ে জা দুবেকে তারা ছাড়বে বলে মনে হয় না। কে জানে, বেন ভেনুতো থেকে তাকে বের করে নিয়ে গিয়েই হয়তো খুন করে ফেলেছে! যতই ভাবছে রানা, বেড়ে যাচ্ছে কৌতূহল। কে আছে এর পেছনে? ভেতরের কারও যোগসাজশ ছাড়াই ঘটনাটা ঘটেছে, নাকি। পাপিয়া ওর দিকে তাকিয়ে আছে বুঝতে পেরে চিন্তায় ছেদ ঘটিয়ে বলল রানা, ওদের সঙ্গে কোন অ্যারেঞ্জমেন্টে পৌঁছেছেন আপনি?’
মাথা নাড়ল পাপিয়া। ‘ওরা শুধু ওদের শর্তের কথা জানিয়েছে। ব্যবহার করা বিশ ডলারের নোটে দিতে হবে টাকাটা। তিনটে অয়েলস্কিন পার্সেলে মুড়ে। কোথায় পৌঁছে দিতে হবে তা ওরা আমাকে জানাবে শেষ মুহূর্তে।’
ব্যবহার করা বিশ ডলারের মার্কিন নোট, যোগাড় করা সম্ভব?’
“ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা হয়েছে আমার,’ বলল পাপিয়া। ওরা জানিয়েছে, সম্ভব।’ একটু থেমে জানতে চাইল সে, ‘আপনিও কি মনে করেন, টাকাটা পৌঁছে দেয়ার ব্যাপারে সত্যি কোন ঝুঁকি আছে?’
যে টাকাটা পৌঁছে দিতে যাবে, তার জন্যে
“”হ্যাঁ?’
‘ঝুঁকি তো নিশ্চয়ই আছে,’ বলল রানা। ‘কিন্তু, টাকা পৌঁছে দেয়ার আয়োজনটা কি ধরনের হবে তা জানা থাকলে ঝুঁকির পরিমাণটা বোঝা যেত।’
ব্যাগ খুলে একটা সিগারেট বের করল পাপিয়া। লক্ষ করল রানা, ধরাবার সময় হাত দুটো একটু একটু কাঁপছে তার। ‘আপনি কি মনে করেন দুবেকে ওরা ফিরিয়ে দেবে না?
‘বলা মুশকিল। ওদের তিনি দেখেছেন কিনা তার ওপর নির্ভর করে ব্যাপারটা। যদি না দেখে থাকেন, ফেরত পাঠাতে অসুবিধে কোথায়।’ “কিন্তু যদি দেখে থাকে?’ ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করল পাপিয়া।
‘নির্ভর করবে ওদের ইচ্ছের ওপর। কিডন্যাপাররা ব্ল্যাকমেইলারদের মতই নির্মম হয়, সিনোরা। কিডন্যাপিঙের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। ওরা কোন ঝুঁকি নেয় না ।
‘আমার তরফ থেকে ওদের কোন ঝুঁকি নেই। ওরা যা চাইবে সব দিতে রাজি আছি আমি। ওদের সমস্ত শর্ত আমি মেনে নেব। সব কিছুর বিনিময়ে আমি আমার স্বামীকে ফেরত চাই। এটা যে ঘটল এর জন্যে আমিই তো দায়ী। আমার টাকাই আমার সর্বনাশ ডেকে আনছে…’ ফুঁপিয়ে উঠল পাপিয়া, মুখ ঢাকল দু’হাতে। ওকে আমার ফিরিয়ে আনতেই হবে।’
চুপ করে থাকা ছাড়া আর কিছু করার কথা এই মুহূর্তে ভেবে পেল না রানা। মুখের ওপর তো আর কাউকে বলা যায় না যে আপনার স্বামীকে জীবিত দেখার আশা ছেড়ে দিন, কারণ টাকাটা পেয়ে বেঁচে থাকার বাসনা .সহস্র গুণ বেড়ে যাবে কিডন্যাপারদের। জিম্মিকে খুন করাই বেঁচে থাকার শ্রেষ্ঠ পন্থা বলে মনে হবে তাদের। অনেক কিডন্যাপার এর আগে জিম্মিদের ছেড়ে দিয়ে ঠকেছে। ছাড়া পেয়ে ওরাই কিডন্যাপারদের ধরিয়ে দিতে সাহায্য করে। ‘এ-ব্যাপারে পুলিসকে কিছু জানাচ্ছেন না কেন?’
‘পুলিসকে জানানো আর আমার স্বামীকে নিজের হাতে খুন করা তো একই কথা! ওরা আমাকে পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, আমার প্রতিটি আচরণের ওপর কড়া নজর রাখা হচ্ছে। পুলিসের সঙ্গে কোন রকম যোগাযোগ করলেই দুবেকে খুন করা হবে। তাছাড়া, পুলিস তো কোন কম্মেরই নয়। এখন পর্যন্ত কিছুই করতে পারেনি ওরা। আপনি সাহায্য করবেন, সিনর?
জানালা গলিয়ে সিগারেটটা ফেলে দিয়ে বলল রানা, ‘টাকা পৌঁছে দেয়ার ব্যাপারে ঝুঁকি আছে, আমি বললে হাসি মুখে সে ঝুঁকি নেবে আমার এজেন্সীর লোকেরা। কিন্তু তা আমি ওদের নিতে বলব না ।
“হতাশায় কালো হয়ে গেল পানিয়ার চেহারা। ‘কিন্তু, সিনর রানা, আমি মেয়ে হয়ে যেখানে ঝুঁকি নিতে পারব, সেখানে আমার সঙ্গে একজন পুরুষ কেন পারবে না?”
‘তার মানে? আপনিও যেতে চান নাকি?’
“হ্যাঁ। সিদ্ধান্ত নিয়েছি, টাকাটা ওরা পেল কিনা তা আমি নিজের চোখে দেখব। আমাকে ভুল বুঝবেন না, প্লীজ। আমার সঙ্গে যে যাবে তাকে বিশ্বাস করতে পারব না বলে নয়। বলতে পারেন, নিজেকে সন্তুষ্ট করার জন্যেই টাকাটা যে পৌঁছুল তা আমি দেখতে চাই।’
সেই কৌতূহলটা আবারও জ্বালাতে শুরু করল রানাকে। ‘কিন্তু ঝুঁকি আছে জানার পরও আপনি…’
‘দুবের জন্যে আমি যে-কোন ঝুঁকি নিতে পারি,’ বলল পাপিয়া। একটু

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top