ভন্ডপীর – আসাদ বিন হানিফ – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।
বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ আসাদ বিন হানিফ
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১৫৮
ভন্ডপীর – বইটির এক ঝলকঃ
‘সত্যি বলছি, তোমাকে আমি প্রলোভন দেখাচ্ছি না। তোমার জন্য আমি যে কোন ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত। বলো, তুমি আমার কি পরীক্ষা নিতে চাও?’
সরদার দৃঢ় কণ্ঠে কথাগুলো বলে মদের পিয়ালা হাতে তুলে নিল । পিয়ালা মুখে লাগাবে এমন সময় রায়াদী দ্রুত তার কাছ থেকে পিয়ালাটি কেড়ে নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে দূরে ছুঁড়ে ফেলে দিল । বললো, ‘তুমি অনেক কথা বলেছো, এখন আমার কথা শুনে নাও। যদ তোমার জ্ঞান বুদ্ধি গুলিয়ে দেবে। তোমার মনের আবেগ, ভালবাসার আলো সব অন্ধকার দিয়ে ঢেকে দেবে । তুমি জানতে চেয়েছো, তুমি প্রকৃত ভালবাসা দিলে আমি তা গ্রহণ করবো কিনা? এবার আমার মতামত শুনে নাও। সত্যিকার ভালবাসা যদি তুমি দিতে পারো তবে অবশ্যই আমি তা গ্রহণ করবো। কিন্তু তুমি আমাকে সত্যি ভালবাসো তা প্রমাণ করতে হবে । তুমি তোমার প্রকৃত ভালবাসা দেখাও। যদি আমার আত্মা তোমার ভালবাসার সুবাস পায় তবে সে ঠিকই তাতে সাড়া দেবে । তখন আমি তোমার সাথে পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে হাসি মুখে ছুটে যাবো। যে কোন বিপদ মাথা পেতে নেবো, তোমার সাথে মরুভূমিতে ছুটে বেড়াবো নিশ্চিন্ত মনে। ভালবাসা পেলে তোমার সঙ্গী হয়ে মরতেও আপত্তি নেই আমার।’
সরদার পলকহীন চোখে তাকিয়ে রইলো তার দিকে। তার
এলোমেলো চল বাতাসে দোল খাচ্ছে। চোখে মায়াময় সম্মোহনী। সেখানে বিশ্বাস অবিশ্বাসের সুস্পষ্ট দোলাচল ! একটু আগেও সেখানে ছিল সীমাহীন অবজ্ঞা ও ঘৃণা। আর সেই ঘৃণা কত নির্ভয়ে প্রকাশ করলো মেয়েটি। এমন সরলতা কেবল তার পক্ষেই প্রকাশ করা সম্ভব যার মধ্যে এখনো মানবিক প্রেমপ্রীতি ও মায়ার আবেশ রয়েছে।
তার হাত থেকে মেয়েটি যখন মদের পিয়ালা কেড়ে নিয়ে দূরে ফেলে দিল তখনই তার ভেতরটা কেমন যেন নড়ে উঠলো । তার পৌরুষ ও চেতনা শিথিল হয়ে এলো। সে এমন অসহায় বোধ করলো যেন তার নিজের ওপর নিজের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই । এই মেয়ে যেন তাকে যাদু করেছে। এখন তার কথায় উঠবস করা ছাড়া সে আর কিছুই কল্পনা করতে পারছিল না ।
এটা পুরুষের স্বভাব যে, সে দশ জন লোকের সাথে লড়াই করতে পারে, বাঘের সাথে যুদ্ধ করতে পারে কিন্তু যে নারীকে সে পছন্দ করে সে যদি একবার বলে, ‘আমি তোমাকে ঘৃণা করি’ তখন সে পুরুষ বালির স্তূপের মত ধ্বসে যায়। সরদারের মনের অবস্থাও এখন অনেকটা সে রকম। যে লোক যুদ্ধের ময়দানে মৃত্যুর সাথে লড়েছে সে এখন এক নারীর কাছে আত্মসমর্পন করে বসে আছে।
‘আমি তোমাকে আমার কোন সাথীর খেলনা হতে দেবো না।’ ‘আমি এটাকে সাদরে গ্রহণ করি।’ রায়াদী বললো, “আমি আত্মহত্যা করবো না, কারণ এটা ভীরুতা। আমি পালাবার চেষ্টাও করবো না, কারণ পালিয়ে যাওয়ার মত কোন জায়গা নেই আমার ৷ আমি তোমাকে ছলনাও করবো না, কারণ ছলনা করার প্রয়োজন আমার ফুরিয়ে গেছে। আমার আত্মা মরে গিয়েছিল, যদি তাকে তুমি বাঁচিয়ে তুলতে পারো তবে তা তোমারই থাকবে।’
সে রায়াদীর একটি হাত চেপে ধরে বললো, ‘আজ আমি প্রথম অনুভব করলাম, তোমার মনে কত ব্যথা ও জ্বালা। আমি তোমার ব্যথার সাথী হতে চাই।’
রায়াদী যেন নতুন করে জীবন পেলো। সে তার প্রিয় ব্যথাতুর একটি গানে গুনগুনিয়ে সুর তুললো ।
তুমি তো নর্তকী জানতাম, গানও গাইতে পারো?’
‘হ্যাঁ, আমি গানও করি।’ রায়াদী বললো, ‘কিন্তু সেই গান গাই, যাতে বেদনা আছে, কষ্টের কান্না আছে।’ সে গুন গুন করে গাইতে লাগলো, ‘কাফেলা চলেছে হেজাযের পথে—‘ গান তো নয়, রায়াদীর কণ্ঠ থেকে ঝরে পড়ছিল অন্তর নিঙড়ানো কান্নার ব্যাকুল ধ্বনি। গানের ভাষায় মূর্ত হয়ে উঠছিল তার ভালবাসা, তার অন্তরের বেদনা ও কষ্ট। তার স্বপ্নের সেই রাজকুমার যেন তাকে আবার আশা ও আলোর পথে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। হেজাযের পথে শহীদ হওয়া রাজকুমারের হাত ধরে সে হেঁটে যাচ্ছিল চন্দ্রালোকিত মরুভূমি মাড়িয়ে। তার চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছিল অশ্রু ।
সামিয়ানার ভেতরের পরিবেশ পাল্টে গেল। সেখানে এখন করুণ সুরের অবিচ্ছিন্ন ধারা বয়ে যাচ্ছে। রায়াদী আপন মনে
গান গেয়ে যাচ্ছে। ক্রমে তার গানের তাল আরও বেদনাময় হয়ে উঠলো। তার আবেগে যেন বিঘ্ন সৃষ্টি না হয় সে জন্য সরদার পাথরের মূর্তির মত নিশ্চল বসে ছিল। এক সময় রায়াদী বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করলো, খৃস্টান সরদারের চোখ ঘুমে ঢুলুঢুলু করছে। সরদার অনুভব করলো, এমন ঘুমের ভাব তার আগে কখনও আসেনি। প্রতি রাতে সে মদ খেয়ে বেহুশ হয়ে যেতো এবং সেই মাতাল অবস্থাতেই সে ঘুমিয়ে যেতো। আজ সে মদ পান করেনি, কিন্তু ঘুম তাকে ঠিকই চেতনার রাজ্য থেকে দূরে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল।
যখন সে গভীর ঘুমে তলিয়ে গেল তখন রায়াদী গান থামিয়ে তার দিকে অপলক চোখে তাকিয়ে রইলো। লোকটি পালংকের উপর শুয়েছিল। সেদিকে তাকিয়ে রায়াদীর মনে একই সাথে জমা হচ্ছিল ক্ষোভ, ঘৃণা, প্রেম ও সহানুভূতির বিচিত্র ভাব। বার বার তার চেহারা পাল্টে যাচ্ছিল।
অনেকক্ষণ নিরবে সে লোকটির দিকে তাকিয়ে রইলো। এক সময় কোমর থেকে খঞ্জর বের করে শক্ত মুঠোতে ধারণ করলো। তারপর খঞ্জর বাগিয়ে সে এগিয়ে গেল ঘুমন্ত খৃষ্টানের দিকে ।
সে খঞ্জরের মাথা খৃস্টানের গর্দানের শাহ রগের কাছে নিল । কি মনে করে সেই খঞ্জর ঘুরিয়ে নিজের বুকের ওপর ধরলো। আবার সেখান থেকে খঞ্জর সরিয়ে খৃস্টানের গর্দান বরাবর হাত উঠালো। এ সময় তাবুর দরজার কাছে কেউ চুপ থাকার সংকেত সূচক ‘ইশ্ শব্দ করলো।
রায়াদী দ্রুত খঞ্জর সরিয়ে তাকালো দরজার দিকে। দেখলো, সামিয়ানার পর্দা ধরে দাঁড়িয়ে আছে সেই সুন্দর যুবক, যাকে সে খৃষ্টানদের বন্ধু ভাবলেও সে ছিল আইয়ুবীর গোয়েন্দা, হাসান ইদরিস ।
হাসান ইদরিস ইশারায় রায়াদীকে নিজের কাছে ডাকলো । রায়াদী খঞ্জরটি খাপে পুরে কোমরে গুঁজে নিয়ে এগুলো তার দিকে ।
হাসান ইদরিস অনুচ্চ কণ্ঠে বললো, ‘বাইরে এসো, গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে।’
রায়াদী প্রশ্নবোধক দৃষ্টি নিয়ে তাকালো তার দিকে। যাবে কি যাবে না যেন সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না। হাসান ইদরিস আবারও তাকে ইশারা করলো । রায়াদী সব দ্বিধাদ্বন্দ্ব ঝেড়ে তাবুর বাইরে পা রাখলো ।
হাসান ইদরিস তাকে বললো, ‘আজ রাতে এ লোক একা এ তাবুতে রয়েছে । অন্যরা অনেক দিনের জন্য দূরে চলে গেছে। এ ব্যক্তি আমার হেফাজতে আছে। ঘুমন্ত লোককে আমরা হত্যা করি না। একে যে হত্যা করবে সে আমার হাতে মারা যাবে। তুমিই তো তাকে বলেছো, ‘আমি আত্মহত্যা করবো না, কারণ এটা ভীরুতা, আমি পালাবোও না, কারণ পালাবার মত কোন জায়গা আমার নেই। আর আমি ছলনাও করবো না।’ কিন্তু তুমি ঘুমন্ত লোককে হত্যা করতে চাচ্ছো, এটা কি প্রতারণা ও ছলনা নয়?’
তুমি কি তাকে কি বলে দেবে যে, আমি তাকে ঘুমন্ত অবস্থায় হত্যা করতে চেয়েছিলাম? তার গর্দানে খঞ্জর ধরেছিলাম?’
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!