বেদুঈন কন্যা – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।
বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ কাজী আনোয়ার হোসেন
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১০০
ব্যর্থ মিশন – বইটির এক ঝলকঃ
সেদিন বলছিল, তার প্লেনে সবসময় শুধু লাইফজ্যাকেট নয়, রাবারের ভেলাও থাকে।’
“রিফটা কেমন, যেখানে পড়েছে প্লেনটা?’
‘সেটাই চিন্তার বিষয়,’ জবাব দিল কাফ্রি সরদার ।
মুখ থেকে পাইপ নামিয়ে বুড়ো খিজির হায়াত বলল, ‘আবহাওয়া খারাপ থাকলে সাগর উদ্ভট আচরণ করে ।’
একটা ঢেউয়ের মাথায় চড়ছে ফরচুনা, ছুটে এসে পাশে আঘাত করল জোরাল দমকা বাতাস। গোটা ইয়ট থরথর করে কেঁপে উঠল, ঢাল থেকে কাত হয়ে পড়ে যাচ্ছে ।
মেনদেরেস ও হায়াত ছিটকে পড়ল একদিকে । সালেভানের মস্ত কাঁধ ধরে ভারসাম্য রক্ষা করল রানা ।
খপ করে হুইল ধরে দ্রুত ঘোরাল সরদার, আরেকটা ঢেউ চলে আসবার আগেই সিধে করে নিল ফরচুনাকে ।
কম্পাস হাউজিং-এর আলোয় অসুস্থ ও সন্ত্রস্ত দেখাল মেনদেরেসকে । সেলুনের দরজা খুলে গেল, আলো পড়ল বাইরে । কম্পানিয়নওয়ে ধরে উঠে আসছেন জিমি মোরেল, হাতে জগ ভর্তি কফি ও মগ। ‘ওরের্-বাপ, সাগর দেখছি সত্যি খেপেছে!’
‘হের মোরেল, কেমন আছেন আপনি?’ জানতে চাইলেন
মেনদেরেস ।
‘যেমন থাকার কথা, খালি বমি আসছে,’ বললেন মোরেল । ‘আমার আসলে ডাঙাতেই থাকা আসা উচিত ছিল।’ মেঘ কেটে যাওয়ায় বৃষ্টি থেমেছে।
কফি এত গরম যে জিভ পুড়ে যাচ্ছে, তারপরও ঘন ঘন চুমুক দিচ্ছে রানা। লাল ও সবুজ নেভিগেশন লাইট অদ্ভুত আভা ফেলছে দুলন্ত ডেকের উপর । ইয়টের চারধারে শুধু আঁধার ও মাতাল সাগর ছাড়া আর কিছু নেই ।
ছেঁড়া মেঘগুলো সরে যেতে চাঁদ উঠল, কিছু তারাও দেখা দিল । বড় বড় ঢেউয়ের উপর দিয়ে অনায়াসে এগোচ্ছে ফরচুনা । তারপর ইঞ্জিনের আওয়াজকে ছাপিয়ে উঠল অন্য রকম একটা গর্জন, একটু যেন ফাঁপা, সেই সঙ্গে চাঁদের আলোয় দেখা গেল সাদা পানির একটা ঝরনা পঞ্চাশ ফুট উঁচু হয়ে আছে ।
‘আরে, দেখুন তো, কী ওটা?’ ঘাবড়ে যাওয়ায় বেসুরো শোনাল মেনদেরেসের কণ্ঠস্বর।
‘ব্লো-হোল,” জানাল কাফ্রি সরদার ।
‘সেটা কী জিনিস?’ জানতে চাইলেন মেসদেরেস ।
‘পানির নীচে পাহাড়-প্রাচীর আছে,’ ব্যাখ্যা করছে সরদার। ‘ওই প্রাচীরের গায়ে বিশাল একটা গর্ত আছে । গর্তটার উপরে ছাদ নেই, ফাঁকা, আকাশ দেখা যায়। খারাপ আবহাওয়ার সময় সাগরের পানি তীব্রবেগে গর্তে ঢুকে ওপর দিয়ে বেরিয়ে আসলে এ রকম দেখায় । রিফের ভেতর দিকটা আসলে ফাঁপা ৷’
অকুস্থলে পৌঁছাচ্ছে ওরা। কথাবার্তা থেমে গেল । রিফের যে অংশটা পানির উপর মাথা তুলে আছে, সেটা দুর্গের কালো প্রাচীরের মত দেখতে, এবড়োখেবড়ো, ত্রিশ ফুট উঁচু। পানির নীচের একটা প্রবাহ টেনে নিতে চাইল ওদেরকে, তবে সরদার হুইল ঘুরিয়ে পোর্ট-এর দিকে বাঁক নিচ্ছে বলে কোনও বিপদ ঘটল না। অবশ্য ফরচুনার কিল-এর গায়ে চাপড় মারার ফাঁপা এক ধরনের শব্দ হলো । একদিকে বিস্ফোরিত হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে বিপুল পানি, ফেনা হয়ে উঠে যাচ্ছে অনেক উপরে; বাকি সবদিকে সাদাটে কী সব দেখা যাচ্ছে। ওগুলো এবড়োখেবড়ো পাথর, পানির উপর মাথা তুলে আছে ।
থ্রটল বন্ধ । বড়সড়, সবুজ একটা পাথরের দিকে মন্থর বেগে ভেসে চলেছে ওরা। রিফের দক্ষিণ কোণ ঘুরছে ইয়ট। ওই দিকটায় বাতাস ও সাগরের অস্থিরতা অনেক কম হবে ।
পানির উপর মাথা তোলা পাথর বহুদূর পর্যন্ত ছড়িয়ে আছে, চাঁদের উজ্জ্বল আলোয় দেখা যাচ্ছে সব। যতদূর দৃষ্টি যায় কোথাও রাহি সামদানির সিপ্লেনের চিহ্নমাত্র নেই ।
সামনের জানালাটা খুলল সরদার । স্পটলাইটের সুইচ অন করল রানা, ধীরে ধীরে একদিক থেকে আরেকদিকে ঘোরাচ্ছে ওটা । পানির উপর দিয়ে রিফের দিকে এগোচ্ছে আলো ।
উত্তেজিত হয়ে চেঁচিয়ে উঠল খিজির হায়াত, হাত তুলে কী যেন দেখাচ্ছে । রুপালি ফিউজিলাজের একটা অংশে স্পটলাইটের আলো পড়েছে । হুইলটা রানার হাতে ছেড়ে দিয়ে নোঙর ফেলার জন্য ইয়টের পিছনদিকে ছুটল সরদার। ইঞ্জিন বন্ধ করে দিল রানা ।
মেনদেরেস ও হায়াত ডেকে বেরিয়ে গেছে। হুইলহাউস থেকে বেরিয়ে তাদের দিকে এগোচ্ছে রানা, হঠাৎ সিরিয়ান মিলিওনেয়ার আতঙ্কে গুঙিয়ে উঠলেন ।
দ্রুত হুইলহাউসের মাথায় উঠে এল রানা, মেনদেরেসের দৃষ্টি অনুসরণ করে স্পটলাইটটা ঘোরাল । দৃশ্যটা দেখামাত্র মোচড় দিয়ে উঠল ওর পেট। এক টুকরো মাংস নিয়ে কুকুররা যেমন মারামারি করে, চোখ ধাঁধানো সাদা আলোয় ঠিক তেমনি উন্মত্ত আচরণ করছে কয়েক ডজন হাঙর । একটা রাক্ষসের কুৎসিত মাথা পানি ছেড়ে উপরে উঠল, দুই দাঁতের মাঝখানে আটকানো রয়েছে মানুষের ছিঁড়ে আনা একটা হাত ।
লাফ দিয়ে ডেকে নেমে কেবিনের দিকে ছুটল রানা । একটু পরেই বেরিয়ে এল, হাতে একটা অটোমেটিক কারবাইন নিয়ে । রেইলের সামনে দাঁড়াল, হাঙরগুলোর চকচকে গা লক্ষ্য করে একের পর এক ফায়ার করছে ।
_আহত হাঙরগুলো মৃত্যুযন্ত্রণায় ছটফট শুরু করল, চারদিকে পানি ছিটাচ্ছে। আশপাশের সাগর লাল হয়ে উঠল। এদিক সেদিক ভেসে যাচ্ছে কাঁচা মাংসের টুকরো ও ফালি । এক মিনিট পর থামল রানা, কোনও লাভ হবে না জেনে অসহায় বোধ করছে । যা হওয়ার হয়ে গেছে ইতিমধ্যেই।
‘ হাতের খালি রাইফেলটা ডেকে ফেলে দিল রানা, এলোমেলো পা ফেলে নীচে নেমে গেল । অসহায় ভঙ্গিতে নিজেদের মধ্যে দৃষ্টি বিনিময় করল বাকি সবাই। এক সময় ঘুরল কাফ্রি সরদার, হুইলহাউসে ঢুকে নিভিয়ে দিল স্পটলাইট ।
সেলুনে রয়েছে রানা। একটা চেয়ারে বসে আছে, সামনে খালি একটা গ্লাস। বোতলটা ধরতে যাচ্ছে, এই সময় দরজা খুলে কেয়ার ফ্রি ক্লাবের মালিক জিমি মোরেল ভিতরে ঢুকলেন। তাড়াতাড়ি দরজা বন্ধ করে উল্টোদিকের চেয়ারটায় ধপ করে বসে পড়লেন তিনি । ক্লান্ত ও বিধ্বস্ত দেখাচ্ছে তাঁকে ।
‘কেমন দেখলেন ওদিকটা?’ জিজ্ঞেস করল রানা। ‘ওগুলো এখনও আছে?’
জবাব না দিয়ে দু’হাত তুলে মুখ ঢাকলেন মোরেল । ‘প্লেনটা রিফ থেকে নেমে গেছে,’ বিড়বিড় করে বললেন তিনি ।
গ্লাসে খানিকটা হুইস্কি ঢেলে তাঁর দিকে বাড়িয়ে ধরল রানা । ‘নিন ।’
মুখ থেকে হাত সরিয়ে মাথা নাড়লেন মোরেল । ‘তার চেয়ে একটা সিগারেট ধরাই।’ কাঁপা হাতে সিগারেট ধরিয়ে ঘন ঘন কয়েকটা টান দিলেন
খানিক পর মুখ খুলল রানা । ‘আপনি তখন বললেন – আমার সুরাইয়া।
‘দিলরুবা আমাকে নিজের স্যুইটে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। আপনাদের ব্যাপারটা সংক্ষেপে শোনালেন আমাকে । আপনি তাঁকে ভালবাসেন, তিনিও আপনাকে ভালবাসেন ইত্যাদি ।’
‘কোথায় যাচ্ছিল ও?’ জানতে চাইল রানা । ‘বৈরুতে?”
মাথা ঝাঁকালেন মোরেল। ‘হ্যাঁ। হিযবুল্লাহ-র তরফ থেকে একটা অনুরোধ পেয়েছেন তিনি। ইরান ও মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটা দেশে গান গেয়ে একটা ফান্ড তৈরি করে দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে তারা। ওই টাকা খরচ হবে ইজরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে আহত হিযবুল্লাহদের চিকিৎসায় ।
‘কিন্তু আমাকে কিছু না বলে চলে যাচ্ছিল কেন?’
‘দিলরুবার ধারণা, এভাবে বিদায় নেয়াটাই সবচেয়ে ভাল ।’ মাথা নাড়ল রানা। ‘এ আমি মেনে নিতে পারছি না। এর মধ্যে নিশ্চয়ই অন্য কোনও কারণ আছে । কী সেটা?”
রানার দিকে দীর্ঘ এক মুহূর্ত একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকার পর মোরেল বললেন, ‘হ্যাঁ, আপনি ঠিক ধরেছেন, এর মধ্যে অন্য একটা কারণ আছে। তবে সেটা আপনাকে জানাতে নিষেধ করেছেন তিনি ।’ রানা কিছু বলতে যাচ্ছে দেখে হাত তুলে বাধা দিলেন মোরেল । ‘যেহেতু দিলরুবা বেঁচে নেই, কথাটা আপনাকে বলা যেতে পারে । খুক করে কেশে গলাটা পরিষ্কার করে নিলেন তিনি । “তাঁর ব্লাড ক্যান্সার । আর মাত্র তিন মাস বাঁচতেন ।’
টেবিল থেকে বোতলটা তুলে নিয়ে হুইলহাউসে ঢুকল রানা। খিজির হায়াত ও কাফ্রি সরদারের সঙ্গে নিচু গলায় কথা বলছেন মেনদেরেস । তাদেরকে পাশ কাটিয়ে ডেকে বেরিয়ে এল ও, রেলিঙের সামনে দাঁড়িয়ে সাগরের দিকে তাকাল ।
কতক্ষণ দাঁড়িয়ে আছে বলতে পারবে না রানা, একসময় খেয়াল করল অন্ধকার ফিকে হতে শুরু করেছে, পানির উপর থেকে সরে যাচ্ছে কুণ্ডলী পাকানো কুয়াশা ।
দুঃস্বপ্নের ইতি ঘটেছে। সাগরে এখন শান্ত ঢেউ, রিফের গোড়ায় আছাড় খেয়ে সামান্যই ফেনা তুলছে ওগুলো । রো-হোল চুপ করে আছে । ফিরে গেছে হাঙরগুলো। সিপ্লেন ওয়ালরাসের ফিউযিলাটাকে আর কোথাও দেখা যাচ্ছে না ।
পোর্ট সাইডের ত্রিশ কি চল্লিশ গজ দূরে নোঙর ফেলেছে পুলিশ লঞ্চ । হুইলহাউস থেকে বেরিয়ে এসে হাত নাড়ল সার্জেন্ট এনভার নেকমেতিন । তারপর পানিতে ফেলা ডিঙ্গিতে চড়ে বৈঠা চালাতে শুরু করল, ফরচুনার দিকে আসছে ।
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!