বাঘের খাঁচা – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ কাজী আনোয়ার হোসেন
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ২৩২
বাঘের খাঁচা – বইটির এক ঝলকঃ
দীর্ঘকাল মালিকের নুন খেয়েছেন তিনি, কাজেই তাঁকে ছেড়ে কোথাও যাবেন না। জুসাইও না আসায় নাসার কর্মকর্তারা তেমন উদ্বিগ্ন হননি, কারণ ট্রিপলহেডার সম্পর্কে সব গোপন তথ্য তাঁর জানা ছিল না।
তাদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ান ট্রিপলহেডার-এর মূল ডিজাইনার ও বিজ্ঞানী সৈয়দ মনিরুল হক ।
জন্ম বাংলাদেশে হলেও, মনিরুল হক যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন আজ থেকে তিরিশ বছর আগে। জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটিতে লেখাপড়া করেছেন তিনি, লেখাপড়া শেষ করে লুকাস ডেভেনপোর্টের একটা কোম্পানিতে গবেষণার কাজে যোগ দেন। বছর পাঁচেক আগে লুকাস ডেভেনপোর্ট তাঁর পরামর্শেই গার্ডস করপরেশন প্রতিষ্ঠা করেন, সেই থেকে নাসা অধিগ্রহণ করার আগে পর্যন্ত ওই কোম্পানির প্রধান ডিজাইনার ও বিজ্ঞানী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। কিন্তু আত্মীকরণের সময় দেখা গেল, মনিরুল হককে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
নাসা খবর নিয়ে জানতে পারল, ভদ্রলোক লরা নামে এক শ্বেতাঙ্গিনীকে ভালবেসে বিয়ে করেছিলেন, কিন্তু বছর দশেক আগে ভদ্রমহিলা মারা গেছেন। ওয়াশিংটনে তাঁর একটা বাড়ি আছে, কিন্তু সেখানে কেউ থাকে না, তালা দেয়া অবস্থায় পড়ে আছে। মনিরুল হকের সন্তান মাত্র একটি, সে-ও শান্তি নিকেতনে লেখাপড়া করে, নাম সৈয়দা শিরি হক। আমেরিকার কোথাও খোঁজ না পেয়ে নাসা শান্তি নিকেতনে লোক পাঠিয়ে শিরির সঙ্গে যোগাযোগ করে। কিন্তু মেয়েটিও তার বাবার কোন সন্ধান দিতে পারেনি।
বাবা নিখোঁজ শুনে ঘাবড়ে গেলেও, কাণ্ডজ্ঞান হারায়নি শিরি; ওয়াশিংটনে ফিরে এসে পুলিস স্টেশনে একটা কেস ফাইল করে কিন্তু ট্রিপলহেডার যার হাতে থাকবে, যে-কোন টার্গেটকে ধ্বংস করার জন্যে একটা মিসাইলই তার জন্যে যথেষ্ট।
ট্রিপলহেডারের ভয়ঙ্কর আরেকটা দিক হলো, এটা প্লেন থেকে নিজ দেশের আকাশে ছেড়ে দেয়া যাবে। মিসাইলবাহী সসার নিজেই শত্রুরাষ্ট্রের আকাশে চলে যেতে পারবে। এক লাখ ফুট ওপরে থাকায় তার নিরাপত্তা সহজে বিঘ্নিত হবে না, তাছাড়া সসারটি নিজেকে মিসাইল হামলা থেকে রক্ষা করতেও সক্ষম হবে।
মূল মিসাইল, ট্রিপলহেডার, আকারে বেশি বড় নয়। সসার ছাড়াও, রকেট লঞ্চার-এর সাহায্যেও ওটা নিক্ষেপ করা সম্ভব হবে। বলাই বাহুল্য, এই গোপন প্রযুক্তি চুরি করতে পারলে যে- কোন দেশ হাতে মারাত্মক একটা অস্ত্র পেয়ে যাবে। বিশেষ করে যে-সব দেশের কাছে পারমাণবিক বোমা আছে, তারা এই ট্রিপলহেডার পাওয়ার জন্যে একদম পাগল হয়ে উঠবে।
ফর্মুলা, প্রযুক্তি আর ডিজাইন গোপন রাখার স্বার্থেই নাসা গার্ডস করপরেশন অধিগ্রহণ করেছিল। করপরেশনের মালিক লুকাস ডেভেনপোর্ট ব্যাপারটাকে সহজভাবে নেননি। নিরেট কোন তথ্য নেই, তবে সংশ্লিষ্ট মহলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে যে নাসাকে তিনি দেখে নেবেন বলে হুমকি দিয়েছিলেন।
নাসা শুধু গার্ডস করপরেশন অধিগ্রহণ করেনি, ট্রিপলহেডার প্রকল্পের সঙ্গে জড়িত সব ক’জন বিজ্ঞানী, ডিজাইনার, টেকনিকাল হ্যান্ড ও সিকিউরিটি অফিসারকেও আত্মীকরণ করে। তবে দুই ব্যক্তিকে নাসা চেয়েও পায়নি। প্রথমজন গার্ডস করপরেশনের ম্যানেজার সেল সি সা জুসাইও। জুসাইও আমেরিকার নাগরিক, তবে তাঁর জন্ম কোরিয়ায়। নাসা তাঁকে বেতন-ভাতা দ্বিগুণ করে দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু জুসাইও সবিনয়ে জানিয়ে দেন, সে, নিখোঁজ বাবাকে খুঁজে দেয়ার জন্যে এফবিআই-কেও অনুরোধ জানায়। মাসখানেক ধরে নিজেও এখানে-সেখানে খোঁজাখুঁজি করে, তারপর পরীক্ষা ঘনিয়ে আসায় কোলকাতায় ফিরে যায়। গত সাড়ে তিন বছরে তিন-চারবার আমেরিকায় এসেছে সে, প্রতিবার পুলিস ও এফবিআই-এর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, নিজেও সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ নিয়েছে, কিন্তু মনিরুল হককে আজ পর্যন্ত কোথাও পাওয়া যায়নি।
এখন নাসা বলছে, ট্রিপলহেডার এর ডিজাইনার মনিরুল হক যদি মারা গিয়ে থাকেন বা অন্য কোন রাষ্ট্র যদি তাঁকে বন্দী করে থাকে, তাহলে এই মিসাইল তৈরির সময়সীমা আরও দুই কি তিন বছর বাড়াতে হবে তাদের। কারণ, তাদের ধারণা, মনিরুল হক ট্রিপলহেডার-এর যে ডিজাইনটা তৈরি করেছিলেন, গার্ডস করপরেশন অধিগ্রহণ করার সময় নাসা সেটা পায়নি পেয়েছে আসলটার মত দেখতে মূল ডিজাইনের একটা নকল, যেটা নানান ভুল-ত্রুটিতে ভরা। এই ভুল-ত্রুটি সংশোধন করার জন্যেই আরও সময় দরকার তাদের।
প্রিন্ট-আউটগুলো পড়ার পর রানার মাথায় কয়েকটা প্রশ্ন জাগল। গার্ডস করপরেশন হাতছাড়া হবার পরপরই লুকাস ডেভেনপোর্ট স্বেচ্ছানির্বাসনে চলে গেছেন, এই ব্যাপারটার বিশেষ কোন তাৎপর্য আছে কিনা। ওটা ছিল হেভি ও সফিসটিকেটেড মিসাইল তৈরির কারখানা, সেই কারখানার ম্যানেজার সিল সি সা জুসাইও এখন একটা রিসর্ট সেন্টারের ম্যানেজার, ব্যাপারটা বেমানান নয়? লেটিস আইল্যান্ডের দ্বিতীয় অংশে, ব্ল্যাকহোলে, আসলে কি ঘটছে? নিষেধ অমান্য করে ওখানে পা রাখলে মানুষ আর ফেরে না কেন? এমন কি হতে পারে যে, ব্ল্যাকহোলের মাটির তলায় অবকাঠামো গড়ে তুলেছেন লুকাস ডেভেনপোর্ট, তারপর ডিজাইনার ও বিজ্ঞানী সৈয়দ মনিরুল হককে দায়িত্ব দিয়েছেন ট্রিপলহেডার তৈরি করার? নাসা ব্যর্থ হলেও, মনিরুল হক হয়তো সফল হয়েছেন। লুকাস ডেভেনপোর্ট ব্যবসায়ী মানুষ, তাঁর কাছে লাভটাই আসল কথা-মোটা টাকার বিনিময়ে গোপনে বিভিন্ন সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ও গ্রুপের কাছে ট্রিপলহেডার বিক্রি শুরু করেছেন। তা না হলে তিন-তিনজন উপমহাদেশীয় সন্ত্রাসীর লেটিস আইল্যান্ডে যাবার পিছনে কি কারণ থাকতে পারে?
তবে এই ব্যাখ্যায় রানা নিজেই সন্তুষ্ট হতে পারল না। নাসা ও এফবিআই কি গোটা ব্যাপারটা তলিয়ে দেখেনি? লুকাস ডেভেনপোর্টের অদ্ভুত আচরণ, লেটিস দ্বীপ কিনে রিসর্ট তৈরি করা, সেখানে গার্ডস করপরেশনের ম্যানেজারকে দায়িত্ব দেয়া, বিজ্ঞানী মনিরুল হকের রহস্যময় নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া, লেটিস দ্বীপের ব্ল্যাকহোল অংশে লোকজনকে যেতে মানা করা, প্রতিটি বিষয়ই তো সন্দেহজনক। সন্দেহ দূর করার জন্যে কিছুই কি করা হয়নি?
‘সম্ভাব্য সব কিছু করা হয়েছে,’ সন্ধ্যায় ডিনার খেতে বসে রবসন জানাল রানাকে। ‘লেটিস দ্বীপের দ্বিতীয় অংশে, ব্ল্যাকহোলে, কম করেও তিনবার হানা দিয়েছে এফবিআই। শেয়াল, সাপ আর বিষাক্ত মাকড়সা ছাড়া আর কিছু নেই ওখানে। দ্বিতীয়বার হানা দিয়ে এফবিআই অফিসাররা দেখতে পায় কয়েকটা বহুতল হোটেল বিল্ডিং আর গলফ কোর্স নির্মাণের কাজ চলছে পুরোদমে। শেষ খবর হলো, হোটেল তৈরির কাজ আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। লুকাস ইনের ম্যানেজার এর জন্যে দায়ী করেছে পুঁজির অভাবকে ।’
‘আন্ডারগ্রাউন্ডে কোন অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে কিনা…’
‘স্যাটেলাইট ফটোয় কিছুই ধরা পড়েনি,’ বলল রবসন। ‘এফবিআই দশজনের একটা বিশেষজ্ঞ টীম পাঠিয়েছিল, তারা ঘুরে এসে রিপোর্ট করেছে, ব্ল্যাকহোলের মাটির তলায় নামার জন্যে একাধিক সিঁড়ি আছে, আন্ডারগ্রাউন্ড টানেলও আছে অনেকগুলো, কিন্তু কোন কারখানা নেই। ‘
*বিজ্ঞানী মনিরুল হক আজও নিখোঁজ, এ-ব্যাপারে তোমার কি ধারণা?’
‘তিনি স্বেচ্ছায় নিখোঁজ, এ-কথা আমি বিশ্বাস করি না। আমার ধারণা তাঁকে কিডন্যাপ করা হয়েছে, কিডন্যাপ করে রাশিয়া কিংবা চীনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’
‘তোমার এ বিশ্বাসের কারণ?’
‘মনিরুল হকই বলো, আর লুকাস ডেভেনপোর্টই বলো, নাসা এবং এফবিআই বিশ্বাস করতে রাজি নয় যে ওঁরা মার্কিন সরকারের সঙ্গে বেঈমানী করবেন। তাঁর এবং ডেভেনপোর্টের দেশপ্রেম পরীক্ষিত, রানা। যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষতি হতে পারে এমন কোন কাজ তাঁরা করবেন না ।’
“ইন্টারনেটে তুমি আমাকে জানিয়েছ, লুকাস ডেভেনপোর্ট হুমকি দিয়ে বলেছিলেন, নাসাকে তিনি দেখে নেবেন।’
‘ওটা ছিল তাঁর রাগের কথা,’ বলল রবসন। ‘যুগান্তকারী একটা ব্রেকথ্র ঘটাবার পর কৃতিত্বটা যদি কেউ হাইজ্যাক করে, তোমার রাগ হবে না?’ হঠাৎ ভুরু কোঁচকাল সে। ‘কি ব্যাপার বলো তো? বিষয়টা নিয়ে তুমি যেন একটু বেশি মাথা ঘামাচ্ছ? তোমার এজেন্সি গোপন কোন খবর পেয়েছে নাকি?’
হেসে উঠে রানা মাথা নাড়ল। ‘দুঃখিত, তিন মাথা দৈত্য নিয়ে আর কোন কথা নয়।’ মনের প্রশ্ন মনেই থাকল -মনিরুল হক বা লুকাস ডেভেনপোর্ট বেঈমানী করবেন না, ভাল কথা; লেটিস আইল্যান্ডে এফবিআই সন্দেহজনক কিছু দেখতে পায়নি, তাও
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!