অন্ধ শিকারী – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ কাজী আনোয়ার হোসেন
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৩৮৪
অন্ধ শিকারী – বইটির এক ঝলকঃ
দলিল হাইলি ক্লাসিফায়েড। সাংঘাতিক গুরুত্ববহ, অবশ্যই ন্যাটোর প্রতিপক্ষের জন্যে ।
‘ঠিক বলেছ,’ মাথা দোলালেন লংফেলো। ল্যাবে পাঠিয়ে দেখা যাক,
কি ফল হয়।’
দলিলগুলো যে-ই পাঠিয়ে থাকুক এখানে, সে কোথায় পেল? ভাবল মাসুদ রানা । নিশ্চয়ই পথেঘাটে কুড়িয়ে নয়, তাহলে?
ওগুলো ল্যাবে পাঠানো হলো । এক ঘণ্টা ধরে সবকটা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করে দেখল চীফ টেকনিশিয়ান, তারপর হতাশ হয়ে মাথা ঝাঁকাল উপস্থিত লংফেলো ও মাসুদ রানার উদ্দেশে। ‘দুঃখিত, স্যার। আপনাদের দুজনের ছাড়া আর কারও প্রিন্ট নেই। তবে ছিল, কোন সন্দেহ নেই।’ ‘মুছে ফেলা হয়েছে?’ প্রশ্ন করল মাসুদ রানা ।
‘রাইট, স্যার। কাপড় দিয়ে ঘষে ঘষে মুছে ফেলা হয়েছে। ফাইবারের বসে যাওয়া দাগ বোঝা যায় পরিষ্কার।’
মস্কোর পশ্চিমে, উসপেনস্কো ব্রিজ পেরিয়ে কিছুদূর এগোলেই মস্কভা নদীর তীর ঘেঁষে চোখে পড়বে দাচা কমপ্লেক্স। কয়েক হাজার একর জুড়ে সাজানো-গোছানো, নয়নাভিরাম অসংখ্য কৃত্রিম গ্রাম। একটার পর একটা, গুণে শেষ করা যায় না। প্রতিটি দাচা বার্চ আর পাইনঘেরা। কর্মকর্তাদের শ্রেণী অনুযায়ী নির্ধারণ করা হয়েছে ওগুলোর আকার ।
নামকরা শিল্পী, বুদ্ধিজীবী এবং সামরিক বাহিনীর বড় বড় অফিসারদের দাচা পেরেদেলকিনোয়। এগুলোর আকার এবং গঠনশৈলি মোটামুটি। পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং পলিটব্যুরোর সদস্যদের নিচের কর্মকর্তাদের দাচা ঝুকভকায়। এগুলো মোটামুটির থেকে যথেষ্ট বড় আর উন্নত। এর পরেরগুলো উসভোয়। সুপ্রিম সোভিয়েতের সদস্যদের দাচা । এগুলোর আকার, সৌন্দর্য আর জৌলুসের ছড়াছড়ি এক কথায় শ্বাসরুদ্ধকর । সবশেষে রয়েছে প্রজাতন্ত্রের প্রধানের দাচা। ওটাও উসভোতেই ।
রাশিয়ায় দাচা বলা হয় গ্রামের বাড়িকে। সেই দাচার সঙ্গে এই দাচার কোন মিলই নেই । শ’ শ’ আকাশছোঁয়া বার্চ আর পাইনঘেরা প্রতিটি দাচার পাহারায় রয়েছে সাদা পোশাকের নাইনথ্ ডিরেক্টরেট বা ক্রেমলিন গার্ড বাহিনী। ভ্লাস্তিদের নিরাপত্তা রক্ষায় সদা প্রস্তুত ।
এখানেই ইনটেনসিভ সেশনে বসছে রোজ অ্যালবিয়ন কমিটি। দিন- রাত মাথা ঘামাচ্ছেন তাঁরা প্রেসিডেন্টের অর্পিত দায়িত্ব সুচারুভাবে সম্পন্ন করার জন্যে ।
চিন্তায় পড়ে গেছে রানা মারভিন লংফেলোর সমস্যাটা নিয়ে। ও যদি ব্যাপারটা না জানত, কোন কথা ছিল না। নিশ্চিন্তে রওনা হয়ে যেতে পারত ঢাকার পথে। কিন্তু জানতে গিয়েই বিপদ বাধিয়ে ফেলেছে ও। জেনে শুনে মুখ বুজে থাকা যায় না, অন্তত বিএসএস না হোক, লংফেলোর কথা ভেবে হলেও একটা কিছু করা উচিত । এই ‘একটা কিছু যে কি, তা নিয়েই চিন্তায় পড়ে গেছে মাসুদ রানা ।
রানা এজেন্সির ফ্রি ইনভেস্টিগেশন লাইসেন্স পাওয়ার ব্যাপারে প্রচুর সাহায্য করেছেন ওকে বৃদ্ধ। এই লাইনের সবাই যখন রানার বিপক্ষে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল, তখন লংফেলোই নিয়েছিলেন ওর পক্ষ। সতীর্থদের ভ্রূকুটি, অনুযোগ কিছুই গায়ে মাখেননি। সেই মানুষটি এতবড় বিপদে পড়েছেন জেনেও কি করে যায় রানা? বিবেক সায় দেয়নি। তাই যাত্রা কয়েকদিন পিছিয়ে দিয়েছে ও। যদিও লংফেলো মুখে বলেননি, কিন্তু ওঁর চোখ দেখেই রানা বুঝে নিয়েছে কি চাইছেন তিনি মনে মনে।.আশা করে আছেন, ডকুমেন্টগুলো চুরি রহস্য উদ্ঘাটনের দায়িত্ব ও নিক। কিন্তু বলতে পারছেন না। কেন পারছেন না, বোঝে মাসুদ রানা। বললে ও অন্য কিছু ভেবে বসতে পারে। ভাবতে পারে, ওকে সাহায্য করে তার প্রতিদান চাইছেন লংফেলো । তাই ইচ্ছে থাকলেও মুখ ফুটে বলতে পারেননি। ওদিকে গিলটি মিয়াও পড়েছে সমস্যায়। সবকিছু ঠিকঠাক, অথচ শেষ সময় রানা মন পাল্টাল কেন ভেবে পাচ্ছে না। একবারই বাইরে গিয়েছিল আজ রানা । কোথায়, জানে গিলটি মিয়া। ওটাই হয়েছে সমস্যা । বারবার প্রেসটনের চুরি করা ব্রিফকেসের কাগজগুলোর কথা মনে আসছে ।
কাগজগুলো গিলটি মিয়া নিজ হাতে বিএসএস-এর ঠিকানায় পোস্ট করে দিয়েছিল। তখন আসলে এতটা ভেবে দেখেনি সে। মাথায় ছিল ওগুলো সঠিক স্থানে পৌঁছে দেয়ার চিন্তা। এখন তার মনে হচ্ছে, ওটাই মাসুদ রানার যাত্রাবিরতির কারণ। অনেকক্ষণ থেকেই রানার আশেপাশে ঘুর ঘুর করছে সে কারণে-অকারণে। ব্যাপারটা খুলে জানাতে চায় ওকে। কিন্তু সাহসে কুলিয়ে উঠতে পারছে না। তাছাড়া রানাও চিন্তিত। হঠাৎ করেই সুযোগটা পাওয়া গেল। নড়েচড়ে বসল মাসুদ রানা। সিগারেট ধরাল। তুমি কিছু বলবে, গিলটি মিয়া?’ ঘোরাঘুরি করছে লোকটা, এড়ায়নি রানার ।
মাথা চুলকাল গিলটি মিয়া। ‘স্যার, মানে একটা কতা…’
“কি কতা তাড়াতাড়ি বল । আমি ব্যস্ত ।’
নজর
“ভেবেচেন আমি তা বুজিনি? ওসব আমি, স্যার, খুব…।’ রানাকে ভুরু কোঁচকাতে দেখে প্যাচাল থামাল গিলটি মিয়া। ‘মানে ক্যালকাটার আমার এক সাকরেদ…।’এবারও থেমে পড়তে বাধ্য হলো সে টেলিফোন বেজে উঠতে ‘। মাসুদ রানার টেবিলের লাল ফোনটা । থাবা চালাল রানা রিসিভার লক্ষ্য করে, অন্য হাতে গিলটি মিয়াকে অপেক্ষা করতে বলল । “হ্যালো!’ ‘রানা?’ জলদগম্ভীর চিরপরিচিত গলাটা চিনতে পারা মাত্র বুকের রক্ত ছলকে উঠল ওর। ঢাকা থেকে বিসিআই প্রধান মেজর জেনারেল রাহাত খান (অবসরপ্রাপ্ত) ।
‘জ্বি, স্যার,’ সিধে হয়ে বসল ও। চট করে হাতঘড়ির ওপর নজর বুলিয়ে নিল। বিকেল চারটা। তারমানে ঢাকায় রাত দশটা । বাসা থেকে করেছে নিশ্চয়ই বুড়ো । কি এমন জরুরি…।
‘কেমন আছো?’
“জ্বি, ভাল আছি । আপনি কেমন আছেন, স্যার?’
“হ্যাঁ, ভাল। তোমার ফ্রি ইনভেস্টিগেশনের লাইসেন্স পাওয়ার খবর শুনলাম। কংগ্রাচুলেশনস ।
‘ধন্যবাদ, স্যার। জিভ কাটল মাসুদ রানা । খবরটা ওর নিজেরই দেয়া উচিত ছিল। কিন্তু নানান ঝামেলায় দিতে পারেনি।
“তোমার ফ্লাইট ক’টায়। রওনা হচ্ছো আজ?’
‘না, স্যার। একটু ঝামেলায় পড়ে গিয়েছি, স্যার। বিএসএস-এ হঠাৎ করে একটা সমস্যা দেখা দিয়েছে। কিছু ন্যাটো ডকুমেন্ট… ‘
‘আমি শুনেছি, রানা। কথা হয়েছে লংফেলোর সঙ্গে। তা ইয়ে, ব্যাপারটা নিয়ে ভেবেছ কিছু?’
‘ভাবছি এখনও, স্যার। কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। এই কারণেই যাওয়া পিছিয়ে দিয়েছি।’
‘ভালই করেছ। আমার মনে হয় এ সময় লংফেলোকে খানিকটা সাহায্য করা গেলে মন্দ হত না । যথেষ্ট করেছে ও তোমার জন্যে ।’ ‘আমিও তাই ভাবছি, স্যার।’
‘গুড।’
*এ ব্যাপারে স্যার লংফেলো আপনাকে কোন অনুরোধ করেছেন, স্যার?’
‘না না। কেবল ঘটনাটা জানিয়েছে। তোমাকে সাহায্য করার জন্যে ওকে অভিনন্দন জানাতে গিয়েছিলাম। তখন ঘটনাটা বলল লংফেলো । ও হয়তো লজ্জায় পড়ে গেছে। বলতে পারেনি আমি অন্য কোন কিছু মনে করে বসতে পারি ভেবে।’
কাজটা
‘আমারও সেরকমই ধারণা, স্যার। অন্য সময় হলে ভদ্রলোক কাজটা করে দেয়ার অনুরোধ করতে দ্বিধা করতেন না। আপনি কি, স্যার, নিতে বলছেন?’
“না, রানা । নেয়া না নেয়া তোমার ইচ্ছে। তবে আমার মনে হয় নিলে মন্দ হত না । অনেক সাহায্য করেছে তোমাকে লংফেলো।’
ভড়ং গেল না বুড়োর, ভাবল মাসুদ রানা । রাহাত খান মনে মনে ঠিকই চাইছেন কাজটা ও নিক। অফিশিয়াল কাজের বাইরে কাউকে কিছু করতে সরাসরি কখনোই বলেন না কট্টর বুড়ো। বলেন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে, যাতে কেউ না ভাবে তার ওপর অতিরিক্ত দায়িত্ব চাপিয়ে দিতে চাইছেন তিনি। কৌশলটা মন্দ নয়। ‘কাজটা তাহলে নিচ্ছি আমি, স্যার।’ সোজাসুজি বললেই হয়, কাজটা নিয়ে নাও, তা নয়। গজ গজ করল ও মনে মনে । ‘ভালই হয় তাহলে, রানা। লংফেলো খুব খুশি হবে।’
সব স্যার লংফেলোর ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে, নিজের যেন কোন অনুভূতি নেই। ‘ঠিক আছে, স্যার। নিলাম আমি কাজটা।’
‘ভেরি গুড। তো, রাখলাম তাহলে।’
‘জ্বি। স্লামালেকুম ।’
রিসিভার রেখে কিছুক্ষণ ভাবল রানা। তারপর গিলটি মিয়ার দিকে তাকাল। ‘কি যেন বলছিলে তখন তুমি?’
আমার এক সাকরেদের কতা, স্যার।’
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!