আমি সোহানা – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

আমি সোহানা – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ কাজী আনোয়ার হোসেন

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ২৪১

আমি সোহানা – বইটির এক ঝলকঃ

“তোমার সঙ্গে ও কি অনেকক্ষণ থাকবে?”
‘সেটা নির্ভর করে চাচা পেনস-এর ওপর।’
এবার মারডিন লংফেলোকে আড়ষ্ট হয়ে উঠতে দেখল আশরাফ, ঝট করে সোহানার দিকে তাকালেন তিনি। তাঁর চেহারা থেকে হাসিখুশি ভাবটুকু মুহূর্তের মধ্যে অদৃশ্য হয়েছে।
….আমাদের দু’জনেরই এখানে দম বন্ধ হওয়ার অবস্থা,’ বলছে রানা । তবে তারপরও আমি ব্য
‘কি নিয়ে ব্যস্ত তুমি?’ জিজ্ঞেস করল সোহানা। তার চেহারায় ব্যগ্র একটা ভাব, আশরাফের মনে হলো কোন সূত্র পাবার আশায় কান খাড়া করে আছে সে ।
‘পুরানো আরবী নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছি, বলল রানা। “বিশ্বাস করো, দ্রুত শিখছি আমি তোমার সঙ্গে দেখা হবার আগে অনেক দূর এগিয়ে যাব বলে আশা রাখি। সোহানার পেশীতে ঢিল পড়ল। বেশ ভাল। আমার মনে পড়ছে, সাদ-এর লম্বা কবিতাটা মুখস্থ করতে পারছিলে না।
“এখন জিজ্ঞেস করে দেখো না, রানার গলায় গর্ব। ‘শোনো তাহলে… আরবী কবিতাটা আবৃত্তি করল রানা। মাঝে মধ্যে একটু ইন্তত করল ও, তবে লে না । ওর কবিতার একটা বর্ণও বুঝল না আশরাফ। মারভিন লংফেলোও আরবী জানেন ।
ড্যাশবোর্ড থেকে প্যাড আর পেন্সিল নিয়ে তৈরি হলো সোহানা। প্রায় দু’মিনিট আবৃত্তি করল রানা। প্যাডে সোহানা শুধু একটা সংখ্যা লিখল। স্থির হয়ে বসে আছে আশরাফ, কথা বলছে না। রানা ও সোহানা নিজেদের পেশাগত বিষয় নিয়ে আলাপ করছে। শেষ পর্যন্ত ব্যাপারটা কি আকৃতি পাবে জানা নেই তার, তবু তার তলপেটের ভেতরটা মোচড় খাচ্ছে।
‘কি, কেমন লাগল?’ জানতে চাইল রানা।
মন্ত্র নয়। উচ্চারণ আগের চেয়ে ভাল হয়েছে। তবে দ্বিতীয় স্তবকে ভুল আছে একটু । ওখানটায় হবে … আরবীতে কিছু বলল সোহানা, তারপর জিজ্ঞেস করল, ‘বুঝতে পারছ?”
“হ্যাঁ, ধন্যবাদ।”
‘শোনো, ট্রাফিক বাড়ছে, কাজেই এখান থেকে সরে যেতে হচ্ছে আমাদের। পরে কথা বলব আবার। দিস ইজ জিগ্রিকিউআরও মোবাইল, অফ অ্যান্ড ক্লিয়ার উইথ এইটি-এইট’
রানার কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক উত্তর পাবার জন্যে অপেক্ষা করল সোহানা, তারপর রেডিওর সুইচ অফ করে দিল।
‘এইটি এইট কি?’ জিজ্ঞেস করল আশরাফ।
স্ট্যান্ডার্ড কোড-লাভ অ্যান্ড কিস-এর। মারভিন লংফেলোর দিকে তাকিয়ে আছে সোহানা।
‘পেনিকিদার, ক্লান্তকণ্ঠে বললেন বিএসএস চী। তাঁর ব্যক্তিগত বন্ধু ব্যারনেস ডর্কিন-এর বিশ লাখ ডলারের হীরে চুরি করেছিল পেনিফিসার বছর আগে, কেসটা তিনি রানা ও সোহানাকে দিয়েছিলেন। সে-যাত্রা হীরে উদ্ধার হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু পেনিফিদার ধরা পড়েনি। তারপর থেকে একের পর এক অনেকগুলো অপরাধ ঘটিয়েছে পেনিফিদার, ব্রিটিশ পুলিস বা ইন্টারপোল তার টিকিটিও ছুঁতে পারেনি। পেনিফিদারের মত ক্রিমিন্যালদের সামলাবার কথা পুলিসের, কিন্তু তার বার্থ হওয়ায় উদ্বেগের মধ্যে আছেন তিনি।
‘হ্যাঁ’ বলল সোহানা। আবার বাড়াবাড়ি শুরু করেছে সে।
ঠিক কি ঘটেছে বলুন তো?”
“অসুবিধের মধ্যে আছে রানা। সঙ্গে সঙ্গে কিউটিএইচ দেয়নি, তখনই আমি বুঝে ফেলি। তারপর পূর্ণিমার কথা বলল। পূর্ণিমা হলো বিপদ-এর কোড।’ সীটের তলা থেকে ওয়ার্ল্ড এয়ারওয়েজ গাইড বের করে পাতা ওল্টাতে শুরু করল সোহানা।
“মেসেজ যখন পাঠাতে পেরেছেন, খুব একটা অসুবিধের মধ্যে নিশ্চয়ই নেই?” প্রশ্নের সুরে বললেন মারভিন লংফেলো।
“খুব নয়, জটিল। আরবী কোডে বললেও, অত্যন্ত সতর্ক ছিল রানা। ওর সঙ্গে অন্ধ একটা মেয়ে রয়েছে। পেনিফিদারের দুজন শিষ্য তার বোনকে খুন করেছে, চেষ্টা করছে মেয়েটাকে ছিনিয়ে নেয়ার। কারণটা জানা নেই রানার। পানামা সিটি থেকে এক ঘণ্টার পথ, একটা কটেজে লুকিয়ে আছে ওরা।
পঞ্জীর হলেন মারভিন লংফেলো। ‘পেনিফিসার হাল ছাড়ার লোক নয়।
‘রানা তা জানে বলেই পা ঢাকা দিয়ে আছে। পানামায় আরও ক’টা দিন থাকার ইচ্ছে ওর, বলছে মেয়েটাকে বের করে আনার ব্যাপারে কারও সাহায্য পেলে ভাল হত এমন কেউ হলে ভাল হয় যার কাভার অটুট আছে।’
‘মি. রানার জায়গায় আমি হলেও এরকম সতর্ক হতাম বিশেষ করে পানামায়। ওঁর কাভার কি না হয়ে গেছে?
ঠিক জানে না। বলছে, সম্ভবত।’
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে মারভিন লংফেলো বললেন, ‘দেরি হলে ড. জিমসনকে আমরা হয়তো পাব না।’
আধ ঘণ্টা দেরি এমন কিছু নয়। হিথরো থেকে কাল সাড়ে আঠারো ঘণ্টায় যদি নিউ ইয়র্কের প্লেন ধরি, ওখান থেকে ডিসি এইট এ চড়ে শনিবার সাড়ে উনিশ ঘণ্টায় পৌছব পানামা সিটিতে। মোটা বইটা বন্ধ করে স্টার্ট দিল সোহানা। অন্তত ড. জিমসনের কি বলার আছে শোনার সুযোগ পাব আলু আর কাউকে যদি না পাওয়া যায়, পরে এক সময় যাবার প্রস্তাব দিতে পারি আমি।’
মেয়েটাকে নিয়ে আপনি সরাসরি ইংল্যান্ডে চলে আসবেন?’ জানতে চাইলেন মারভিন লংফেলো।
“তাই আসব বলে ভাবছি। এখানে নিরাপদ থাকবে সে।
“ভারপর?”
“তারপর মানে?” পাল্টা প্রশ্ন করল সোহানা।
“আমি আমার অন্যতম উপদেষ্টার কাছ থেকে পরামর্শ চাইছি-পেনিফিসারের কি হবে?
“আপনার উপদেষ্টা এই মুহূর্তে ছুটিতে আছেন।’ ‘আনঅফিশিয়ালি পরামর্শ চাওয়ার রীতি কি উঠে গেছে?”
হেসে ফেলল সোহানা। ‘পেনিফিসারের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত যদি নিতেই হয়. নেবেন আপনার সিনিয়র উপদেষ্টা, মাসুদ রানা। তা-ও সম্ভবত মেয়েটাকে নিরাপদ জায়গায় আনার পর।
“শেষ পর্যন্ত আমরা দেখছি একটা অ্যাসাইনমেন্ট পাব বলে মনে হচ্ছে, ‘ মন্ত
করল আশরাফ।
তুমি আবার এরমধ্যে আসছ কিভাবে?’
‘আমরা মানে তুমি বা তোমরা। কয়েক সেকেন্ড চুপ করে থাকল আশরাফ। সামান্য অপমান বোধ করছে সে। সোহানা তাকে অকস্মাৎ দল থেকে বের করে- দিয়েছে। দলে থাকার জন্যে জেদ ধরবে, সে সাহস নেই পানামা থেকে মেয়েটাকে আনার সময় হয়তো গোলাগুলি হবে। কল্পনার চোখে মারামারি, খুনোখুনির দৃশ্য দেখল সে। থেমে গেল হাতের তালু। তবু মরিয়া হয়ে নিজের আত্মমর্যাদা রক্ষার চেষ্টায় বলল সে, “কিন্তু ভেবে দেখোঁ, সোহানা, পানামায় এমন একজনকে দরকার হবে তোমার, যার পরিচয় ফাঁস হয়নি। কি ঠিক বলিনি?” মুখে যা-ই বলুক, মনে মনে নিজেকে গালাগাল দিচ্ছে আশরাফ ছুটি কাটাতে এসে পৈত্রিক প্রাণটা হারাতে চাও নাকি, হাঁদারাম?
নিজের সীটে ঘুরে বসলেন মারভিন লংফেলো, একটা ভুরু কপালে তুলে মৃদু কণ্ঠে বললেন, ‘ওখানে কিন্তু কোন সেফটি বেল্ট নেই।’
‘ভেবেছেন আমি তা জানি না? তাহলে শুনুন, জীতুর ডিম আমি একটা! কিন্তু সোহানার যদি এমন একজনকে দরকার হয়, যে মেয়েটাকে ছোঁ দিয়ে নিয়ে খিচে দৌড়াবে, প্রতিপক্ষের দৃষ্টি অন্য দিকে সরাবার জন্যে নিজে যাবে আরেক দিকে – আমার চেয়ে আদর্শ প্রার্থী আর পাবে ও?’
মারভিন লংফেলোর দিকে তাকাল সোহানা। ‘ওর কথায় যুক্তি আছে। আমাকে স্বীকার করতেই হবে, পালাবার ব্যাপারে আশরাফ ভারি ওস্তাদ।
মনে করিয়ে দেয়ার দরকার নেই,’ গভীর সুরে বলল আশরাফ। এমনিতেই আজ রাতে আমার ঘুম আসবে না। ভাল কথা, পানামায় যাবার ভিসা নেই আমার। জাদি, তোমানের পরিচিত নিশ্চয়ই এমন কেউ আছে—।
পানামায় যেতে ভিসা লাগে না। তবু ড্যানিয়েল কারভিনকে ফোন করতে হবে, মেয়েটার জন্যে খালি একটা ফৰ্ম চাইৰ ‘
পাঁচ মিনিট পর বেইজওয়াটার রোড ছাড়িয়ে এল মার্সিডিজ, বাঁক নিয়ে একটা বাড়ির বাইরে থামল। হাত ধরে সোহানাকে গাড়ি থেকে নামতে সাহায্য করছে আশরাফ, ছোট ও সরু গলিটার শেষ মাথায়, সাদা দরজার সামনে একটা মূর্তিকে দেখতে পেল সে।
মুহূর্তের জন্যে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারল না আশরাফ । ভাল করে দেখার আগেই তার গায়ের রোম দাঁড়িয়ে গেল। অসম্ভব, একটা মানুষের শরীর এত বড় হয় কি করে! শুধু বিশাল তা নয়, আকৃতিটাও বেচপ। আশরাফের মনে হলো, সে বোধহয় কোন ছায়া দেখছে। তারপর লোকটা নড়ে উঠল, হাত উঁচু করে দরজার গায়ে বসানো কলিংবেলের বোতামে চাপ দিল। চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল আশরাফের, ভয়ে সিঁটকে গিয়ে উপলব্ধি করল ব্যাপারটা বাস্তব, চোখ বা আলোছায়ার কোন চাকুরি নয়।
লোকটা সম্ভবত সাড়ে ছ’ফুট লম্বা। তার কাঁধ দুটো প্রায় দরজার মতই চওড়া ও চৌকো, সেটার ওপর বসে আছে বিশাল গোল একটা মাথা। দেখে মনে হলো ঘাড় বলে কিছু নেই। প্রকার ধড় অসম্ভব লম্বা, ধড়ের নিচ থেকে বেরিয়ে আছে খাটো আকৃতির একজোড়া পা, এতই খাটো যে কল্পনা করা কঠিন হাঁটু বলে কিছু আছে কিনা। অথচ, ধড়টা এত লম্বা হওয়া সত্ত্বেও, হাত দুটো প্রায় হাঁটু ছুঁয়ে
বিতৃষ্ণার একটা ভাব জাগল আশরাফের মনে, যদিও পরমুহূর্তে মনে মনে লজ্জা পেল।
‘পথ দেখাই,’ শান্তভাবে বললেন মারভিন লংফেলো, সরু গলি ধরে পা বাড়ালেন। সোহানা তার হাত ধরছে না দেখে আশরাফই তার হাত ধরে মারভিন লংফেলোর পিছু নিল। দরজার সামনে দাঁড়ানো লোকটা ঘুরল ওদের দিকে। গাঢ় রঙের একটা স্যুট পরে আছে সে, আশরাফের মনে হলো ওটা দিয়ে সোহানার মার্সিডিজটাকে ঢেকে দেয়া সম্ভব। কোটটা অবশ্য কোথাও খুলে নেই। মাধার প্রচুর চুল, রঙটা কালো বলেই মনে হলো। স্নান চাঁদের মত লাগল মুখটাকে, সেটাও এত বড় যে মনে হয় কাঁধের ওপর দুটো মুখ জোড়া লাগানো হয়েছে। চোখ, নাক, ঠোঁট ও কান, একটার সঙ্গে আরেকটার আকৃতিগত কোন মিল নেই।
সমীহের সঙ্গে মাথাটা একটু কাত করল লোকটা, মারভিন লংফেলোকে বলল, “আপনি কি ড. জিমসন, স্যার?” অত্যন্ত মার্জিত কন্ঠস্বর, অভিজাত বংশের লোক না হলে উচ্চারণ ভঙ্গির মধ্যে এত বিশুদ্ধ ভাব আমা প্রায় অসম্ভব। আওয়াজটাও ভরাট। তার আকৃতি যে রোমহর্ষক একটা ব্যাপার, প্রায় বিস্তৃতকিমাকার, এ- ব্যাপারে সচেতন বলে মনে হলো না, অপ্রতিভ তো নয়ই ।
‘দুঃখিত, না,’ বললেন মারভিন লংফেলো। ড. জিমসনের সঙ্গে দেখা করতে এসেছি আমি।’
আমিও তাই এসেছি,’ বলল লোকটা। উনি বাড়িতে আছেন বলে মনে হচ্ছে না। চোখ ঘুরিয়ে সোহানা, তারপর আশরাফের দিকে তাকাল সে, চেহারায় বা চোখে কোন আগ্রহ ফুটল না। ‘চারবার কলিংবেল বাজালাম। ভেতরে কোন আলোও দেখছি না।
“বিশ মিনিট আগে তো ছিলেন, আমি যখন ফোন করি,’ বললেন মারভিন লংফেলো, ভুরু জোড়া এক হলো। তাছাড়া, উনি জানেন আমরা আসছি।
আমি যে আসছি, তা-ও তো উনি জানেন, লোকটার গলার অস্বস্তির রেশ। একা থাকেন, হয়তো চিনি বা চা-পাতা কেনার জন্যে বেরিয়েছেন, এখুনি ফিরে আসবেন,’ বলে, জোর করে হাসতে চেষ্টা করল আশরাফ। প্রকাণ্ড লোকটা তার দিকে তাকাল। হঠাৎ নিঃশব্দে হাসল সে। আপনি হয়তো ঠিকই বলছেন। তবে আমার আর অপেক্ষা করা চলে না। আপনারা যদি ক্ষমা করেন ।
বিশাল দেহটাকে যেতে দেয়ার জন্যে দু’পাশে সরে আসতে হলো ওদেরকে। মারভিন লংফেলো জানতে চাইলেন, ‘কে এসেছিল বলব তাকে?’ কেগান। ব্রিটিশ মিউজিয়ামের ডান কেগান। দয়া করে তাঁকে যদি জানান, কাল আমি ফোন করব, আমার খুব উপকার হয়। গুড নাইট।’ সূরু পথটা জুড়ে এগোল সে, পা দুটো অসম্ভব ছোট হওয়া সত্ত্বেও বিস্ময়কর দ্রুতগতিতে বয়ে নিয়ে চলেছে বিশাল ধড়টাকে। গেট পেরিয়ে বড় রাস্তায় উঠল সে, বাঁক নিয়ে অদৃশ্য
হয়ে গেল।
আপনার ড. জিমসনের বন্ধুদের বামুন বলা যাবে না,’ বলল আশরাফ, দরজার দিকে এগোল। ‘এখন আমি যে কাজটা করতে যাচ্ছি, সাধারণত সেটাকে অন্যায় বলে আখ্যায়িত করা হয় কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে আমি এটাকে অন্যায় বলে মনে করছি না।’ ঝুঁকল সে, লেটার ঢাকনি সরিয়ে ভেতরে উকি দিল । ‘বাহ! এমন কেউ আছে নাকি যে লেটার বক্সের ভেতরকার অপূর্ব দৃশ্য দেখার জন্যে লালায়িত?’ সোজা হলো সে, দেখল গলির শেষ মাথায় পৌঁছে উকি দিয়ে ডান কেগানকে দেখার চেষ্টা করছে সোহানা।
ফিরে এসে মারডিন লংফেলোকে বলল সে, ‘আপনি ওকে চেনেন না, মানে এই চেহারার কোন বর্ণনা কখনও পাননি?”
‘না।’ সোহানার দিকে কঠিন দৃষ্টিতে তাকালেন বিএস এস চীফ। ‘কেন জানতে চাইছেন?”
মৃদু কাঁধ ঝাঁকাল সোহানা। ঠিক বলতে পারব না। বেলটা বাজাও, আশরাফ।
“ব্রিটিশ মিউজিয়ামের একটা আইটেম চারবার বাজিয়েছে।
‘বলল বটে। তর্ক কোরো না, চাপ দাও বোতামে
বোতামে চাপ নিল আশরাফ, দরজার গায়ে কান ঠেকাতে অনেক দূর থেকে বেল বাজার অস্পষ্ট আওয়াজ পেল সে। ভদ্রলোক সম্ভবত বাড়ির পিছনদিকে বাস করেন, ‘ বলল সে। ‘সেজন্যেই কোন আলো দেখা যাচ্ছে না।
হ্যাঁ, ঠিক,’ জানালেন মারভিন লংফেলো। ‘বেলটা কি বাজছে?”
‘বাজছে।’
‘এক মিনিট, আশরাফ, আশরাফকে ছাড়িয়ে সামনে বাড়ল সোহানার একটা হাত। ‘এটা তো দেখছি স্রেফ একটা ইয়েল লক, বলল সে, কবাট আর চৌকাঠের ফাঁকে কয়েক সেকেন্ড ওঠা-নামা করল হাতটা। ঠিক আছে, এবার ধাক্কা দাও দেখি।
আশরাফ ধাক্কা দিতেই খুলে গেল কবাট। অবাক হয়ে সোহানার দিকে তাকাল সে, দেখল সেলুলয়েডের একটা টুকরো হাতব্যাগের ভেতর ভরে রাখল ও। মানলাম এটা সিঁধ কাটার সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে না, কিন্তু তবু কি কাজটাকে আইনসঙ্গত বলা যাবে?’
‘এখনও বলা যাবে, যতক্ষণ আমরা কিছু চুরি না করি,’ বলে মারভিন লংফেলোর দিকে তাকাল সোহানা। আমরা যদি ভেতরে অপেক্ষা করি, জিমসন কিছু মনে করবেন?”
বিএসএস চীফ মৃদুকণ্ঠে বললেন, দরজাটা যখন খোলা দেখতে পাচ্ছি, আপনাদের আমি ভেতরেই বসতে বলব।’ পথ দেখিয়ে ওদেরকে ভেতরে আনলেন

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top