আলোর পরশ – ইকবাল মুজাহিদ – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ ইকবাল মুজাহিদ
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৯০
আলোর পরশ – বইটির এক ঝলকঃ
জ্বি। সেজন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হবে, বললেন জান্নাতী।
ওদের চক্রান্ত হচ্ছে এটাকে গার্ল কলেজ করা। তারপর এর মধ্যে স্বাধীনতা ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন করে মাদ্রাসা শিক্ষালয়টিকে ধর্মনিরপেক্ষতার আস্থানালয়ে পরিণত করা।
ঠিক বলেছেন মুহতারামা আপা। এমন একটা ষড়যন্ত্রের ছক ধরে তারা এগিয়ে আসছে। ইনশাআল্লাহ্ আমরা প্রস্তুত।
ইতিমধ্যে ম্যানপাওয়ার সাপ্লাইয়ের লোভে একজন শয়তানের খপ্পরে ধরা পড়লেও চেয়ারম্যান প্রার্থী আর অধ্যক্ষ পদে যাদের লোভনীয় অপার দিল তারা তা প্রত্যাখ্যান করেছে।
গভর্নিং বডিতে তখন ইসলামী সমাজ বাস্তবায়ন গ্রুপ শক্তিশালী। এদের ৫ ভোট আর তাদের ৩ ভোট। দীবা খন্দকারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে ষড়যন্ত্র তারা করতে চেয়েছিল তা সফল হয়নি। মাঠে মারা গেছে তাদের ষড়যন্ত্রের নীল নক্সা ।
সোহেলী রহমান আল্লাহর শোকরিয়া আদায় করলেন। তিনি মাদ্রাসাকে আরো সুসংহত করার প্রয়াস পেলেন। দুটো নতুন হল এবং ১টি হেফজ খানা প্রতিষ্ঠা করলেন। তাছাড়া নতুন শিক্ষিকাও নিয়োগ করলেন তিনি।
একদিন সকালবেলা সোহেলী রহমান মাদ্রাসায় যাওয়ার তাড়া নেই। শুক্রবার মাদ্রাসা বন্ধ। সময় প্রায় শেষ। এমন সময় সোহেলী রহমান জানালা দিয়ে দেখতে পেলেন কে যেন আসছে সাদা জীপে করে। ধীরে ধীরে গাড়ী থেকে নামলেন। নেমেই সোজা সোহেলী রহমানের রুমে ঢুকে দ্রুত ছুটে এসে সালাম করলো- আচ্ছালা-মুআলাইকুম। আম্মা কেমন আছেন? আমি গতরাতে আপনাকে স্বপ্নে দেখেছি, আপনি কাঁদছেন। তাই পাগল হয়ে ছুটে এলাম । আম্মা আমাকে কি বদদোয়া করেছেন। আমি তো আপনার খেদমত করতে পারিনি। আমায় ক্ষমা করুন।
জড়িয়ে ধরলেন সোহেলী রহমান আইরিনকে, মা আমি বেঁচে আছি। বেঁচে থাকবো। আমার আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন- আলহামদুলিল্লাহ। তুমিও আমাকে ভুলে যাও, মা আমি বড় একা বড়ই ভাঙ্গা বুক আমার। এ বয়সে আমার আর কোন সাধ নেই। আমি এখন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে চাই। না আম্মা, আমায় মাফ করুন আমি আপনাকে নিতে এসেছি। আন্দালিব হয়তো আর ফিরে আসবে না। কেননা ও হয়তো সুইডেনে চিরদিন থেকে যাবে । কি বল মা! আশ্চর্য হলেন সোহেলী রহমান।
হ্যাঁ। ঠিক বলছি। কারণ আন্দালিব আপনাকেও অস্বীকার করতে চায়। তার সাথে টেলিফোনে আমি বুঝতে পেরেছি। আপন মাকে অস্বীকার এতো অবিশ্বাস্য আম্মা! তবে আমি প্রতিজ্ঞা করছি আপনাকে ছেড়ে আমি কোথাও যাবো না । আপনার স্নেহের বন্ধন ছিন্ন করে আমি জীবনে কোন সুখ পেতে চাই না । আমার আম্মু বেঁচে নেই। অনেকদিন আম্মুর আদর পাইনি। কিন্তু আপনি…….. আর বলতে পারলো না আইরিন, একটু পরে বললো, বলুন আমার সাথে যাবেন?
কী যে বলো আইরিন, আমার বিষয়-সম্পত্তি বাগান বাড়ী ছেড়ে গেলে এগুলো তো মানুষ দখল করে নিয়ে যাবে। তাছাড়া এগুলোতে দু এক হাজার টাকার সম্পদ নয়। কোটি কোটি টাকার সম্পদ ।
না আম্মা আপনাকে আমি একা থাকতে দেব না। তাছাড়া কাজের মেয়ে নাকি টাকা-পয়সা নিয়ে পালিয়েছে? এমন দুষ্ট মেয়ে রাখলেন কেন? কাজের মেয়ের কথা কে বলেছেরে মা? এ ঘটনাতো অনেকদিন হয়েছে?
আব্বু বলেছে? খুব আফসোস করেছে আব্বু
কই তোমার আব্বু তো দেখতে আসেনি।
আব্বু খুব ব্যস্ত তাই আমাকে পাঠিয়েছেন। আর আপনার কাছে সালাম বলেছেন । তাছাড়া-
বল মা ।
তাছাড়া আপনাকে নেওয়ার পরামর্শ আব্বুই দিয়েছেন। কারণ একাকী আপনি থাকার চেয়ে আমাদের সাথে থাকলে আমরা খুশী হতাম। আমার বেয়াই সাহেব বলেছে। এতো আমার জন্য খোশ খবর। আমার খোশ নসীব ।
আচ্ছা মা আমি ভেবে দেখছি।
না, আজকেই আপনাকে সিদ্ধান্ত দিতে হবে- আব্বু রাগ করবেন।
বললাম তো ভেবে দেখবো মা, আচ্ছা আন্দালিব কি তোমার কাছে ডিভোর্স নামা পাঠিয়েছে?
হ্যাঁ। আনমনা হয়ে জবাব দিল আইরিন।
কী বলেছে?
কী আর বলবে মা, আন্দালিব আমাকে মৌলবাদী মুক্ত চিন্তা বিরোধী বলে গালি দিয়েছে। আর বিশ্রী ভাষায় কতগুলো গালি গালাজ করেছে।
তাই নাকি? আচ্ছা শুনলাম তুমি নাকি সুইডেনে যাচ্ছ বিজ্ঞান করফারেন্সে? হ্যাঁ আম্মা। আপনি কিভাবে শুনেছেন? পত্রিকায় দেখেছি। কবে যাচ্ছো?
আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহের দিকে। কোন সংগঠন ম্যানেজ করেছে?
জ্বী আম্মা তরুণ পদার্থ বিজ্ঞানী ইয়েল বার্গ একটা সংস্থা করেছে। সংস্থার নাম দিয়েছেন সাইন্টিফিক ক্লাব । ‘
ইয়েল বার্গকে তুমি চেন কী করে মা? ওতো ইহুদী বা খ্ৰীষ্টান মনে হয় । হ্যাঁ, চিনি বৈকি। ইহুদী বৈজ্ঞানিক ।
তোমার সাথে পরিচয় ?
আমি একবার মালয়েশিয়া সফর করেছিলাম। ওখানে আমার বিজ্ঞান প্রজেক্ট প্রথম পুরস্কার পায়। সে অনুষ্ঠানে ইয়েল বার্গও উপস্থিত ছিলেন। তিনি আমার সাথে মত বিনিময় করলেন দীর্ঘক্ষণ। পরস্পর আলাপ হলো দু’ঘণ্টার মত। আমার বিজ্ঞান প্রজেক্ট সম্পর্কে ভদ্রলোকের ধারণা হলো, সে জানলো আমি মুসলমান বিজ্ঞানী। তিনি মন্তব্য করলেন, আমি জানতাম মুসলিম মেয়েরা পর্দার অন্তরালে ধুকে ধুকে মরে। চুপে চুপে জীবনের মঞ্চ থেকে বিদায় নেয়। আজ আমার সেই ধারণা ভুল প্রমাণিত হলো আইরিন, সত্যিই আমার ভুল ভাংলো।
কুরআন যে বিজ্ঞান চর্চার সূচনা করেছিল সেই কুরআনের প্রচারক মুসলমানরা রইলো শতাব্দীর পর শতাব্দী পিছনে। প্রচারক মুসলমানরা যদি বিজ্ঞান চর্চা বন্ধ করে দেয় তাহলে কুরআনের আলো থেকে বিশ্ববাসী বঞ্চিত থেকে যাবে।
আইরিনের দীর্ঘ বক্তৃতা মনোযোগ দিয়ে শুনছেন সোহেলী রহমান। প্রবল আগ্রহ নিয়ে বললো- বল মা, তুমি আরো বল। আমি আজ গর্বিত তোমার কৃতিত্বে। আমি দোয়া করি আল্লাহ তোমার নাম যশ আরো প্রসারিত করুন ।
বিজ্ঞানী ইয়েল বার্গ সুইডেন গিয়ে এশিয়ার সেরা বিজ্ঞানীদের তালিকায় আমার নাম। তার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞান জার্নালে না আসার প্রয়োজন নেই । তবে ইয়েল বার্গ যথেষ্ট প্রাজ্ঞ, মেধাবী এবং বুদ্ধি দীপ্ত মানুষ। তাছাড়া তিনি সুইডেনের আরো একটি বিজ্ঞান সেমিনারে আমায় দাওয়াত দিয়েছেন।
কবে যাবে?
মাস তিনেক পর।
তাহলে মা কথা দাও আমার আন্দালিবের ঠিকানায় ওর কাছে যাবে। আর
তাকে বলবে-
আমার অসুবিধা হলেও ঠিক আছে কথা দিলাম। যাবো বললো আইরিন। বেয়াই সাহেব কি এ সু-খবর শুনছেন?
তা তো শুনবে, কারণ আব্বু সব সময় আমার সুখ্যাতি শুনে গর্ব বোধ করেন।
খাওয়ার সময় হয়ে গেল। বেলা অনেক হয়েছে। আজ আমি পাক করে তোমাকে খেতে দেবো। আমার খাওয়া আজ মা আপনাকে কেমন…..। আমার আন্দালিবের কিছু পছন্দনীয় খাওয়া রয়েছে আমি ওগুলো পাক করে তোমার মাধ্যমে দিতে চাই। নেবে মা নেবে তুমি?
হ্যাঁ। নেবো। সে আমার সৌভাগ্য মা।
আর ৫ হাজার ডলার তাকে দেবে। এ নাও, টাকা ঠিক আছে মা ।
আইরিন ইলিশ ভাজা, সালাত, মুরগীর গোস্ত, মশুরীর ডাল এমন করে পাকালো যার খুশবু বাতাসের কানে কানে মুখরিত হয়ে পড়লো। সে কি সুঘ্রাণ ।
খেতে খেতে মিসেস সোহেলী রহমান বললো- আমি তো এমন পাক দেখিনি। তুমি তো দেখি একজন সুদক্ষ গৃহিণী। আল্লাহ এ গুণও তোমাকে দিয়েছেন?
সোবহানাল্লাহ্! সব কিছু আল্লাহ তায়ালারই প্রশংসা। মানুষের আত্মপ্রচার করার কোন সুযোগ নেই। সব কিছুই মহান আল্লাহ তায়ালার দান।
সোহেলী রহমানের কাপড়, মশারী, বালিশের কভার, বেড কভার, তোয়ালিয়া, বোরকা, হাত মোজা, পা মোজা পরিষ্কার করে ধুয়ে দিল আইরিন। এগুলো শুকিয়ে ইস্ত্রি করে রেখে দিল আলনায়। এ যেন কত যুগ পুরনো গৃহবধু । কত মমতায় ভরা আসমানী নেয়ামত। যাবার সময় শ্রদ্ধা মাখা সুরে আইরিন বললো- আম্মা আমি আবার আসবো। আপনি ভেবে দেখবেন কিন্তু। যেতে ভুল করবেন না। একেবারে না হয় কয়দিনের জন্য যাবেন। আমি নিরাশ হয়ে দুঃখ পেলে আপনি শেষে কাঁদবেন। আমার চোখের পানি সে তো আপনারই বেদনার রূপ; আপনারই স্নেহের ঘাটতি আম্মা ।
গাড়ী পর্যন্ত এগিয়ে দিলেন সোহেলী রহমান আইরিনকে। আইরিন নিজেই গাড়ী ড্রাইভ করছিলো। গাড়ীতে উঠতে উঠতে আইরিন বললো- দুধটুকু গরম করে রেখে দিয়েছি। ওটা যেন আবার আস্ত থেকে না যায় গাড়ী চলতে শুরু করেছে।
সোহেলী রহমান মনে মনে আবৃত্তি করেছে- মা আইরিন তুমি আমাকে কাঁদায়ে গেলে। তোমায় তো পোষ মানাতে পারলাম না। এ আমার জীবনে একমাত্র দুঃখ ।
গাড়ীর শো শো আওয়াজে কথাগুলো মিলিয়ে গেল। অসীম শূন্য আকাশে হিল্লোলিত বাতাসের কার্নিসে ।
ব্রুনি আজ কোথাও যায়নি। সাত্তারের দেওয়া ইসলাম পরিচিতি বইটা মনোযোগ সহকারে পড়ছিলো উর্দু থেকে ইংরেজি অনুবাদ করা। প্রতিটি লাইনের প্রতি সুতীক্ষ্ম দৃষ্টি ফেলে শিকারী বাজপাখীর মতো কী যেন খুঁজছে ব্রুনি। হয়তো বা অচেনা স্রষ্টার চেনা হুকুমের পরিচয় পেয়ে ব্রুনির জীবন প্রশ্নবোধক চিহ্নে পরিণত হয়েছে। না হয় ইসলামের চরম সত্যে সে নিজেকে মিলিয়ে দেখছে। এমন সময় কন্ডোলিসা এলো। চঞ্চল, এলোমেলো চুল এবং যৌবনের ছেলেমী অভিনয় করে কন্ডোলিসা বললো হ্যালো ব্রুনি। ক্রিকেট খেলা। ভুলে গেলে?
ইংল্যাণ্ড বনাম পাকিস্তান।
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!