আলোর কাফেলা ৩য় খণ্ড – ডঃ আব্দুর রহমান রাফাত পাশা – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

আলোর কাফেলা ৩য় খণ্ড – ডঃ আব্দুর রহমান রাফাত পাশা – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ ডঃ আব্দুর রহমান রাফাত পাশা

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ২৬৬

আলোর কাফেলা ৩য় খণ্ড – বইটির এক ঝলকঃ

আমরা এখন হিজরী দ্বিতীয় বর্ষে উপনীত….
মদীনাতুর রাসূল যেদিন বদরের যুদ্ধের প্রস্তুতির জন্য তরঙ্গায়িত হচ্ছে।
আর নবীয়ে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর পথে জিহাদের জন্য এবং আল্লাহর জমীনে আল্লাহর কালিমাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তাঁর নেতৃত্বে গমনকারী প্রথম বাহিনীর উপর দৃষ্টি ফেলছেন।
তখন মুজাহিদদের সারির দিকে একজন ছোট বালক এগিয়ে এল। তের বৎসর বয়সও তার পূর্ণ হয়নি। প্রতিভা আর বুদ্ধিমত্তায় জ্বলজ্বল করছে… প্রজ্ঞা আর আত্মমর্যাদাবোধে দীপ্তময় হয়ে আছে….
তাঁর হাতে একটি তরবারী যা তাঁর শরীর বরাবর বা তার চেয়ে একটু বড়। সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকটবর্তী হয়ে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার জীবন আপনার জন্য উৎসর্গিত। আপনার সাথে থাকার ও আপনার পতাকাতলে থেকে আল্লাহর শত্রুদের বিরুদ্ধে জিহাদ করার অনুমতি প্রদান করুন।
রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আনন্দ মিশ্রিত মুগ্ধ দৃষ্টিতে তার দিকে তাকালেন। ভালবাসা ও স্নিগ্ধতার সাথে তার পিঠে হাত বুলিয়ে দিলেন। এভাবে তার মনোরঞ্জন করলেন এবং বয়সের স্বল্পতার কারণে ফিরিয়ে দিলেন।
ছোট বালকটি ক্ষুণ্ণ বিষণ্ন মনে মাটির উপরে তরবারী টানতে টানতে ফিরে এল। কারণ সে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রথম যুদ্ধাভিযানে তাঁর সাহচর্যের মর্যাদা থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
তার পিছনে পিছনে তার মা নাওয়ার বিনতে মালেক ফিরে এলেন। তিনিও দুঃখ ও বিষণ্ণতায় তার চেয়ে কম ছিলেন না । তিনি তামান্না করছিলেন, তার ছেলেকে দেখবেন, সে অন্যান্য লোকদের সাথে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পতাকাতলে মুজাহিদ বেশে যাচ্ছে….
তিনি আশা করছিলেন, সে ঐ স্থান দখল করে নিবে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট তার পিতা যে স্থান লাভের অপেক্ষা করছিলেন, যদি তিনি বেঁচে থাকতেন ।
কিন্তু আনসারী বালক যখন দেখল, বয়সের স্বল্পতার কারণে সে এ অঙ্গনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নৈকট্য লাভে ভাগ্যবান হতে ব্যর্থ হয়েছে, তখন তার বুদ্ধি তাকে আরেকটি অঙ্গনের সন্ধান দিল, যার সাথে বয়সের কোন সম্পর্ক নেই, যা তাকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নৈকট্য দান করবে এবং তাকে রাসূলের নিকটে নিয়ে যাবে। আর সে অঙ্গন হল ইলম ও হিফজের অঙ্গন…
তখন বালকটি তার চিন্তার কথা তার মাকে বলল। আর তার মা তাতে আনন্দিত ও মুগ্ধ হলেন এবং তা বাস্তবায়নে তৎপর হয়ে উঠলেন।
নাওয়ার তাঁর ছেলের আগ্রহের বিষয়টি তাঁর গোত্রের কিছু লোকের কাছে ব্যক্ত করল এবং তাদের কাছে তাঁর ছেলের চিন্তার কথা বর্ণনা করল…
তখন তারা তাকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে গিয়ে বললেন,
হে আল্লাহর নবী ! এই আমাদের ছেলে যায়েদ ইবনে ছাবেত, আল্লাহর কিতাব থেকে সতেরটি সূরা মুখস্থ করে ফেলেছে। বিশুদ্ধভাবে তা তিলাওয়াত করে, যেমনিভাবে তা আপনার হৃদয়ে অবতীর্ণ হয়েছে।
তা ছাড়াও সে সুন্দর করে লিখতে ও পড়তে পারে। এর মাধ্যমে সে আপনার নৈকট্য লাভ করতে চায়, আপনার সাথে থাকতে চায় । সুতরাং আপনি চাইলে তার থেকে শুনে দেখুন । রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বালক যায়েদ ইবনে ছাবেত থেকে সে যা মুখস্থ করেছে তার কিয়দাংশ শ্রবণ করলেন। তিনি বিস্মিত হয়ে দেখলেন, তার তিলাওয়াত আলোকময়, তার উচ্চারণ সুস্পষ্ট।
কুরআনের কালিমাগুলো তার ওষ্ঠাধরে ঝলমল করে যেমন তারকাগুলো আকাশের পৃষ্ঠে ঝলমল করে…..
তার তিলাওয়াতের শব্দে শব্দে আয়াতের ভাব ও মর্ম দারুণভাবে ফুটে ওঠে। তার প্রতিটি ওয়াকফ ও বিরাম থেকে স্পষ্টতাই বোঝা যায়, তিনি যা পড়ছেন তা পড়ছেন গভীর উপলব্ধি নিয়ে।
তাই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুব আনন্দিত হলেন। কারণ তারা যা বলেছে তিনি তাকে তার চেয়ে অধিক পেয়েছেন। আর লেখার ক্ষেত্রে তার দক্ষতা রাসূলের আনন্দকে আরো বাড়িয়ে দিল… তাই নবীয়ে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দিকে তাকিয়ে বললেন, হে যায়েদ ! তুমি ইহুদীদের ভাষা শিখে নাও, কারণ আমি যা বলি সে ব্যাপারে আমি তাদেরকে নিরাপদ মনে করি না ।
সে বলল, ইয়া রাসূল্লাল্লাহ ! আমি হাজির, আমি প্রস্তুত ।
সাথে সাথে তিনি ইবরানী ভাষা আয়ত্ত করতে মনোনিবেশ করলেন এবং অল্প সময়ে তাতে দক্ষতা অর্জন করলেন এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইহুদীদের নিকট পত্র লিখতে ইচ্ছে করলে তিনি রাসূলের হয়ে পত্র লিখতে শুরু করলেন। আর তারা যখন রাসূলের নিকট কোন পত্র লিখত তখন তিনি তা রাসূলকে পাঠ করে শুনাতেন ।
তারপর রাসূলের নির্দেশে সুরাইয়ানী ভাষা শিখলেন যেমন ইবরানী ভাষা শিখেছেন ।
অতঃপর যুবক যায়েদ ইবনে ছাবেত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দোভাষী হয়ে গেলেন ।
তারপর যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত যায়েদ ইবনে ছাবেত রাযি.-এর পরিপক্ক বুদ্ধিমত্তা, বিশ্বস্ততা, বুদ্ধির তীক্ষ্ণতা আর অনুধাবন শক্তি সম্পর্কে আশ্বস্ত হলেন তখন তিনি তাকে পৃথিবীতে আসমানী রিসালতের ব্যাপারে বিশ্বস্ত মনে করলেন এবং তাকে কাতেবে ওহী বানালেন
তাই রাসূলের হৃদয়ে কুরআনের কিছু অবতীর্ণ হলে তিনি তাঁকে ডেকে বলতেন,
হে যায়েদ ! তুমি তা লিখে রাখ । তখন তিনি তা লিখে রাখতেন।
এভাবে হযরত যায়েদ ইবনে ছাবেত রাযি. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে ধীরে ধীরে কুরআন গ্রহণ করতে লাগলেন এবং কুরআনের আয়াতের সাথে সাথে তাঁর উৎকর্ষতা বৃদ্ধি পেতে লাগল….
তিনি রাসূলের মুখ থেকেই শানে নূযুল সহকারে সতেজ প্রাণবন্ত কুরআন গ্রহণ করতেন, তাই হিদায়াতের আলোকমালায় তার হৃদয় আলোকময় হয়ে উঠত… শরীয়তের গুরুতত্ত্বে তার মস্তিষ্ক দীপ্তমান হয়ে উঠত…
ফলে ভাগ্যবান যুবকটি কুরআনের জ্ঞানে বিশেষ বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত হয়ে উঠলেন। এবং কুরআনের জ্ঞানে রাসূলের ওফাতের পর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উম্মতের প্রথম কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হলেন।
তাই সিদ্দিকে আকবার হযরত আবু বকর রাযি.-এর খিলাফতকালে যাঁরা কুরআনকে একত্রিত করেছিলেন তিনি ছিলেন তাঁদের শীর্ষ ব্যক্তিত্ব…
আর হযরত উসমান রাযি.-এর খিলাফতকালে যারা কুরআনের বিভিন্ন কপিকে একটি কপিতে রূপান্তরিত করেছিলেন তিনি ছিলেন তাদের অগ্রগণ্য ব্যক্তি।
এই সম্মানের পরেও কি আর কোন সম্মান আছে যা অর্জনে মানুষ সংকল্পবদ্ধ হতে পারে? এই মর্যাদার পরেও কি এমন কোন মর্যাদা আছে যার প্রতি মানুষ মত অভিলাষী হয়ে উঠতে পারে?
হযরত যায়েদ ইবনে ছাবেত রাযি. এর উপর কুরআনের একটি বিশেষ অনুগ্রহ হল, যেসব স্থানে জ্ঞানী লোকেরা দিশেহারা হয়ে যায় সেখানে কুরআন তাঁকে সঠিক পথ প্রদর্শন করে… সুতরাং বনু সায়েদার পরামর্শ সভায় যখন মুসলমানরা এ বিষয় নিয়ে বিতর্কে লিপ্ত হল যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের খলীফা কে হবে ?
মুহাজিররা বলল, আমাদের মধ্য থেকে খলীফা হবে। আর আমরাই তার অধিক যোগ্য ।
আনসারদের কেউ কেউ বলল, বরং খলীফা আমাদের মধ্য থেকে হবে। আর আমরাই তার উপযুক্ত।
অন্যান্যরা বলল, বরং আমাদের ও তোমাদের মধ্য থেকে যৌথভাবে খলীফা হবে…
কারণ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন কোন কাজে তোমাদের মধ্য থেকে কাউকে জিম্মা দিতেন, তখন আমাদের একজনকেও তার সাথে মিলিয়ে দিতেন।
মহা ফেনা হওয়ার উপক্রম হল। অথচ আল্লাহর নবী তাদের মাঝে চাদরাবৃত অবস্থায় রয়েছেন। এখনো তাঁকে দাফন করা হয়নি।
তখন কুরআনের হিদায়াতের আলোতে আলোকময়, সঠিক, বিভেদদূরকারী এমন একটি কথার প্রয়োজন ছিল যা ফেত্নাকে সূতিকাগৃহে দাফন করে দিবে আর দিশেহারাদের পথ দেখাবে।
এ কথাটি হযরত যায়েদ ইবনে ছাবেত আনসারী রাযি. এর মুখ থেকে ছুটে বেরোলো ।
তিনি তাঁর গোত্রের দিকে তাকিয়ে বললেন, হে আনসার সম্প্রদায়… নিশ্চয় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুহাজিরদের একজন ছিলেন। তাই খলীফা ও হবে মুহাজির, তার মত…
আর আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আনসার ও সাহায্যকারী ছিলাম। তাই আমরা তাঁর পরে তাঁর খলীফার ও আনসার হয়ে, সত্যের পথে তার সহকারী হয়ে থাকব ।
তারপর তিনি তাঁর হাতকে হযরত আবু বকর রাযি.-এর দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললেন, ইনি হলেন তোমাদের খলীফা। সুতরাং তোমরা তার হাতে বাইয়াত গ্রহণ কর ।

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top