আলোর কাফেলা ২য় খণ্ড – ডঃ আব্দুর রহমান রাফাত পাশা – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

আলোর কাফেলা ২য় খণ্ড – ডঃ আব্দুর রহমান রাফাত পাশা – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ ডঃ আব্দুর রহমান রাফাত পাশা

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ২০৮

আলোর কাফেলা ২য় খণ্ড – বইটির এক ঝলকঃ

শুরু থেকেই হযরত আবু দারদা রাযি. আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের উপর এমন ঈমান আনলেন, যা তাঁর অস্তিত্বের প্রতিটি বিন্দুর সাথে মিশে গেলো ।
ছুটে যাওয়া কল্যাণের ব্যাপারে তিনি অত্যন্ত লজ্জিত হলেন। তাঁর সাথীরা যে, আল্লাহর দীন বোঝার ব্যাপারে, কিতাবুল্লাহ হিফজ করার ক্ষেত্রে, আল্লাহর নিকট সঞ্চিত তাকওয়া ও ইবাদতে তাঁর থেকে অনেক দূরে অগ্রসর হয়ে গেছেন, তা তিনি গভীরভাবে উপলব্ধি করলেন।
তাই অত্যন্ত দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করলেন, কঠোর মুজাহাদা করে, রাতের ক্লান্তিকে দিনের ক্লান্তির সাথে মিশিয়ে দিয়ে ছুটে যাওয়া বিষয়গুলোকে অর্জন করবেন। অবশেষে অগ্রগামী দলের সাথে মিলিত হবেন। বরং তাঁদের থেকেও অগ্রসর হয়ে যাবেন ।
তাই তিনি দুনিয়াবিরাগী ব্যক্তির ন্যায় ইবাদতে আত্মমগ্ন হয়ে পড়লেন। পিপাসার্ত ব্যক্তির ন্যায় ইলম অর্জনে ধাবিত হলেন। আল্লাহর কিতাবের প্রতিটি কালিমা মুখস্থ করায় ও তার প্রতিটি আয়াত গভীর ভাবে বুঝায় আত্মহারা হয়ে পড়লেন।
যখন দেখলেন, ব্যবসা-বাণিজ্য ইবাদতের স্বাদকে বিস্বাদ করে দিচ্ছে, ইলমের মজলিসসমূহ থেকে বঞ্চিত করে দিচ্ছে, তখন তিনি কোন দ্বিধা- দ্বন্দ্ব ছাড়াই, কোন আক্ষেপ-অনুশোচনা ছাড়াই ব্যবসা-বাণিজ্য ত্যাগ করলেন ।
জনৈক ব্যক্তি এ ব্যাপারে তাঁকে জিজ্ঞেস করলে তিনি উত্তরে বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে প্রতিশ্রুতিতে আবদ্ধ হওয়ার পূর্বে আমি একজন ব্যবসায়ী ছিলাম। ইসলাম গ্রহণের পর আমি ব্যবসা ও ইবাদতকে একত্রিত করতে ইচ্ছে করলাম। কিন্তু যা চাইলাম তা হল না। তাই ব্যবসা ত্যাগ করে ইবাদতের অভিমুখী হলাম।
আমার প্রাণ যাঁর নিকট তাঁর শপথ করে বলছি, আজ আমি চাই না, মসজিদের ফটকের সামনে আমার একটি দোকান হবে। ফলে জামাতের সাথে আমার কোন নামায ছুটবে না। তারপর আমি ক্রয়-বিক্রয় করব আর প্রত্যহ তিন শ’ দীনার লাভ হবে।
প্রশ্নকারীর দিকে তাকিয়ে বললেন, তবে শুনে নাও, আমি এ কথা বলছি না, যে আল্লাহ তা’আলা ক্রয়-বিক্রয়কে হারাম করে দিয়েছেন, তবে আমি তাঁদের দলবদ্ধ হতে চাই, যাদেরকে ব্যবসা-বাণিজ্য আর ক্রয়-বিক্রয় আল্লাহর যিকির থেকে গাফেল করে না। হযরত আবু দারদা রাযি. শুধু ব্যবসাকেই পরিত্যাগ করেননি; তিনি তো দুনিয়াকে চিরতরে ত্যাগ করেছেন আর দুনিয়ার শোভা-সৌন্দর্য থেকে বিমুখ হয়েছেন । শুষ্ক এক লোকমা খাবার যা পিঠকে সোজা রাখে, খসখসে এক টুকরা কাপড় যা দেহকে আবৃত রাখে, তাকেই তিনি যথেষ্ট মনে করতেন।
এক কনকনে শীতের রাতে কিছু লোক এসে তাঁর মেহমান হল । তিনি তাদের জন্য গরম খাবার পাঠালেন । তবে তাদের নিকট কোন লেপ পাঠালেন না। ঘুমের ইচ্ছে করে তারা লেপের জন্য পরামর্শ করতে লাগল। একজন বলল,
আমি তাঁর নিকট যাচ্ছি । তাঁর সাথে কথা বলব,
অন্য একজন বলল, তাঁকে ছেড়ে দাও । কিন্তু সে তার কথা মানল না। এগিয়ে গেল এবং আবু দারদার দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়াল। দেখল, তিনি কাঁত হয়ে শুয়ে আছেন আর তাঁর স্ত্রী পাশে বসে আছেন । তাঁদের গায়ে একটি পাতলা কাপড়, যা গরম থেকে রক্ষা করে না শীত থেকে বাঁচায় না। লোকটি তখন হযরত আবু দারদা রাযি. কে বললেন, আমরা যে জীর্ণ অবস্থায় রাত্রি যাপন করছি, আপনিও দেখি আমাদের মতই রাত্রি যাপন করছেন !!
আপনাদের আসবাবপত্র কোথায় ?!
হযরত আবু দারদা রাযি. বললেন, ঐখানে আমাদের একটি বাড়ি আছে, আমরা যেসব আসবাবপত্র অর্জন করি পর্যায়ক্রমে তা সেখানে পাঠিয়ে দেই। যদি এ গৃহে আমরা কিছু বাকি রাখতাম, তাহলে অবশ্যই তা পাঠিয়ে দিতাম ।
তারপর যে পথ অতিক্রম করে আমরা সেই বাড়িতে পৌঁছব সেপথে রয়েছে দূর্গম গিরি। সেখানে ভারাক্রান্ত ব্যক্তির চেয়ে স্বল্পভারী ব্যক্তি অধিক উত্তম। তাই আমরা স্বল্পভারী হতে চাচ্ছি। হয়তো আমরা সহজে পথ অতিক্রম করতে পারব ।
তারপর লোকটিকে বললেন, তুমি কি বুঝেছো?
লোকটি বলল, হ্যাঁ, বুঝেছি। আল্লাহ আপনাকে উত্তম বিনিময় দান
করুন। হযরত উমর ফারুক রাযি.-এর খিলাফত কালে তিনি চাইলেন, যেন হযরত আবু দারদা রাযি. শামের শাসন কার্যের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। কিন্তু হযরত আবু দারদা রাযি. তা অস্বীকার করলেন। তখন হযরত উমর রাযি. তাঁকে বারবার অনুরোধ করলে তিনি বললেন, যদি আপনি এতটুকুতে সন্তুষ্ট হন যে, আমি তাদের নিকট যাব। তাদেরকে আল্লাহর কিতাব ও রাসূলের সুন্নাত শিক্ষা দিব। তাদের সাথে নিয়ে নামায পড়ব। তা হলে আমি যাব। হযরত উমর রাযি. এতে রাজি হলেন।
তিনি দামেস্কে গেলেন। গিয়ে দেখেন, লোকেরা ভোগ-বিলাসে আসক্ত হয়ে পড়েছে। প্রাচুর্যের মাঝে ডুবে আছে।
বিষয়টি তাকে সঙ্কিত করল। তিনি লোকদের মসজিদে ডাকলেন। তারা একত্রিত হলে তিনি তাদের বললেন, হে দামেস্কের অধিবাসীরা! তোমরা আমার ধর্মের ভাই। গৃহের নিকটতম প্রতিবেশী। শত্রুর বিরুদ্ধে সাহায্যকারী।
হে দামেস্কের অধিবাসীরা! আমাকে ভালবাসতে ও আমার উপদেশ শুনতে তোমাদের কিসে বাঁধা দিচ্ছে? অথচ আমি তোমাদের থেকে কোন বিনিময় চাই না। আমার উপদেশ তোমাদের জন্য আর আমার ভাতা অন্যের উপর।
কি হল, দেখছি তোমাদের আলেমরা একের পর এক চলে যাচ্ছে আর তোমাদের অজ্ঞ লোকেরা ইলম অর্জন করছে না!
আমি দেখছি, আল্লাহ তোমাদের জন্য যে রিযিকের দায়িত্ব নিয়েছেন তোমরা তা অর্জনে ধাবিত হচ্ছো আর তোমাদের যা করতে আদেশ দিয়েছেন তোমরা তা ত্যাগ করছো ?
কি হল, আমি দেখছি, তোমরা যা খাচ্ছো না তা পুঞ্জিভূত করছো! যে সব প্রাসাদে থাকছো না তা তৈরী করছো!
যেখানে পৌঁছতে পারবে না তার আশা করছো!
তোমাদের পূর্ববর্তী সম্প্রদায়ের লোকেরা ধন-সম্পদ পুঞ্জিভূত করছিল আর বহু আশা করেছিল।
কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই তাদের পুঞ্জিভূত সম্পদ ধ্বংস হয়ে গেছে …..
তাদের আশা প্রবঞ্চনায় পরিণত হয়েছে…
তাদের ঘরবাড়ি সমাধিতে পরিণত হয়েছে…
হে দামেস্কের অধিবাসীরা! এইতো আদ সম্প্রদায় পৃথিবীকে ধন সম্পদ আর ছেলে সন্তান দ্বারা ভরে ফেলেছিল…
আজ আমার থেকে কে আদ সম্প্রদায়ের পরিত্যক্ত সম্পদ মাত্র দুই দেরহাম দ্বারা ক্রয় করবে?
তখন লোকেরা কাঁদতে লাগল। মসজিদের বাইরে থেকে তাদের কান্নার আওয়াজ শোনা গেল । সে দিন থেকে হযরত আবু দারদা রাযি. দামেস্কে মানুষের সমাবেশসমূহে যেতেন। হাটে-বাজারে ঘুরতেন। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের উত্তর দিতেন। অজ্ঞ ব্যক্তিকে ইলম দান করতেন। গাফেল ব্যক্তিকে সতর্ক করতেন। প্রত্যেক সুযোগকে তিনি সুবর্ণ মনে করতেন। প্রত্যেক উপলক্ষ্যকে তিনি কাজে লাগাতেন। ঐতো হযরত আবু দারদা রাযি. একদল লোকের পাশ দিয়ে যাচ্ছেন। তারা এক ব্যক্তিকে ঘিরে মারছে আর গালমন্দ করছে। তিনি বললেন,
কী খবর ?
লোকেরা বলল,একজন লোক একটি গুরুতর পাপ করেছে।
তিনি বললেন, তোমরা কি একবার ভেবে দেখেছো, যদি লোকটি কোন কূপে পড়ে যেত, তাহলে কি তোমরা তাকে কূপ থেকে তুলতে না? তারা বলল, হ্যাঁ,
হযরত আবু দারদা রাযি. বললেন, তাকে গালমন্দ করো না। তাকে মেরো না। তাকে উপদেশ দাও। সম্যক জ্ঞান দাও। আর আল্লাহর প্রশংসা কর,যিনি তোমাদেরকে পাপে নিপতিত হওয়া থেকে রক্ষা করেছেন। লোকেরা বলল, আপনি কি তাকে ঘৃণা করবেন না?
তিনি বললেন, আমি তার পাপ কাজকে ঘৃণা করব। যখন সে তার পাপ কাজ ছেড়ে দিবে তখনতো সে আমার ভাই হয়ে যাবে।
তখন লোকটি কাঁদতে লাগল আর তাওবার ঘোষণা করতে লাগল । একদা এক যুবক হযরত আবু দারদা রাযি. এর নিকট এল। বলল, হে আল্লাহর রাসূলের সাহাবী ! আমাকে কিছু উপদেশ দিন। তিনি তখন তাকে বললেন, হে বৎস ! সুখ সাচ্ছন্দে আল্লাহকে স্মরণ কর তাহলে দুঃখ- দুর্দশায় আল্লাহ তোমাকে স্মরণ করবেন।
হে বৎস! আলেম হও অথবা তালেবে ইলম হও অথবা আলেমদের কথা মনোযোগ দিয়ে শ্রবণকারী হও । চতুর্থ কিছু হয়ো না, তা হলে ধ্বংস হয়ে যাবে ।

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top