আক্রমণ – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

আক্রমণ – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ কাজী আনোয়ার হোসেন

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১০৩

আক্রমণ – বইটির এক ঝলকঃ

রাখাল খেদিয়ে নিয়ে যাচ্ছে । লোকজন, সম্ভবত চাকর-বাকররা, তর্ক করছে দূরে কোথাও ।
‘লোকটা মুসলিম, তাই না?’ অবশেষে জিজ্ঞেস করলো কেনেথ কালভিন । ‘হ্যাঁ,’ বললো ফারাজ লেবানন । ‘কেন জানতে চাইছেন?’
‘আগামী মাসে ক্রিসমাস,’ বললো কেনেথ কালভিন । ‘লোকটা খ্রিস্টান হলে নিশ্চয়ই কোনো অনুষ্ঠানে যোগ দিতো ।’
‘খ্রিস্টান হোক আর না হোক, ছুটি তো পাবেই,’ বললো লেবানন । ‘আর ছুটি পেলে ন্যাভাল বেস ছেড়ে কোথাও না কোথাও বেড়াতে যাবেই । কিন্তু কি ভাবছেন বলুন তো?’
চেহারা উজ্জ্বল হয়ে উঠলো কেনেথ কালভিনের । ‘কোথাও বেড়াতে যাবে, তাই না? ভেরি গুড ।’ হঠাৎ কঠোর হয়ে উঠলো তার চেহারা । ‘খোঁজ নিয়ে জানুন কোথায় ছুটি কাটাতে যায় লোকটা। আমি তাকে বিড়ালের হাতে তুলে দেবো । আমাদের ব্যর্থ হবার আশঙ্কা তাতে কমবে।’
রিজেন্ট পার্কের কাছাকাছি, ব্রিটিশ সিক্রেট সার্ভিসের হেড-কোয়ার্টারে, প্রতিলিপিটা পড়ছে জন মিচেল, তার দিকে তাকিয়ে রয়েছেন মারভিন লংফেলো । মিচেল খুব দ্রুত পড়তে পারে, তবু ধৈর্য হারিয়ে ডেস্কের ওপর আঙুল নাচাচ্ছেন তিনি । মিচেল শেষ করতেই ভারি গলায় জানতে চাইলেন তিনি, ‘কি বুঝলে?’
‘প্রচুর তথ্য জানে ওরা, স্নানকণ্ঠে বললো মিচেল। ‘ব্যাপারটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। আমি নতুন করে সিদ্ধান্ত নেয়ার সুপারিশ করবো, স্যার। গোটা ব্যাপারটা বাতিল করে দিন।’
‘হুম!’ একটা দীর্ঘশ্বাস চাপলেন মারভিন লংফেলো। ‘কিন্তু, চীফ অভ স্টাফ, কল্পনা করতে পারো আমাদের পরামর্শ গ্রহণ করা হয়েছে? কি ধরনের কি জড়িত জানি, সেজন্যেই ভয় পাচ্ছি গোটা ব্যাপারটা বাতিল করার চেষ্টা করলেও ঝুঁকি আছে
নিজের প্রিয় জায়গা অর্থাৎ খোলা জানালার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো জন মিচেল, ‘হুম’ আওয়াজটা এবার তার গলা থেকে বেরুলো। নিচের পার্কের দিকে চোখ রেখে বললো সে, ‘সমস্যাটা আমি বুঝি, স্যার। কিন্তু খারাপ কিছু যদি ঘটে…’
‘আমাদের সামনে একটা রাস্তাই খোলা আছে, খারাপ কিছু ঘটতে না দেয়া । রানাকে টোপ হিসেবে ব্যবহার করার একটা সুযোগ দেখতে পাচ্ছি আমি । ঝুঁকি আছে, মার্ক্সক ঝুঁকি, কিন্তু এ-ধরনের ঝুঁকি নিতে অভ্যস্ত রানা-এতো বড় এজেন্ট তো আর এমনি এমনি হয়নি ছেলেটা। ক্রিসমাস সম্পর্কে কেনেথ কালভিন কি বললো শুনলে তো । ওদেরকে প্রকাশ্যে বেরিয়ে আসার সুযোগ দিয়ে একটা ফাঁদ পাততে অসুবিধে কি আমাদের? ওরা প্রকাশ্যে তৎপর হলে লাভ আমাদেরই, তাই না?’
‘রানাকে আপনি বাঘের টোপ হিসেবে ছাগল বানাতে চান, স্যার?’
‘ছাগল বলতে রাজি নই আমি, বরং স্টকিং-হর্স বলা যেতে পারে-ঘোড়া বা ঘোড়ার ডামির আড়ালে থেকে শিকারীরা শিকারের দিকে এগোয়, জানো তো? অবশ্য আগে ওর অনুমতি পেতে হবে। দেরি করো না, জন, রানার সাথে সাক্ষাতের আয়োজন করো । কিন্তু সাবধান, শতকরা একশো ভাগ নিরাপদ হওয়া চাই । বুঝতে পারছো তো?’
‘পারছি, স্যার।’
‘বিড়াল,
যেন আপনমনে বিড়বিড় করছেন _ মারভিন লংফেলো । ‘বাস্ট-ভাইপারের ওপর চড়ে আছে তিনমাথা নিয়ে একটা দানব। একটা মাথা মানুষের, একটা সাপের, তৃতীয়টা বিড়ালের । বিড়াল, জন ।
*গ্লেনডা বার্ক, তাই না?’
‘কি আছে ফাইলে?
‘খুবই সামান্য, স্যার । আমরা জানি, এক সময় মোসাড়ু-এর সাথে চুক্তিতে কাজ করেছে সে। বৈরুতে ফ্রি-ল্যান্সার স্পাই হিসেবে বিভিন্ন গ্রুপের হয়ে স্যাবোটাজ চালিয়েছে । কারণ যাই হোক, আজ পর্যন্ত তার কোনো ফটো কোথাও পাওয়া যায়নি । গ্লেনডার বয়স সাতাশ বা আটাশ হবে। আমরা আরো জানি, অপূর্ব সুন্দরী সে। ছদ্মবেশে, ছদ্ম-পরিচয়ে গোপন কাজ করে অভ্যস্ত । তার চেহারার বর্ণনা আজও আমরা সংগ্রহ করতে পারিনি ।
খানিকক্ষণ চুপ করে থেকে মারভিন লংফেলো বললেন, ‘রানার দুর্বলতা টের পেয়ে গেছে ওরা। সুন্দরী মেয়েদের সান্নিধ্য ভালোবাসে ও । তবে একটা তথ্য সম্ভবত জানা নেই ওদের, সুন্দরী মেয়ে মাত্রই রানার দৃষ্টিতে সন্দেহের পাত্রী । গ্লেনডা বার্ক সম্পর্কে আরো তথ্য পাবার চেষ্টা করো, জন । তারপর রানার সাথে আমার দেখা করার ব্যবস্থা করো। আবার বলছি, অত্যন্ত সতর্কতার সাথে আয়োজনটা করতে হবে—কোনো ফাঁক থাকা চলবে না, নিরাপত্তার ব্যবস্থা হওয়া চাই নিশ্ছিদ্র ।
মাথা ঝাঁকালো জন মিচেল । অফিস কামরা থেকে বেরিয়ে যাবার সময় গম্ভীর এবং দৃঢ়প্রতিজ্ঞ দেখালো তাকে ।
হ্যারিয়ার কোর্স ক্রমশ আরো বেশি সময় কেড়ে নিচ্ছে রানার । প্রতিদিন দূরত্বের সীমা আগের দিনের চেয়ে বাড়ানো হচ্ছে। প্রতিবার নতুন বম্বিং রেঞ্জে বোমা ফেলে আসছে রানা । ফাইটার পাইলট হিসেবেও নতুন নতুন দায়িত্ব চাপছে ওর ঘাড়ে ।
প্রথমে সিমুলেটর-এ, তারপর আরো বিপজ্জনক বাস্তব ক্ষেত্রে, নিয়মিত ডগ ফাইট টেকনিক শিখছে ও-কখনো অন্য প্লেনে ওর ইনস্ট্রাকটর থাকছে, কখনো কোর্সমেটরা ।
কঠিন পরিশ্রম করতে হচ্ছে রানাকে, তার ওপর রুবি বেকারকে নিয়ে উদ্বেগের অন্ত নেই । ওর নির্লিপ্ত ব্যবহারে উল্টো ফল ফললো, রানার প্রতি আরো ঝুঁকে পড়লো মেয়েটা । প্রায় প্রতিদিন আকাশ থেকে প্লেন নিয়ে নামার পর তাকে ওর জন্যে অপেক্ষা করতে দেখলো রানা। কিংবা হয়তো অ্যান্টিরুমে ঘুর ঘুর করছে, অথবা রানার ডিনার টেবিলে উদয় হলো। ওর ভালো-মন্দ, স্বাস্থ্য, মন- মেজাজ সম্পর্কে সব সময় খোঁজখবর নেয় রুবি, উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে । যদিও ভদ্রতার সীমা কখনোই লঙ্ঘন করে না ।
‘মক্ষিরানী, আমরা যাকে এই ন্যাভাল বেসের অনুপ্রেরণা বলি, তোমার জন্যে দেখছি পাগল!’ মার্কিন নেভি পাইলট একদিন খেতে বসে মন্তব্য করলো । সত্যি, রানা, তোমার ভাগ্য দেখে ঈর্ষা হয় ।’
“তাই নাকি? পাগল?’ চেহারায় অবাক ভাব নিয়ে বললো রানা । ‘সত্যি যদি তাই হয়, খুব খুশি হবো কেউ যদি তাকে নদীতে ঝাঁপ দিতে বলে ।
‘জানি কি বলতে চাইছো, ক্যাপটেন । এই যান্ত্রিক পাখিতে চড়ে সারাটা দিন আকাশ চষার পর, উদ্যম বলতে আর কিছু অবশিষ্ট থাকে না-দু’পেয়ে রক্তমাংসের পাখিটা যতোই উপাদেয় হোক না কেন ।’
‘ঠিক তাই,’ আড়ষ্ট হাসি হেসে টেবিল ছেড়ে চলে গেল রানা ।
দু’দিন পর একটা পোস্টকার্ড পেলো রানা, কার্ডে ছাপা রয়েছে অক্সফোর্ডের ‘মার্টায়ার্স’ মেমোরিয়াল। উল্টোদিকের লেখাগুলো পড়লো রানা, কার হাতের লেখা চিনতে পারলো না । লেখাটা হুবহু এরকম:
‘কমপ্লিটেড টোয়েনটি-টু পেজেস অভ নোটস অন বিয়ার-বেইটিং ইন দ্য সিক্সটিনথ্ সেঞ্চুরি, ভিজিটেড ব্লেনহেইম প্যালেস টু টেক আ লুক অ্যাট দ্য আর্কাইভস হুইচ কেপ্ট মি বিজি ওভার দ্য উইকএণ্ড । হোপ টু সী ইউ সুন । লাভ অ্যাজ এভার। জুডিথ ।
কথাগুলো সাঙ্কেতিক, তবে সাধারণ জ্ঞান থাকলে অর্থ উদ্ধার করা সম্ভব। জুডিথ হলো জরুরী মিটিঙের নোটিস। মিটিঙটা কখন আর কোথায় সহজেই বুঝতে পারলো রানা: বিয়ার হোটেলে, উডস্টকে, অক্সফোর্ডের কাছে। রবিবার রাত আটটায়, বাইশ নম্বর কামরায় কামরার নম্বরটা হুবহু উল্লেখ করা হয়েছে, সময় হলো ১৬.০০ ঘণ্টা, যোগ চার । হয় মাকে কিছু ঘটেছে, নয়তো প্ল্যান বদলের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
উডস্টকে পৌঁছুলো রানা, কিন্তু উঠলো সিলেটিদের ‘শ্রীমঙ্গল’ হোটেলে, খানিকটা নিরাপত্তার কথা ভেবে, খানিকটা স্বদেশপ্রীতির কারণে ।
হোটেলে নাম লিখিয়ে হাঁটতে বেরলো রানা। শ্রীমঙ্গলে ফিরে এসে ঘণ্টা কয়েক বিশ্রাম দিলো পা দুটোকে, তারপর কাছাকাছি বিয়ার হোটেলের উদ্দেশে বেরিয়ে পড়লো । সামান্য পথ, হেঁটেই রওনা হলো ও ।
উডস্টক শহরটা ছোটো, তবে লোকসংখ্যা প্রচুর। বাংলাদেশীরা এখানে ভালো ব্যবসা করছে। বাতাসে পটেটো চিপস আর ধোঁয়ার গন্ধ ভালো লাগলো না ওর । বিয়ার হোটেলের সামনের দরজা দিয়ে শান্তভাবে ভেতরে ঢুকলো ও, সরু প্যাসেজের শেষ মাথায় রিসেপশন, সেটাকে এড়িয়ে এন্ট্রান্স হলের ভেতর দিয়ে চলে এলো ছোটো একটা এলিভেটরের সামনে। এই এলিভেটারই ওকে বাইশ নম্বর কামরায় পৌঁছে দেবে ।
ওর জন্যে অপেক্ষা করছেন বিএসএস চীফ মারভিন লংফেলো । সাথে তাঁর চীফ অভ স্টাফ জন মিচেল ।
‘আমাদের ইলেকট্রনিক বিশেষজ্ঞরা খানিক আগে কামরাটা সার্চ করেছে, ‘ কুশলাদি বিনিময়ের পর মারভিন লংফেলো বললেন । ‘কোনো আড়িপাতা যন্ত্র নেই, যদিও আজকাল জোর দিয়ে কিছু বলা যায় না ।
মারভিন লংফেলো এবং বন্ধু জন মিচেলের উদ্দেশ্যে স্মিত হাসলো রানা । দু’জনের চেহারায় গাম্ভীর্য লক্ষ করে বুঝলো, খবর ভালো নয় ।
ইঙ্গিতে একটা চেয়ার দেখালেন মারভিন লংফেলো । রানা বসার পর তিনি প্রশ্ন করলেন, ‘বাস্ট-এর কথা মনে আছে তো?’
‘ভুলি কি করে । তারাই তো আমাদের প্রধান প্রতিপক্ষ ।’
‘আজরাইলের ভূমিকা নিয়েছে ওরা, রানা। তোমার জান কবজ করতে চাইছে।’
*এখন তাহলে আপনি বিশ্বাস করেন মিসাইলটা আমাকে লক্ষ্য করে ছোঁড়া হয়েছিল?’
‘করি। তবে এবার আমরা অন্তত ওদের একজনকে ধরার সুযোগ পাবো আমরা জানি কখন ওরা তোমার ওপর হামলা করবে । কে করবে, তা-ও জানি শুধু জানি না কোথায় ।
‘জানি না, আবার জানিও, স্যার,’ বললো জন মিচেল । রানার দিকে তাকালো সে । ‘কোথায়, সেটা নির্ভর করে তোমার ওপর, রানা । তোমার পছন্দ মতো যে- কোনো জায়গায় ‘
‘আমার পছন্দমতো?’ রানা বিস্মিত। ‘আমার পছন্দ করা জায়গায় আমাকে আক্রমণ করবে?’
‘হ্যাঁ,’ মারভিন লংফেলোর পরিষ্কার বাদামী চোখ দুটো রানার মুখে স্থির হয়ে আছে । ক্রিসমাস উপলক্ষ্যে তোমাকে আমরা ছুটি দিতে চাই, রানা ।
‘রশি দিয়ে বাঁধা ছাগল, বাঘের টোপ ?
‘স্টকিং-হর্স,’ শুধরে দিলো জন মিচেল । ‘অথবা বলা যায় ক্রিসমাস হর্স, বাস্ট যাতে তোমার চিমনি বেয়ে নেমে এসে পা থেকে মোজা দুটো খুলে নিতে পারে । আলোচ্য ক্ষেত্রে, রানা, বাস্ট নারীমূর্তির আকৃতি ধরে আসবে তোমার দ্বারে।’
‘আচ্ছা,’ ঠোঁটে আড়ষ্ট হাসি ফুটলো রানার, ‘বুঝেছি । খেলাটা হবে মন্থরগতি ঘোড়া আর দ্রুতগতি নারীর মধ্যে, তাই কি?’
*এর আগেও এ-ধরনের ভূমিকায় সাফল্যের সাথে উতরে গেছো তুমি, রানা,’ হাসা তো দূরের কথা, মারভিন লংফেলোর চোখের পাতা পর্যন্ত কাঁপলো না । ‘আমার নিজস্ব কোনো মতামত থাকতে পারে না ? ‘
‘অবশ্যই আছে, কিন্তু আমরা জানি তুমি আমাদের সাথে এক মত হবে।’ মাথা নাড়লেন মারভিন লংফেলো। ‘এরইমধ্যে অনেক বেশি জেনে ফেলেছে বাস্ট । অ্যাটাক এইটিনাইনের সময় ছোবল তারা মারবেই, কিন্তু তোমাকে তারা প্রবল বাধা বলে মনে করছে। তবে, এখনো তারা আয়োজন সম্পর্কে বিশদ কিছু জানে না। যেমন, বডিগার্ড অপারেশনে ছয়জন এসএএস এজেন্টের নেতৃত্ব দিচ্ছো তুমি ।’
‘ভারি অদ্ভুত ব্যাপার তো,’ বললো রানা । “মি. লংফেলো, আমি নিজেও তো ওদের সম্পর্কে এই প্রথম শুনছি। থামলো রানা, জন মিচেলের ওপর থেকে চোখ ফিরিয়ে আবার বিএসএস চীফের দিকে তাকালো। ‘এতো সব যখন জানেন আপনারা, ওদের সাথে ওদের ভাষায় কথা বলছেন না কেন? কাজে হাত দেয়ার আগে ওদের হাতগুলো ভেঙে দিলেই তো পারেন ।’
দীর্ঘশ্বাস ফেললেন মারভিন লংফেলো। ‘ওদের রিঙ লিডারদের নাম জানি আমরা। তাদের মধ্যে দু’জনের চেহারা কি রকম তাও জানি, কিন্তু ব্রাদারহুড সংগঠনটা আসলে কতো বড় সে-সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই, ধারণা নেই কি রকম ফ্যানাটিক তারা । লিডারদের চারজন যথেষ্ট হিংস্র, জানি, তবে নেতাদের নেতা লোকটা, যাকে মাস্টারমাইও বলা হচ্ছে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের চাইতে বিনিয়োগ করা টাকা ফেরত পেতে বেশি আগ্রহী সে।’
‘একেবারে বাধ্য না হলে তোমাকে আমরা বিপদের মুখে ফেলতে চাইবো না, রানা,’ শুরু করলো জন মিচেল ।
বলো খুব বেশি বিপদে ।
-“বিশেষ করে যখন অ্যাটাক এইটিনাইনের সময় ঘনিয়ে আসছে,’ বললেন মারভিন লংফেলো । ‘কিলার হোয়েলে তোমাকে একান্তভাবে দরকার আমাদের । তবে, তার আগে, ওদের একজন লিডারকে আমরা মুঠোর ভেতর পেতে চাইছি । সুযোগ যখন একটা পেয়েছি, সেটা হাতছাড়া করি কেন । এখন তুমি কি বলো? ক্রিসমাসের ছুটিতে যাচ্ছো কোথাও?’
‘বছরের এই সময়টা ভারি অস্বস্তিবোধ করি আমি,’ নিজের নাকের ডগা অনুসরণ করে তাকালো রানা। ‘ক্রিসমাসের ছুটিতে আমার খ্রিস্টান বন্ধুরা যে রকম বাড়াবাড়ি করে, কখনোই পছন্দ করতে পারিনি। সেজন্যেই ইউরোপ- আমেরিকায় থাকলে এ-সময়টায় আমি দূরে কোথাও, নির্জন কোথাও পালিয়ে যাই ।’ কয়েক সেকেণ্ড বিরতি নিলো রানা, তারপর চোখ তুলে সরাসরি মারভিন লংফেলোর দিকে তাকালো। ‘আপনি নিশ্চয়ই ইতিমধ্যে কোনো জায়গার কথা ভেবেছেন, তাই না?’
সতর্কতার সাথে মাথা ঝাঁকালেন বিএসএস চীফ, জানেন না তাঁর বাছাই করা জায়গায় যেতে রানা রাজি হবে কিনা। ‘বেশ কয়েক বছর আগের কথা, মনে পড়ে, কি একটা কারণে গা ঢাকা দেয়ার দরকার হয় তোমার? কারণটা অবশ্য তোমরা, মানে মি. রাহাত খান বা তুমি আমাকে বলোনি । আমি তখন বিএসএস- এর ডেপুটি ডিরেক্টর। বে অভ নেপলস-এ, ইজকিয়া-র একটা ভিলায় পাঠিয়েছিলাম তোমাকে ।
‘গরমের দিন ছিলো—,’ পরিষ্কার মনে আছে রানার । গোটা এলাকাটা নির্জন আর নিরিবিলি, অপরূপ মহিমায় সেজে আছে প্রকৃতি । মাত্র দু’মাইল গাড়ি চালিয়ে গেলেই ভালো হোটেল পাওয়া যায়। দিনভর সুইমিং পুলে সাঁতার কাটো, কেউ উকি দেয়ার নেই। সাথে একজন কুক থাকতে পারে, থাকতে পারে মেইডসার্ভেন্ট । ‘খরচাটা, যতো দূর মনে পড়ছে, আপনারাই দিয়েছিলেন । কিন্তু ভিলাটা তো খোলা থাকে শুধু গরমের দিনে ।’
‘আমি বোধহয় মালিকপক্ষকে রাজি করাতে পারবো, চেহারায় একটা জেদ

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top