আকাবিরদের জিহাদী জীবন – জিয়াউর রহমান – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

আকাবিরদের জিহাদী জীবন – জিয়াউর রহমান – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ জিয়াউর রহমান

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১৩০

 আকাবিরদের জিহাদী জীবন – বইটির এক ঝলকঃ

১৭৩৯ ঈসায়ী সালের কথা, যখন ভারত উপমহাদেশে ঔপনিবেশিক ইংরেজদের দুঃশাসন জাতির কাধে চেপে বসেছিল । তখন শাহ্ ওলীউল্লাহ (রহঃ) -এর ঘরে জন্ম নেন এক সৌভাগ্যবান সাহসী সন্তান। যার আলোকোজ্জল ললাটে বিচ্ছুরিত হচ্ছিল খ্যাতির আলোকচ্ছটা।
ক্ষণজন্মা এই শিশু শৈশবেই পবিত্র কুরআন মুখস্থ করেন। এরপর মাত্র তের বছর বয়সে নাহু, সরফ, মান্তিক, আকাঈদ ইত্যাদিসহ গোটা পাঠ্যসূচীর সব কিতাব পড়ে শেষ করে ফেলেন। তার এই অভূতপূর্ব প্রতিভা বিচক্ষণ লোকদেরকে রীতিমত তাক লাগিয়ে দেয়। ইতিহাসের সুনিপুণ, দক্ষ, বিচক্ষণ ও সাহসী এই সন্তান ছিলেন শাহ্ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিসে দেহলভী (রহঃ)। শাহ্ আব্দুল আযীয (রহঃ) তার পিতার অপরিসীম স্নেহ, সুচারু তত্ত্বাবধান এবং ঐকান্তিক সুনজরে থেকেই তাঁর তালীম ও তারবিয়তের ধাপগুলো অতিক্রম করেন।
এর পর শাহ্ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিসে দেহলভী (রহঃ) হাদীসের উচ্চতর জ্ঞান লাভের জন্য পিতা শাহ্ ওলীউল্লাহর (রহঃ) দরসে অংশ গ্রহণ করতে শুরু করেন। এভাবে ইলমে হাদীসের জগতেও তিনি বিরাট বুৎপত্তি অর্জন করেন। বর্তমানে গোটা পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও ভারতের সমস্ত আলেমদের হাদীসের সনদ তাঁকে কেন্দ্র করে এক হয়ে যায়। কিছু দিন পর তিনি নিজেই ইলমে হাদীসের দরস দিতে শুরু করেন। এদিকে তাঁর অসাধারণ স্মৃতিশক্তির প্রসিদ্ধি দিন দিন চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। তাঁর সূক্ষ্মদর্শিতা, সূক্ষ্মচিন্তা, যথার্থ প্রমাণ উপস্থাপন এবং ইলম ও জ্ঞানের পরিপক্কতা ক্রমান্বয়ে তাঁকে উজ্জ্বলতর করে তোলে। তখন গোটা ছাত্র সমাজ তাঁর স্বভাবজাত যোগ্যতা ও আল্লাহ প্রদত্ত মেধা ও পাণ্ডিত্যের ভূয়সী প্রশংসা করতে থাকে। তাঁর ক্লাসে কোন কঠিন থেকে কঠিনতর মাসআলা উপস্থাপিত হলেও তিনি মাত্র কয়েক মিনিটে তার সঠিক সমাধান দিয়ে দিতেন। কিতাবের কঠিন থেকে কঠিনতর অধ্যায় এবং চরম দুর্বোধ্য বিষয়গুলোও তার সাগরের উত্তাল তরঙ্গসম আলোচনা খড়-কুটোর মত ভাসিয়ে নিয়ে যেত।
ইলমে ওহীর অগাধ পান্ডিত্বের পাশাপাশি শাহ্ আব্দুল আযীয (রহঃ) -এর ভূগোল, জ্যামিতি, দর্শন এবং গণিত বিদ্যায়ও ছিল অসাধারণ দক্ষতা। পিতার অবর্তমানে শাহ্ আবদুল আজীজ (রহঃ) যখন রীতিমত পিতার আসনে সমাসীন হলেন তখন তাঁর চোখের কোনে ভেসে ওঠল নির্যাতিত, নিপীড়িত ও নিষ্পেষিত মানবতার করুণ চিত্র। গোটা ভারতের রাজনীতির প্রাণ কেন্দ্র দিল্লীতে বসে তিনি বেদনার্ত হৃদয়ে, অশ্রুসিক্ত নয়নে প্রত্যক্ষ করেন সাত সমুদ্র তের নদী পাড়ি দিয়ে আসা শ্বেত ভল্লুকদের অকথ্য ও অবর্ণনীয় নির্যাতনের গগন চুম্বী পাহাড়।
তখন হযরত শাহ্ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিসে দেহলভী (রহঃ) সবকিছু উজাড় করে দিয়ে এগিয়ে আসেন বেদনার্ত ও শোক-দগ্ধ জনতাকে মুক্ত করতে । তিনি ছিলেন যথার্থ মুসলমান এবং সত্যিকার ত্যাগী ও দেশপ্রেমিক নেতা। কৃষক-শ্রমিক, মাঝি-মাল্লা, জেলে, তাঁতী, কামার, কুমার সকলেরই দুঃখ দুর্দশা ও শোচনীয় অবস্থা শাহ আব্দুল আযীয (রহঃ) কে দারুণভাবে ব্যথিত ও প্রভাবিত করে।
বৃটিশ বেনিয়াদের চরম নির্যাতনের মুখে যখন রাজপথ শূণ্য, যখন উৎপীড়িত জনতা নিরুপায় হয়ে দিক-বিদিক ছুটোছুটি করছে, যখন নির্যাতনের তীব্রতায় আলেমদের প্রতিবাদী কণ্ঠও স্তব্ধ, ঠিক এমনই এক ক্রান্তি লগ্নে শাহ্ আব্দুল আযীয (রহঃ) অবতীর্ণ হোন প্রতিবাদী ভূমিকায়। ভারতের সুদীর্ঘ ইতিহাসে এটাই প্রথম কোন শীর্ষ আলেমের স্বৈরাচারী-জালিম শাহীর বিরুদ্ধে সরাসরি অবস্থান।
বৃটিশ বেনিয়াদের এই চরম নির্যাতনের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করে শাহ আব্দুল আযীয (রহঃ) গোটা ভারতবর্ষে ফতোয়া জারী করলেন যে, এখন থেকে এদেশের মুসলমানরা ‘দারুল হরব’ তথা শত্রু কবলিত দেশের অধিবাসী। সুতরাং ঈমান, ইসলাম ও দেশ রক্ষার্থে এবং ক্ষমতার মসনদ থেকে চির অভিশপ্ত কাফের অমুসলিমদের অপসারণ করে জিহাদে ঝাঁপিয়ে পড়া এখন প্রতিটি মুসলমানের উপর ফরয। যে এই ফরয আদায়ে সামান্যতমও শৈথিল্য প্রদর্শন করবে সে যেন কুরআনের সুস্পষ্ট সিদ্ধান্তের বিপক্ষে অবস্থান নিল ।
শাহ্ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিসে দেহলভী (রহঃ) -এর এই ফতোয়া ছিল বৃটিশ বিতাড়নের মধ্য দিয়ে ভারত বর্ষের ভাগ্য পরিবর্তনের প্রথম পদক্ষেপ। তাঁর এই ফতোয়ায় ইংরেজদের ভীত কেঁপে ওঠে। সত্যি বলতে কি; ভারতের স্বাধীনতার জন্য এই ফতোয়াই ছিল ভিত্তিপ্রস্তর।
ভারতের পথে-প্রান্তরে অলিতে-গলিতে এবং ঘরে ঘরে যখন এই ফতোয়ার বাণী পৌঁছে গেল, তখন নির্যাতিত নিপীড়িত মুসলমানগণ উদ্যোম ফিরে পেল। পেল নব চেতনা। শুরু হল ইংরেজ বিরোধী গণজোয়ার । জুলুম-অত্যাচারের প্রচণ্ডতায় এক সময় যারা ছিল নীরব এখন তারা পুরোদমে সরব। এক সময় যারা ইংরেজ বিরোধী কথা বলতে সাহস পেত না আজ তারা বলিষ্ঠ ও সক্রিয় কর্মী।
শাহ্ আব্দুল আযীয (রহঃ) ছিলেন এক জন বিজ্ঞ, সুদক্ষ লেখক এবং একজন অনলবর্ষী বক্তা। জাতির এই দুর্দিনে তিনি লিখনির মাধ্যমে ভারতবাসীকে বুঝিয়ে দিলেন স্বাধীনতার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা। পাশাপাশি জানিয়ে দিলেন গোলামী ও পরাধীনতার ক্ষতি ও অপকারিতা। মঙ্গল ও শুক্রবার সপ্তাহে দু’দিন দিল্লীতে তাঁর দরস হত। এই সুবাদে তিনি অত্যন্ত জ্বালাময়ী কন্ঠে ভাষণ দিতেন যাতে মুসলমানদের মাঝে স্বাধীনতার প্রেরণা এবং তা অর্জনে নব চেতনার সৃষ্টি হয়। শাহ্ আব্দুল আযীয (রহঃ) -এর লিখিত একটি আরবী কিতাব থেকে জানা যায় যে, তিনি শিখ ও মারাঠাদের লুটতরাজের বিরুদ্ধেও বহু কাজ করেছেন। প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন।
তাঁর ক্লাসের পরিধি ছিল বহু বিস্তৃত। যারা তাঁর ক্লাসে আসত তারা মুজাহিদ ও যোগ্য নেতৃত্বের অধিকারী হয়ে ফিরত এবং দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে পড়ে তারা ইংরেজ বিরোধীতার বীজ রোপন করত।
শাহ্ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিসে দেহলভী (রহঃ) সত্তর বছর বয়সে ইহলোক ত্যাগ করে আল্লাহর সান্নিধ্যে চলে যান। বিদায় কালে তিনি নিজ হাতে গড়া এমন একদল আত্মোৎসর্গী কর্মী বাহিনী রেখে যান যারা ভারতবর্ষের স্বাধীনতার পতাকা হাতে এগিয়ে যান। তাদের মধ্যে হযরত শাহ ইসমাইল শহীদ, সাইয়্যেদ আহমদ শহীদ বেরলভীও ছিলেন। যাঁরা পাঞ্জাবে হিন্দুদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে বালাকোটের রণাঙ্গণ সৃষ্টি করে ইসলামের পতাকাকে সমুন্নত করেছেন। হিন্দুস্তানের মাটিতে উপনিবেশিক রূপে আসা অভিশপ্ত ইংরেজ বেনিয়াদের দেড় শ’ বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। ইতোমধ্যেই তারা বিহার ও বাংলার শাসন ক্ষমতা করায়ত্ব করে নিয়েছে। কুক্ষিগত করে ফেলেছে গোটা শাসন যন্ত্রকে। ফলে গোটা দেশ হয়ে পড়েছে স্মরণ কালের সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখী। রাজপথ থেকে শুরু করে সর্বত্রই বিরাজ করছে ত্রাসের রাজত্ব। পাড়া-মহল্লা, অলি-গলি সর্বত্রই চলছে মহা বিপদের ঘনঘটা।
এহেন পরিস্থিতিতে সামনে এগিয়ে আসার মত কোন নিৰ্ভীক মুজাহিদও ছিলো না। ছিল না ব্যঘ্র হুংকার ছেড়ে নেতৃত্বের ঝান্ডা হাতে তুলে নেয়ার মত কোন সাহসী মুজাহিদ । তখন নির্যাতিত, নিপীড়িত, নিষ্পেষিত মজলুম মানবতার গগণ বিদারী আর্তনাদে গোটা নৈসর্গিক ক্রিয়া স্থবির হয়ে পড়ছিল। ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ছিল গোটা উপমহাদেশের আকাশ বাতাস, যাতনা-ক্লিষ্ট মজলুম মানবতার আহাজরি সপ্তাকাশের দুর্ভেদ্য ফটক ডিঙিয়ে পৌঁছে যাচ্ছিল আরশে আযীমে। ভারত উপমহাদেশের এমনই এক সন্ধিক্ষণে, এমনই এক ক্রান্তিমুখর পরিস্থিতিতে হায়দার আলী নামক এক সেনাপতির গৃহে জন্ম লাভ করেন পরম সৌভাগ্যশালী এক পুত্র সন্তান, তার ধরাগমন পিতা-মাতার আশা-আকাংখা এবং হতভাগা জাতির লালিত স্বপ্নের শুষ্ক উদ্যানে বয়ে দিল বসন্তের সুশীতল সমীরণ। আশার কাননে জন্ম দিল রাশি রাশি পত্র-পল্লব, আর নয়নাভিরাম ফুলফল। ভাগ্য এমনই সুপ্রসন্ন যে, এই নবজাতক শিশুটির গোটা দেহ জুড়ে বিচ্ছুরিত হচ্ছিল বিশিষ্ট বুযুর্গ হযরত টিপু সুলতান (রহঃ)

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top