আবার উ সেন – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

আবার উ সেন – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ কাজী আনোয়ার হোসেন

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ২১৮

আবার উ সেন – বইটির এক ঝলকঃ

ডিপার্টমেন্টের চাকরি ছাড়ব না। তবে, প্রয়োজন দেখা দিলে ভবিষ্যতে আমাকে ডাকা হতে পারে।’
‘এবং প্রয়োজন দেখা দেয়ায় ডাকা হয়েছে ওকে,’ বললেন কলিন ফস, রানার দিকে তাকিয়ে আছেন তিনি। ‘এত কথা বলার কারণ, মি রানা, আপনাকে জানানো যে যাকে আমরা “ফেস” বলি রিটা হ্যামিলটন তা নয়।’ অর্থাৎ তিনি বলতে চাইছেন দুনিয়ার এসপিওনাজ সমাজ রিটা হ্যামিলটনকে চেনে না। ‘আপনার সাথে এই কেসটায় কাজ করার জন্যে সহকারিণী হিসেবে ঠিক এমন একটি মেয়েই দরকার, আমেরিকান স্পাই বলে যাকে কেউ চিনতে পারবে না…’ বাধা দিল রানা, “মি. ফর্বস, আমি আগেই বলেছি…’
*একটু পরই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে, মি রানা,’ কলিন ফর্বস আশ্বাস দিলেন। ‘এই মুহূর্তে বড় একটা কাজে আপনি ব্যস্ত, আমি ভুলিনি। আমাদের কাজটা আপনার কাজের চেয়ে কোন অংশে ছোট নয়, এটুকু জানি বলেই বিশ্বাস আছে আপনি আমার অনুরোধ ফেলবেন না। আমার অনুরোধে যদি কাজ না হয়…,’ কোটের পকেট হাতড়ে অনেকগুলো কাগজ বের করলেন তিনি, একাধিক এনভেলাপও দেখা গেল সেগুলোর মধ্যে। তার মধ্যে একটায় প্রেসিডেন্সিয়াল সীল দেখতে পেল রানা। আশ্বস্ত হয়ে বাকি কাগজের সাথে সীল মারা এনভেলাপটাও আবার পকেটে রেখে দিলেন কলিন ফর্বস হাতঘড়ি দেখল রানা। ‘অনুরোধ করব তাড়াতাড়ি শেষ করবেন, মি. ফর্বস । “ব্যাপারটা হলো মলিয়ের ঝান-কে নিয়ে, শুরু করলেন সি.আই.এ. চীফ । কোটের আরেক পকেট থেকে ছোট একটা ফোল্ডার বের করেছেন তিনি, হাতের চশমাটা নাকে এঁটে সেটার পাতা খুললেন ।
তথ্যগুলো সাজিয়ে লেখা আছে, পড়ে শোনালেন রানাকে। উনিশশো ত্রিশ সালে নিউ ইয়র্কে জন্ম মলিয়ের ঝানের। ফরাসী বাবা আর জার্মান মায়ের একমাত্র সন্তান। মা-বাবা দু’জনেই ছিল মার্কিন নাগরিক। মলিয়ের ঝান তার প্রথম এক মিলিয়ন ডলার রোজগার করে মাত্র বিশ বছর বয়েসে, পরবর্তী তিন বছরে মালটি মিলিওনেয়ার বনে যায় সে। বয়স হবার পর থেকেই আমেরিকান নাৎসী পার্টির সদস্য হয়, পার্টিতে সৎ বিশ্বস্ত আর নিবেদিতপ্রাণ বলে যথেষ্ট খ্যাতি আছে। ব্যাপারটা গোপন রাখার চেষ্টা করলেও সফল হয়নি। ‘উনিশশো ষাট সালে সে তার সমস্ত ব্যবসায়িক স্বার্থ চড়া দামে বিক্রি করে দেয়, সেই থেকে মধ্যযুগের রাজাদের মত বিলাসবহুল জীবনযাপন করছে সে। নিজের রাজ্য ছেড়ে বড় একটা বের হয় না…’
‘নিজের কি…?’ ভুরু কুঁচকে উঠল রানার ।
“কথার কথা, মি. রানা। রিটা ব্যাখ্যা করবে।
‘আমারিলো, টেক্সাস থেকে আশি মাইল দূরে মলিয়ের ঝানের রয়েছে একশো পঞ্চাশ বর্গমাইল সম্পত্তি। একসময় জায়গাটা মরুভূমি ছিল। তার রাজ্য বলাটাই ঠিক। পানি তো নিয়ে গেছেই, বনভূমি তৈরি করে তার ভেতর বাড়ি বানিয়েছে, তারপর আক্ষরিক অর্থেই সীল করে দিয়েছে। কোন রাস্তাই ঝান র‍্যাঞ্চে পৌঁছায়নি। দু’ভাবে আপনি ওখানে যেতে পারেন ছোট একটা এয়ারস্ট্রিপ, আর একটা প্রাইভেট মনো-রেল সিস্টেম আছে। শহরের পনেরো মাইল বাইরে পরিত্যক্ত একটা স্টেশন আছে তারমানে আমারিলো-র কথা বলছি মাঝে মধ্যে স্টেশনটা ব্যবহার করে মলিয়ের ঝান, তবে আপনার সাথে তার খুব যদি দহরম- মহরম থাকে তাহলেই শুধু মনো-রেলে চড়ার সুযোগ পাবেন। সে যদি অনুমতি দেয় নিজের গাড়ি নিয়েও যেতে পারেন, রেল সিস্টেমে গাড়ি বহন করার ব্যবস্থা আছে, আর র‍্যাঞ্চে আছে রাস্তা- কমপাউন্ডের ভেতর। ভেতরে বড় বড় বিল্ডিং দেখতে পাবেন, অটোমোবাইল রেস ট্র্যাক, ঘোড়া, লেক, সব আছে।’
নির্লিপ্ত চেহারা নিয়ে শুনে যাচ্ছে রানা, যেন ধৈর্যের প্রতিমূর্তি। রিটা হ্যামিলটন এমনভাবে চুপ করে আছে যেন রানাকে প্রশ্ন করার সুযোগ দিচ্ছে।
কিন্তু রানা কোন প্রশ্ন করল না দেখে নিজেই উত্তর দেয়ার ভঙ্গিতে আবার শুরু করল, ‘না, ওখানে আমি যাইনি। তবে ছবিগুলো সবই দেখেছি-স্যাটেলাইট থেকে তোলা। আমাকে ব্রিফ করার সময় দেখানো হয়। এই মুহূর্তে ওগুলো আমার সাথেই আছে। একশো পঞ্চাশ বর্গমাইল এলাকা, পুরোটাই পাঁচিল আর কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘেরা। আর মলিয়ের ঝানের রয়েছে নিজস্ব সিকিউরিটি আউটফিট।’
আবার চুপ করে রানার দিকে তাকাল রিটা হ্যামিলটন, চোখের ভাষা দেখে বোঝা গেল সে যেন ভাবছে লোকটা বোকা, নাকি অভদ্র ? কৌতূহলবশতঃও তো মানুষ কিছু জিজ্ঞেস করে।
নিচু টেবিল থেকে সিগারেটের প্যাকেট আর লাইটার তুলল রানা। প্যাকেটটা রিটার দিকে বাড়িয়ে ধরল, কিন্তু মাথা নাড়ল সে। কলিন ফর্বস রানার দেখাদেখি পাইপে তামাক ভরতে শুরু করেছেন। ‘রাজ্যই হোক আর র‍্যাঞ্চই হোক,’ বলল রানা, ‘তার অপরাধটা কি? টাকা বানানো ছাড়া?’
“সেটাই সমস্যা,’ বলে অনিশ্চিত ভঙ্গিতে বসের দিকে তাকাল রিটা হ্যামিলটন ।
‘বলো, সব ওঁকে বলো, রিটা,’ অনুমতি দিলেন কলিন ফর্বস। ‘সব কথাই জানা দরকার ওঁর।’
‘মাস কয়েক আগে পর্যন্ত গোটা ব্যাপারটা অস্পষ্ট ছিল।’ পায়ের ওপর পা তুলে দিয়ে সোফায় হেলান দিল রিটা হ্যামিলটন। স্কার্টে টান পড়ায় বেরিয়ে পড়ল মসৃণ, ফর্সা হাঁটু । অন্যমনস্ক ভঙ্গিতে সিলিঙের দিকে তাকালেন সি.আই.এ. চীফ। ‘রাজনৈতিক অর্থে অনেক দিন থেকেই মলিয়ের ঝানকে সন্দেহের চোখে দেখা যাচ্ছে। পলিটিক্যাল অ্যাকটিভিটি থেকে বরাবর দূরে থাকায় তাকে নিয়ে অবশ্য বিশেষ মাথা ঘামাতে হয়নি। কিন্তু সে যে পিছনের দরজা দিয়ে হাতে রাজনৈতিক ক্ষমতা পাবার চেষ্টা চালিয়েছে তার প্রমাণ আছে। একাধিক রাজনৈতিক দলের সাথে গোপনে ভিড়তে চেয়েছে সে, কিন্তু কোন দলই তাকে সুযোগ দেয়নি।’
‘রাজনৈতিক দলগুলো সম্পর্কে আমার ধারণা আপনি দেখছি বদলে দিতে চাইছেন,’ বলল রানা। ‘এতদিন জেনে এসেছি ধড়িবাজ লোকদেরই আড্ডা…’
‘দলগুলো তার টাকা যাকে চাঁদা বলা হয় নিয়েছে, কিন্তু তাকে নেয়নি, ব্যাখ্যা করল রিটা হ্যামিলটন, এই প্রথম ক্ষীণ একটু হাসল সে। রানা লক্ষ করল, হাসলে জর্জ হ্যামিলটনের সাথে চেহারার আর একটু মিল পাওয়া যায়। ‘ওয়াটার গেট কেলেঙ্কারি ফাঁস হবার সময় জানা গেছে, কেলেঙ্কারিটা ধামাচাপা দেয়ার জন্য যে টাকা খরচ হয়েছিল তার একটা মোটা অংশ এসেছিল মলিয়ের ঝানের পকেট থেকে। আরও জানা গেছে, লোকটা আমাদের প্রশাসনেও ঢোকার চেষ্টা করেছে-স্টেট ডিপার্টমেন্টে।’
মোটেও আগ্রহ বোধ করছে না রানা। হাতঘড়ি দেখল ও। অফিসে যেতে দেরি হয়ে যাচ্ছে। স্বয়ং সি.আই.এ. চীফ উপস্থিত রয়েছেন, তা না হলে আরও আগেই ওদেরকে বিদায় করে দিত। ‘স্টেট ডিপার্টমেন্টে ঢুকতে চায় লোকটা?’ নিস্তব্ধতা অস্বস্তিকর হয়ে ওঠায় জিজ্ঞেস করল রানা। ‘কেন? তার ইচ্ছে মার্কিন সরকারকে মুঠোয় আনা?’
“কষ্ট কল্পনা বলে মনে হলেও, ওয়াকিফহাল মহলের অনেকেরই তাই ধারণা । বর্তমান যুগে শুধু আমীর আর শেখরাই ধনকুবের মনে করলে ভুল হবে। টেক্সাসে এমন সব পরিবার আছে যারা আক্ষরিক অর্থেই রাজ-রাজড়াদের মত জীবনযাপন করে। তাদের মধ্যে এমন লোকও আছে, সব দেশেই দু’চারজন যেমন থাকে, যারা বিপজ্জনক ফ্যান্টাসীতে ভোগে। বিপজ্জনক ফ্যান্টাসীর সাথে যখন সীমাহীন বিত্ত-বৈভব যোগ হয়…
রানার দিকে তাকিয়ে মাথা ঝাঁকালেন কলিন ফর্বস, যেন রিটা হ্যামিলটনের যুক্তি অকাট্য। ‘এবং ভুলে গেলে চলবে না যে মলিয়ের ঝানের ফ্যান্টাসী নাৎসী আইডিওলজি থেকে তৈরি।’
“কিন্তু হোক নাৎসী আদর্শে বিশ্বাস,’ বলল রানা, ‘তাকে বিপজ্জনক বলা যায় কিভাবে সে যদি…’
“সে যদি কিছু না করে, তাই না?’ রানার দিকে সরাসরি তাকাল রিটা হ্যামিলটন। ‘হ্যাঁ, আপনার সাথে একমত আমি। কিন্তু সে যে কিছু করছে তার আভাস পাচ্ছি আমরা। গত এক বছর ধরে র‍্যাঞ্চে অদ্ভুত একদল লোককে অভ্যর্থনা জানিয়ে আসছে ঝান। নিরাপত্তা রক্ষার ব্যবস্থা জোরদার করেছে সে, স্টাফদের সংখ্যাও আগের চেয়ে অনেক বেশি।’
আবার হাতঘড়ি দেখে নিয়ে শিরদাঁড়া খাড়া করল রানা, কলিন ফর্বসের দিকে তাকাল। ‘মি. ফর্বস, এবার আমাকে মাফ করতে হবে। দুঃখিত, আপনাদের কথা সবটা শোনা হলো না। দয়া করে যদি…’
‘মনে নেই, আপনি আমাকে কফি অফার করেছিলেন?’ চশমার কাচ মুছতে মুছতে বললেন কলিন ফর্বস । ‘অফারটা আমি গ্রহণ করেছি. মি. রানা
হেসে ফেলল রানা। সোফা ছাড়তে যাবে, মৃদু হেসে রিটা হ্যামিলটন বলল, ‘কাজটা মেয়েদের, আপনি শুধু আমাকে কিচেনটা দেখিয়ে দিন ।
একাই কফি বানিয়ে নিয়ে এল রিটা হ্যামিলটন ।
কাপে চুমুক দিয়ে কলিন ফর্বস বললেন, ‘তাড়াতাড়ি করো, রিটা। দেখছ না, মি. রানা অধৈর্য হয়ে উঠেছেন।’
মলিয়ের ঝান যে বড় ধরনের কিছু একটা করতে যাচ্ছে সে ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই আমাদের,’ বলল রিটা হ্যামিলটন। সংক্ষেপে ঘটনাগুলো জানাল সে রানাকে। মলিয়ের ঝান আর তার র‍্যাঞ্চের ওপর নজর রাখছিল এফ.বি.আই.। খোঁজ-খবর নিতে গিয়ে ট্যাক্স ফাঁকি দেয়ার কয়েকটা ঘটনা ফাঁস হয়ে যায়। ইন্টারনাল রেভিনিউ সার্ভিসকে তারা কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য যোগান দেয়। এরপর আই.আর.এস. এবং এফ.বি.আই. একসাথে কাজ করার একটা অজুহাত খুঁজে পেল। গত জানুয়ারি মাসে, দুটো ব্রাঞ্চ থেকে দু’জন করে চারজন এজেন্ট ওখানে যায় মলিয়ের ঝানের সাথে কথা বলার জন্যে। গেল কিন্তু ফিরে এল না। এফ.বি.আই. তাদের আরও দু’জন লোককে পাঠাল। তারাও গায়েব হয়ে গেল। এরপর অ্যামারিলো পুলিস ঝানের সাথে যোগাযোগ করল, তদন্ত করতে কোন বাধা দিল না ঝান। তার কথা, এ-ব্যাপারে বিন্দু-বিসর্গ কিছুই সে জানে না, কাজেই পুলিসকে কিছুই সে বলতে পারবে না। কোন প্রমাণ পাওয়া গেল না, বাধ্য হয়ে র‍্যাঞ্চ ছেড়ে বেরিয়ে এল পুলিস। এরপর ব্যাপারটা চলে এল সি.আই.এ-র হাতে, তারা একটা মেয়েকে পাঠাল। কিন্তু মেয়েটারও কোন খবর নেই ।
“তারপর, এই হপ্তাখানেক আগে, ব্যাটন রুজ, লুসিয়ানার কাছে জলাভূমিতে একটা লাশ পাওয়া গেল,’ বলে চলেছে রিটা হ্যামিলটন। ‘ব্যাপারটা গোপন রাখা হয়, নিউজ মিডিয়াকে কিছুই জানতে দেয়া হয়নি। লাশটা এমনিতে চেনার উপায় ছিল না, তবে এক্সপার্টরা পরীক্ষা করে জানিয়েছে মেয়েটা সি.আই.এ-র পাঠানো সেই এজেন্টই । তারপর থেকে এক এক করে বাকি সবার লাশ পাওয়া গেছে, ওই একই জায়গার কাছাকাছি। দুটো লাশ সনাক্ত করা সম্ভব হয়নি, বাকিগুলোকে দাঁত পরীক্ষা করে চেনা গেছে। মলিয়ের ঝানের বিরুদ্ধে প্রমাণ সংগ্রহের জন্যে যাকেই পাঠানো হয়েছে টেক্সাসে, তারই লাশ পাওয়া গেছে লুসিয়ানায় ।’
‘হ্যাঁ,’ একটা দীর্ঘশ্বাস চেপে বলল রানা, মাথা গরম হওয়ার মত একটা ব্যাপার বটে। কিন্তু সে আপনাদের। এর মধ্যে আমি কেন নিজেকে জড়াতে যাব?’ ‘স্যার,’ রিটা হ্যামিলটন বলল, ‘মি. রানাকে ওটা আপনি দেখান।
এবার কোটের বুক পকেট থেকে একটা কাগজ বের করলেন কলিন ফস, বাড়িয়ে ধরলেন রানার দিকে। ছেঁড়া একটা কাগজ, ফটোকপি করা। টাইপ করা লেখাগুলো ঝরঝরে, পড়তে কোন অসুবিধে হলো না। তবে ছেঁড়া বলে অনেক বাক্যই অসম্পূর্ণ লাগল। বোঝা যায় একটা চিঠির অংশবিশেষ। রানা যা পড়ল তা হুবহু এরকম :
ans should, of course, be destroyed. But he wished make certain you had full knowledge of our substan- I backing, world-wide. The initial thrust will most telling in Europe, and the Mid-East. But, ntually, it will leave the United States wide pen. With careful manipulation we can successfu ivide and rule-or at least
I look forward to our next meeting.
সই করা হয়েছে এক টানে, তবে নামটা পরিষ্কার পড়া গেল। সও মং। রানার পেটের ভেতর মোচড় দিয়ে উঠল, শক্ত হয়ে গেল পেশী।
‘কোথায়….?’
‘কোথায় পাওয়া গেছে?’ জিজ্ঞেস করল রিটা হ্যামিলটন। ‘যে মেয়েটার কথা বললাম, তার কাপড়ের ভেতর । লাশ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।’
কলিন ফর্বস বললেন, ‘আমাদের ল্যাংলির অ্যানালিস্টরা ভাবছে, হার্মিস নামে একটা টেরোরিস্ট অর্গানাইজেশনের সাথে হাত মিলিয়েছে মলিয়ের ঝান। আমার জানামতে এ-ব্যাপারে আপনি একজন এক্সপার্ট, মি. রানা
‘সও মং মারা গেছে,’ ঠাণ্ডা গলায় বলল রানা।
‘আমাদের রিপোর্টও তাই বলে,’ সমর্থন করলেন সি. আই. এ. চীফ। ‘কিন্তু বংশধরদের কেউ হতে পারে না? তার কোন ভাই? কিংবা আর কেউ? যখন বললেন বড় একটা কাজে আপনি ব্যস্ত, আমি ধরে নিয়েছিলাম হার্মিস আর সও মংই আপনার ব্যস্ততার কারণ হবে, নাকি আমার ভুল হয়েছে? সাম্প্রতিক হাইজ্যাক ঘটনাগুলোর জন্যে তো ওরাই দায়ী, নাকি?’
রানা কোন মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকল ।
‘আমরা কি জানতে পারলাম সেটা একটু খতিয়ে দেখা যাক,’ বললেন কলিন ফস। ‘কেউ একজন সও মং নাম ধারণ করে অসম্ভব ধনী এক টেক্সান-এর সাথে জোট বেঁধেছে।’ রানার হাতের কাগজটার দিকে ইঙ্গিত করলেন তিনি। ‘ওটা থেকে আমরা জানতে পারছি যে মলিয়ের ঝান, এবং হার্মিস, দুনিয়া জুড়ে আগুন লাগাবার একটা ষড়যন্ত্র করছে। ঈশ্বর সাক্ষী, এমনিতেই দুনিয়ার অবস্থা নরকতুল্য হয়ে আছে-সরকারগুলো দুর্নীতির আখড়া, রাজনৈতিক অস্থিরতা তুঙ্গে, অবক্ষয়ের শেষ ধাপে পৌঁছে গেছে সমাজ, ভয়াবহ মুদ্রাস্ফীতির তলায় চাপা পড়ে যাচ্ছে মানুষ, সম্পদ আর মেধা পাচার অতীতের সমস্ত রেকর্ড ভেঙে ফেলছে, শরণার্থী সমস্যা হয়ে উঠছে প্রকট; এরমধ্যে আবার যদি বড় ধরনের কোন ফ্রিল্যান্স অপারেশন শুরু হয়, সভ্যতাকে কেউ আমরা রক্ষা করতে পারব না। অতীত অভিজ্ঞতা থেকে আমরা জানি, দুনিয়া জুড়ে সমস্যা সৃষ্টি করার ক্ষমতা হার্মিস রাখে।
রানা ভাবছে। সও মং বা হার্মিস যে একটা বিপজ্জনক হুমকি তাতে কোন সন্দেহ নেই। এবং বসেরও ধারণা প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে লাগতে হলে বাইরের সাহায্য দরকার হবে ওর। কিন্তু ছদ্মবেশী সও মং আস্তানা গেড়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, কাজেই একদিক থেকে সমস্যাটা সি.আই.এ-র। কিন্তু সি.আই.এ-র সাহায্য নেয়ার ইচ্ছে ওর নেই, এমনকি নতুন ডিরেক্টরের অনুরোধেও নয়। অতীতে দেখা গেছে, শেষ পর্যন্ত কোন না কোন ঘাপলা করে ওরা, কথা দিয়ে কথা রাখে না। হার্মিসের বিরুদ্ধে একা কাজ করাই সব দিক থেকে ভাল। পরিষ্কার ভাষায়, সবিনয়ে সেকথাই কলিন ফসকে জানিয়ে দিল ও, বলল, ‘দুঃখিত, মি. ফর্বস । ব্যক্তিগত কিছু অসুবিধে আছে, আপনাদের সাহায্য আমি নিতে পারি না।
“তারমানে আমি ফেল করলাম’ মৃদু হেসে বললেন সি.আই.এ. চীফ। ‘দেখা যাক ইনিও ফেল করেন কিনা। বলে কোটের পকেট থেকে এবার প্রেসিডেনশিয়াল সীল মারা এনভেলাপটা বের করলেন তিনি। এনভেলাপটা রানার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললেন, ‘পড়ে দেখুন না, প্লীজ ।
প্রেসিডেনশিয়াল লেটারপ্যাডে টাইপ করা একটা চিঠি, নিচে প্রেসিডেন্টের

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top