আবার সোহানা – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।
বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ কাজী আনোয়ার হোসেন
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১৯৫
আবার সোহানা – বইটির এক ঝলকঃ
শাইখের সামনে এসে দাঁড়ালেন। সংক্ষেপে সবই বললেন তিনি, ফিসফিস করে ।
‘সর্বনাশ! আপনি গর্দভ না কী?’
চেহারায় অপরাধী ভাব, হাত কচলাচ্ছেন কাদরি, প্রায় কান্না- করুণ সুরে বললেন, ‘আর কী করার ছিল আমার, বলুন?’
‘আর কী করার ছিল মানে?’ গর্জে উঠল শাইখ। ‘আপনার উচিত ছিল ঝামেলা মিটিয়ে আসা তাকে মেরে ফেলা!’
চূড়া পেরিয়ে প্রায় ছয়শো ফুট নেমে এসেছে ওরা, এই সময় পুরানো অ্যালুমিনিয়াম রঙের আকাশ কালো হতে শুরু করল। গোধূলি নামছে এবং ঝড়ও আসছে ।
প্রথমে প্রবল হলো তুষারপাত, দৃষ্টিসীমা কমে এল কয়েক ফুটে। তারপর শুরু হলো উপরের স্তরের মেঘে মেঘে সংঘর্ষ। প্রতিটি বজ্রপাতে ওদের সবার দাঁত পরস্পরের সঙ্গে বাড়ি খাচ্ছে।
শায়লা খুব গম্ভীর হয়ে আছে। আব্বু যে সত্মা পামেলাকে হোটেল কামরায় বেঁধে রেখে এসেছে, এটা পরিষ্কার বুঝতে পেরেছে সে। তারপর শাইখ আর বোকাচিকে বিষয়টা নিয়ে আলাপ করতেও শুনেছে।
“ইজরায়েলি বা লেবাননী স্পাই, যারাই আসুক, লা-খিরাজের ওদিক থেকে আসবে বলে মনে করি না,’ এটা শাইখের ধারণা। ‘না, তবে মোসাদ এজেন্ট পাঠাবে সীমান্ত পথে,’ একমত হলো বোকাচি। ‘ওদিকে ছাড়া ছাড়া ভাবে কিছু ইহুদি পল্লী আছে।’
সন্ধ্যার আরও অনেক পর থামল ওরা। অন্ধকার, তুমুল বাতাস আর তুষারপাতের মধ্যেও শাইখের ইন্সটিঙ্কট নির্ভুল সার্ভিস দিচ্ছে। ‘এটা দজ্জাল গিরিখাদ,’ এক সময় ঘোষণার সুরে জানাল সে। ‘এখান থেকে সীমান্ত সোজা পথে গেলে পনেরো কিলোমিটারের কিছু বেশি দূরে। এখানে আমরা বিশ্রাম নেব ভোর হবার ঠিক আগে পর্যন্ত।
তুষার আড়াল তৈরি করলেও আগুন জ্বালতে সাহস পেল না ওরা। একটা বোল্ডারের পাশে জড়োসড়ো হয়ে বসে থাকল তিনজন পুরুষ আর একটা মেয়ে। মাথার উপর একটা ঝুল পাথর
ছাদ বা ছাতার কাজ করছে।
‘আমার খিদে নেই,’ বলল শায়লা।
“খিদে না থাকলেও জোর করে খেতে হবে,’ ভারী গলায় বলল শাইখ, মেয়েটার দস্তানা পরা হাতে শুকনো মাংস গুঁজে দিল। ‘শরীর গরম রাখার আর কোন উপায় নেই ।
কোন রকম আলোচনা ছাড়াই পালা করে ঘুমিয়ে নিল শাইখ আর বোকাচি-প্রত্যেকে চার ঘণ্টা করে ।
ভোর হতে যখন ঘণ্টাখানেক বাকি, শাইখের মনে হলো ঝড় থেমে যাচ্ছে। সবাইকে ঘুম থেকে জাগাল সে। কয়েক মিনিটের মধ্যে আবার রওনা হলো ওরা।
কিছু জিজ্ঞেস না করেই সামনে থাকল বোকাচি, সবার কাছ থেকে প্রায় একশো ফুট এগিয়ে ।
আধ ঘণ্টা পর তুষারপাত পুরোপুরি থেমে গেল। ম্লান চাঁদ দেখা দিল আকাশে।
ভাগ্যকে অভিশাপ দিল শাইখ। সবেমাত্র শেষ গিরিখাদ বেয়ে নীচে নামতে শুরু করেছে দলটা। এরপর খোলা প্রান্তর। ওখানে পৌঁছে তারা স্কি ব্যবহার করতে পারবে, সেই সঙ্গে সম্ভাব্য অনুসরণকারীদের আরও পিছনে ফেলা সম্ভব হবে।
আবহাওয়ার ভাল হয়ে যাওয়াটা স্রেফ দুর্ভাগ্য বয়ে আনবে। কতটা, তা শাইখ টের পেল গিরিখাদের অর্ধেকটা পেরিয়ে আসবার পর।
মোট চারজন স্নাইপার, খাদের দু’দিকে দু’জন করে। চারজনই অনেক উপরে পজিশন নিয়েছে, নীচের ট্রেইল দেখতে পাচ্ছে পরিষ্কার। তারা ওদেরকে সাবধান করল না, এমন কী চিৎকার করে থামবার নির্দেশও দিল না।
শক্তিশালী অটোমেটিক রাইফেলের চারটে বুলেট আঘাত করল বোকাচিকে। পরপর চারবার ঝাঁকি খেল শরীরটা, সবার চোখের সামনে কুঁকড়ে ছোট হয়ে গেল ও। বুলেটের পরবর্তী ঝাঁকটা লাগল লাশ যখন বরফে পড়ছে।
শায়লার হাতটা খপ্ করে ধরে একটা বোল্ডার লক্ষ্য করে ডাইভ দিল শাইখ। একই সঙ্গে কাদরিকে ঠেলে দিল আরেকটা বোল্ডারের দিকে। বুলেটের তৃতীয় ঝাঁকটা মাত্র পাঁচ গজ দূরে তুষারে গর্ত তৈরি করছে।
‘শুয়ে পড়ো, এই মেয়ে! নোড়ো না! কাদরি?”
‘বলুন।’
‘আড়াল থেকে বেরুবেন না।’
এক বোল্ডার থেকে আরেক বোল্ডারের দিকে ছুটল শাইখ, সেখান থেকে আরেকটার আড়ালে। প্রতিবার ভিন্ন অবস্থান থেকে গুলি করা হলো তাকে। শায়লার কাছে আবার ফিরে এল সে, ইতিমধ্যে যা জানবার ছিল জেনে নিয়েছে।
এটা কিলিং স্কোয়াড। লোকগুলোকে যারাই পাঠিয়ে থাকুক, তাদের উপর নির্দেশ আছে কাউকে জীবিত ফিরিয়ে আনবার দরকার নেই ।
গলা চড়িয়ে নিজের ধারণার কথা কাদরিকে জানাল শাইখ ।
সামি কাদরির অবিশ্বাস্য প্রতিক্রিয়া হলো। আরবী ভাষায় বিলাপ শুরু করলেন তিনি। ‘আমার মেয়ে! আমার শায়লা! ও তো কোন অপরাধ করেনি, তা হলে ওকে কেন মারবে ওরা? এই, শোনো তোমরা…’
শাইখ হুংকার ছাড়ল: ‘কী করছেন? না, আরে না! আড়াল থেকে বেরুবেন না!’
‘খবরদার বলছি!’ পাহাড় প্রাচীরের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করছেন কাদরি, সেই সঙ্গে বেরিয়ে আসছেন বোল্ডারের আড়াল থেকে। ‘আমার মেয়ের কোন ক্ষতি হলে….
‘ইস্, স্রেফ আত্মহত্যা করছে লোকটা!’ শাইখের গলা থেকে হাহাকার বেরিয়ে এল ।
অটোমেটিক রাইফেল থেকে ছুটে এল এক ঝাঁক তপ্ত সীসা। বোল্ডারের আরও সামনে ছিটকে পড়লেন কাদরি, শরীরটা গড়িয়ে পার হলো দুই বোল্ডারের মাঝখানের ফাঁকটুকু।
‘গাধা! গাধা!’ ক্রল করে কিছুটা এগিয়ে কাদরির কবজি ধরল শাইখ। পালস আছে এখনও ।
চারপাশে বুলেট বৃষ্টি হচ্ছে, গ্রাহ্য না করে কাদরিকে টেনে নিজের বোল্ডারের আড়ালে নিয়ে এল শাইখ ।
‘আব্বু!…’ ডুকরে কেঁদে উঠে বাবার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ল শায়লা।
‘তুমি শান্ত হও, মেয়ে!’ প্রায় ধমকে উঠল শাইখ, হাতের ঝাপটায় সরিয়ে দিল মেয়েটাকে। ভাল করে দেখতে দাও আমাকে।’
টান দিয়ে কাদরির পারকা খুলে ফেলল সে। আগেই লক্ষ করেছে, একটা বুলেট ঊরু ভেদ করে গেছে। বেরিয়ে এসে থামতে পারছে না, ঠাণ্ডায় জমাট বেঁধে যাচ্ছে রক্ত।
শায়লা ফোঁপাচ্ছে।
‘এই মেয়ে!’
কাদরির শরীরের আরও দু’জায়গায় গুলি লেগেছে। একটা বাম কাঁধের একটু নীচে, আরেকটা বুকের ঠিক মাঝখানে ।
কাদরির চোখের পাতা কিছুক্ষণ শুধু কাঁপল, তারপর ফাঁক হলো। সাপের মত ফোঁস ফোঁস শব্দে নিঃশ্বাস ফেলছেন। ‘শাইখ…’
‘বলুন।’
‘কতটা খারাপ?’
‘খারাপ।’
‘আল্লাহর কসম, আমাকে সত্যি কথা বলুন, ভাই আমি মারা যাচ্ছি, না?’
শাইখ মাথা ঝাঁকাল ।
‘না! না-আ-আ-আ, আব্বু!’ বাবার মুখটা দু’হাতে প্রায় খামচে ধরে চেঁচাচ্ছে শায়লা। ‘তুমি মরবে না! আমি তোমাকে মরতে দেব না…’
‘মা আমার,’ বিড় বিড় করলেন কাদরি, শরীরের শেষ শক্তিটুকু দিয়ে মেয়ের মাথাটা টেনে নিলেন নিজের বুকে। ‘শাইখ?’
“বলুন, আমি শুনছি।’
‘আপনি ওকে নিয়ে বেরিয়ে যেতে পারবেন?’
উত্তর দিতে মাত্র এক সেকেন্ড ইতস্তত করল শাইখ। ‘একা? …হ্যাঁ, পারব।’
‘,
‘গুড। আমার শার্টের পকেটে… একটা কাগজ…’
পকেট হাতড়ে কাগজটা বের করে আনল শাইখ। ‘পেয়েছি। সংখ্যা, অক্ষর, তারপর আরও সংখ্যা।’
‘এগুলো সাইফারের চাবি, শাইখ…’ কাদরির কণ্ঠস্বর একেবারে নিস্তেজ হয়ে আসায় তার ঠোঁটের কাছে কান পাততে হলো শাইখকে ।
কাদরি তাকে মাইক্রোফিল্ম আর উল্কির কথা বললেন 1 বললেন, শাফুরা এই সাইফারের বিনিময়ে এক কোটি মার্কিন ডলার দেবে; ওই সাইফারই তাদেরকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাবে মাইক্রোফিল্মের কাছে ।
“আমার মেয়েকে আপনি এই বিপদ থেকে বের করে নিয়ে যান, শাইখ। অর্ধেক টাকা আপনার। আমি শুধু চাই, শাফুরাকে দেখতে বলবেন বাকি অর্ধেক যেন আমার মেয়ে পায়, আর সে যেন ওর নিরাপত্তার দায়িত্বটা নেয়…’
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!