স্বর্ণমৃগ – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

স্বর্ণমৃগ – কাজী আনোয়ার হোসেন – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ কাজী আনোয়ার হোসেন

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৯২

স্বর্ণমৃগ – বইটির এক ঝলকঃ

যেতে পারে। গুলি ওরা নেহাত নিরুপায় না হলে ছুঁড়বে না। খপ্ করে লোকটার ডান হাতটা কব্জির কাছে ধরেই বাম হাতে কনুইটা ঠেলে ওপর দিকে ওঠাল রানা। এটা যুযুৎসুর খুব সহজ একটা প্যাচ। বেকায়দা অবস্থায় পিঠের দিকে চলে এল হাত—শরীরের উপর দিক ঝুঁকে পড়ল সামনে। মাঝারি রকমের একটা চাপ দিতেই মুখ দিয়ে আল্লার নাম বেরিয়ে পড়ল লোকটার। আরেকটু জোরে চাপ দিলেই মড়াৎ করে ভেঙে যাবে কাঁধের হাড়। এমন সময় দেখা গেল একটা জিপ এগিয়ে আসছে বালির উপর দিয়ে।
রানা ডাবল, এইবার ব্যাটাদের দেখে নেবে। সোজা শ্বশুরবাড়ি চলে যাবে বাছাধনেরা। জিপের আরোহী যে-ই হোক না কেন, নিশ্চয়ই ওর এই বিপদে সাহায্য করবে। কিন্তু মেয়েটা সম্পর্কে কি গল্প বানিয়ে বলবে সে? এই ভোর রাতে সাগর পারে কেন আসে একজন ভদ্রমহিলা? তার ওপর আলুথালু বেশ ।
ওদের দেখতে পেয়েছে জিপের ড্রাইভার। সোজা এগিয়ে আসছে এদিকে। জয়ের উল্লাসে রানা বলল, ‘এখনও সময় আছে, বাপ্। তোমরা দু’জন কেটে পড়তে পারো ইচ্ছে করলে—কিন্তু এই শালাকে ছাড়ছি না।
কোন রকম ভাবান্তর হলো না রিভলভারধারীদের চেহারায়। একজন শুধু কাছে এসে চট্ করে তৃতীয়জনের রিডলভারটা তুলে নিল ওর পকেট থেকে। তারপর আবার কয়েক পা পিছিয়ে দাঁড়িয়ে থাকল নির্বিকার ভঙ্গিতে। জিপটা কাছে এসে থামতেই লাফিয়ে নামল আরও দু’জন। চুপসে গেল রানার উৎসাহ। চেহারা দেখেই বোঝা গেল একই দলের লোক।
এবার পরিষ্কার ইংরেজিতে একজন বলল, ‘বাধা দিলে বেহুদা জখম হবে, মিস্টার। হাতটা ছেড়ে দিয়ে গাড়িতে এসে বসো।’
রিডলডার দিয়ে ইঙ্গিত করতেই জিনাত গিয়ে উঠে পড়ল জিপের পেছনে। রানা বুঝল বাধা দিয়ে এখন লাভ নেই। সে-ও ভালমানুষের মত গিয়ে বসল জিনাতের পাশে। রানার কাবু করে ফেনা তৃতীয়জন ড্রাইভারের পাশে বসল ডান কাঁধটা ডলতে ডলতে। বাকি চারজনও উঠে বসল গাড়ির পেছনে ঠাসাঠাসি করে। জিনাতকে অভয় দেয়ার জন্যে ওর বাহুতে একটু চাপ দিল রানা এক হাতে। আর একটু কাছে ঘেঁষে এল জিনাত প্রত্যুত্তরে।
“একটা ব্যাপার রানা লক্ষ করল যে জিনাতের প্রতি এতটুকু অশ্লীল ইঙ্গিত করল না একটি লোকও। এমন কি ওর দিকে চোখ তুলেও চাইছে না কেউ। সাধারণত স্ত্রীলোককে হাতের মুঠোয় পেলে পুরুষ দুর্বৃত্ত যে ব্যবহার করে থাকে তার কিছুমাত্র প্রকাশ পেল না ওদের ব্যবহারে। দ্বিতীয়বার ভাবল রানা, জিনাত কি টোপ হিসেবে কাজ করল। ওরা একজনকে বন্দী করল, না দু’জনকেই? ব্ল্যাকমেইল করতে চাইছে কেউ? নাকি কোনও প্রেমিক বা স্বামীর প্রতিশোধ? এর শেষ কি? নির্যাতন? খুন?
টাওয়ার ছাড়িয়ে ম্যাকলিওড রোডে পড়ল জিপ। নিউ স্টেট ব্যাঙ্ক বিল্ডিং পার হয়ে ঢুকল উডস্ট্রীটে, তারপর বার্ন রোড। নাজিমাবাদের দিকে চলেছে ওরা।
চমৎকার একটা দোতলা বাড়ির গাড়ি বারান্দায় এসে থামল জিপ। আরও চারজন পাঠান বেরিয়ে এল। একটিও বাক্য বিনিময় হলো না। চারদিক থেকে ঘিরে রানা এবং জিনাতকে নিয়ে যাওয়া হলো বাড়ির ভেতর। লোকগুলোর চলাফেরা হাবভাব ঠিক চাবি দেয়া যন্ত্রের মত ।
কিছুদূর গিয়েই বাঁয়ে দোতলায় ওঠার সিঁড়ি। রানাও জিনাতের পিছু পিছু উঠতে যাচ্ছিল ওপরে। বাধা দিল একজন।
‘তুম ইসূতারা।’
ডানধারের দরজা দিয়ে ভারি একটা পর্দা তুলে ঢোকানো হলো রানাকে চমৎকার সুসজ্জিত একটা ওয়েটিং-রূম। অতিথিদের অপেক্ষা করবার জন্যে। ঘরের চারকোণে পা লম্বা টেবিলের উপর চারটে ফ্লাওয়ার ভাসে তাজা ফুলের তোড়া। ওপাশে আরেকটা ঘর। বোধহয় ড্রইংরুম। সেই দরজাতেও দামী পর্দা ঝোলানো।
রানাকে সম্পূর্ণ আওতার মধ্যে পেয়ে ওদের সতর্কতায় একটু ঢিল পড়েছিল। তার পূর্ণ সদ্ব্যবহার করল রানা। পিছনে না চেয়েই ডান কনুইটা রেগ এঞ্জিনের পিস্টনের মত সজোরে চালিয়ে দিল সে পিঠের সাথে ঘেঁষে থাকা লোকটার পেটের উপর সোলার প্লেক্সাসে। ‘ঘোঁত্ করে একটা শব্দ বেরোল ওর মুখ দিয়ে। মূহূর্তে ঘুরে দাঁড়িয়ে টান দিয়ে রিভলভারটা বের করে নিল রানা ওর ওয়েস্টব্যান্ড থেকে। কেউ কিছু বুঝবার আগেই একলাফে হাত চারেক পিছিয়ে এল সে।
‘হ্যাস্‌ আপ্‌! দুই হাত ঘাড়ের পিছনে তুলে দাঁড়াও সবাই।’
বুড়ো আঙ্গুল দিয়ে হ্যামারটা তুলল রানা রিডলভারের। মাটিতে পড়ে গড়াগাড়ি খাচ্ছে একজন। বাকি তিনজন হতবুদ্ধি হয়ে গিয়ে হাত তুলে দাঁড়াল। আরও কয়েক পা পিছিয়ে গেল রানা। এমন সময় ঠিক কানের কাছে একটা মোলায়েম পুরুষ কণ্ঠস্বর শোনা গেল।
“শাবাস, মাসুদ রানা! কিন্তু পেছন দিকটাও একটু খেয়াল রাখতে হয়। কেবল সামনের দিকে নজর রাখলে কি চলে? চারদিক সামাল দিতে পারলেই না বলব সত্যিকারের হুঁশিয়ার জওয়ান।
গুরু গম্ভীর, কিন্তু ভদ্র মার্জিত কন্ঠস্বর। রানা বুঝল হেরে গেছে সে। ভাবল, ঘুরে দাঁড়িয়েই গুলি করবে, যা থাকে কপালে। ঠিক যেন ওর চিন্তাটা বুঝতে পেরেই আবার কথা বলে উঠল পিছনের লোকটি। উর্দুর মধ্যে ফ্রন্টিয়ারের টান।
“আমাকে মেরে কোনও লাভ নেই, মিস্টার মাসুদ রানা। আমি আপনার শত্রু নই । তাছাড়া ঘুরে দেখুন, আমি নিরস্ত্র। আপনি আমার মেহমান। কেউ কিছু বলবে না আপনাকে।’
ঘুরে দাঁড়িয়ে রানা দেখন ডান হাতে পর্দাটা তুলে দাঁড়িয়ে আছে এক প্রৌঢ় পাঠান। পরিষ্কার করে গোঁপ দাড়ি কামানো। মুখে স্মিত হাসি। প্রশস্ত কপালে বুদ্ধির ছটা। কানের কাছে চুনগুলোতে পাক ধরেছে। লম্বায় রানার চেয়ে ইঞ্চি চারেক ছোট হবে। কিন্তু প্রথম দর্শনেই বোঝা গেল অসুরের শক্তি আছে ওই পেশীবহুল দেহে। আর বুকের মধ্যে আছে দুর্জয় সাহস। রানা ঘুরতেই পিছন থেকে এগিয়ে আসছিল দুইজন। হাত উঠিয়ে থামতে ইশারা করল ওদের দলপতি। পশতু ভাষায় কিছু বলল। মাটি থেকে টান দিয়ে তুলল ওরা আহত সঙ্গীকে। তারপর বেরিয়ে গেল ঘর থেকে।
“আসুন। ভেতরে আসুন, মিস্টার মাসুদ রানা। আপনার সাথে অনেক কথা আছে আমার। কফি খেতে খেতে গল্প করা যাবে। আপনার হাতে রিভলভার আছে। ইচ্ছে করলেই আমাকে খতম করে দিতে পারেন আপনি। কাজেই নিজেকে বন্দী মনে করবেন না। আমিই বরং আপনার বন্দী।
হাসন ভদ্রলোক। অদ্ভুত আকর্ষণীয় হাসি। রানার মনে হলো কোথায় যেন দেখেছে আগে এই হাসি। কিন্তু স্মৃতির পাতা হাতড়ে এই মুখটা কিছুতেই মনে পড়ল না ওর। হাসিটার অদ্ভুত একটা সংক্রামক গুণ আছে। রানাও না হেসে পারল না। বহুদিন পর এমন সজীব, প্রাণবন্ত, ক্ষমতাবান একজন মানুষের মুখোমুখি হলো সে। লোকটার মধ্যে যেন বিদ্যুৎ আছে, মুখের মধ্যে একটা বাল্‌ব ধরলে দপ করে জ্বলে উঠবে। নিজের অজান্তেই প্রসন্ন হয়ে উঠল রানার মনটা ।
লোকটার পিছনে দরজার গায়ে ক্যালেণ্ডার ঝুলছিল একটা। মার্চ আর এপ্রিল মাস পাশাপাশি। হঠাৎ ‘এপ্রিল ফুল’ বলেই গুলি ছুঁড়ল রানা। পয়লা এপ্রিলের ছোট্ট চারকোণা ঘরের মধ্যে গিয়ে লাগল গুলিটা দলপতির কানের পাশ দিয়ে সাঁ করে বেরিয়ে গিয়ে। ঘাড় ফিরিয়ে দেখল পাঠান ক্যালেণ্ডারটা।
“শাবাস্! বাঙ্গাল কা শের হো তুম, মাসুদ রানা। অব্যর্থ লক্ষ্য দেখে তারিফ করল সে। তারপর হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলল, “আমার নাম খান মোহাম্মদ জান । শুনেছেন কখনও?’
‘না।’ ইঁটের মত শক্ত হাত ধরে ঝাঁকি দিয়ে বলল রানা। নামটা চেনা চেনা লাগলেও মনে করতে পারল না সে কোথায় শুনেছে ।
“তাই নাকি? আশ্চর্য। কিন্তু আপনার নাম-ধাম পরিচয় সব আমার নখ-দর্পণে। আপনি পাকিস্তান কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সের একজন উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক। এই ডিপার্টমেন্টে আসার আগে আপনি আর্মিতে মেজর ছিলেন। করাচি এসেছেন স্বর্ণমৃগ শিকার করতে। কি? ঠিক বলিনি?
উজ্জ্বল হয়ে উঠল মোহাম্মদ জানের মুখ। মুখে সংক্রামক হাসি।
রানা নিজের বিস্ময় গোপন করে জিজ্ঞেস করল, আর আপনি কোথাকার জ্যোতিষ্ক জানতে পারি?’
“আমি মালাকান্দের ট্রাইবাল চীফ। ‘
এবার আর বিস্ময় গোপন করতে পারল না রানা। সম্ভ্রমের সঙ্গে দ্বিতীয়বার লক্ষ করল প্রাণবন্ত মুখটা।
এই সেই দুর্দান্ত খান মোহাম্মদ জান! বৃটিশের রাজত্বকালে যে কিনা ত্রাসের সঞ্চার করেছিল। যার নাম বললেই পশ্চিম পাকিস্তানের ছেলে বুড়ো সবাই চেনে। বৃটিশ চার সাম্রাজ্যবাদের ইতিহাসে যার নাম ভীতির সঙ্গে স্মরণ করা হয়। এই সেই খান মোহাম্মদ জান!
এই লোক তাকে বন্দী করে এনেছে কেন? এর নামে পাকিস্তান কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সে আলাদাভাবে একটা ফাইল রাখা আছে। সবাই জানে আফগানিস্তান, ইরান আর সোভিয়েট রিপাবলিকের দুর্বত্তদের সাথে এর মস্ত চোরাচালানী কারবার আছে। কোটি কোটি টাকা উপার্জন করেছে সে এই উপায়ে। বিভিন্ন দেশের ব্যাঙ্কে জমা আছে এর অগাধ সম্পদের বেশ অনেকখানি অংশ। অথচ কেউ কখনও আইনের প্যাঁচে ধরতে পারেনি একে বেকায়দা অবস্থায়। তার এলাকায় সে সম্রাট। পাকিস্তান সরকারও তাকে সব সময়ে ঘাঁটাতে সাহস পায় না।
এই কি তাহলে সোনা চোরাচালানকারীদের অদৃশ্য সর্দার? একেই খুঁজে বের করবার জন্যে পাঠানো হয়েছে তাকে ঢাকা থেকে ?
‘কই, দাঁড়িয়ে রইলেন কেন, মি. মাসুদ রানা? বসুন।’ ‘তাহলে রাজি,’ মৃদু হেসে বলল রানা ।
‘অনেক ধন্যবাদ। আপনার সম্পর্কে সরকারী রিপোর্টে বলে আপনি দায়িত্ববান বিশ্বস্ততমদের একজন। রিপোর্ট না পড়েও আপনার মুখ দেখেই সে কথা অনায়াসে বলে দিতে পারতাম আমি। সত্যিকার মানুষ বলতে আমি যা বুঝি, আপনি তাই। সব কথা খুলেই বলব আমি আপনাকে। তার আগে আসুন নাস্তার পালাটা শেষ করে নেয়া যাক।’
নাস্তার পর কফি এল। একটা চেস্টারফিল্ড প্যাকেট থেকে নিজে একটা নিয়ে রানার দিকে বাড়িয়ে ধরল মোহাম্মদ জান। রানা মাথা নাড়ল। নিজের সিগারেটে আগুন ধরিয়ে নিয়ে আরম্ভ করল মোহাম্মদ জান :
“আজ বারো বছর আমি বিপত্নীক। আর বিয়ে থা করিনি। মর্দানের সেরা সুন্দরীকে জোর করে ছিনিয়ে নিয়ে এসে বিয়ে করেছিলাম আমি। এবং ভালবেসেছিলাম।
“মায়ের অভাবে আমার একমাত্র সন্তান এই জিনাত বখে যেতে পারে সেই ভয়ে ওকে লাহোরের সেরা বোর্ডিং স্কুলের হোস্টেলে রেখেছিলাম। ছুটি-ছাটায় বাড়ি আসত। ওদের শিক্ষা-দীক্ষায় আমি সন্তুষ্ট ছিলাম। সিনিয়ার কেম্ব্রিজ পর্যন্ত ভালই ছিল। কিন্তু কলেজে উঠে হঠাৎ গজিয়ে ওঠা বংশ মর্যাদাহীন বড়লোকদের আলট্রা- মডার্ন সব ছেলেমেয়েদের সাথে মেলামেশা আরম্ভ করল জিনাত। খারাপ সংসর্গের এমনই গুণ, এক মাসের মধ্যেই লাজুক পাহাড়ী মেয়েটা বদলে গেল পা থেকে মাথা পর্যন্ত। চক্রবৃদ্ধি হারে খারাপ লোক এসে ভিড় করল ওর আশেপাশে। একেবারেই বধে গেল মেয়েটা। ফিল্ম লাইনে ঘোরাফেরা আরম্ভ করল। অনেক রাতে ফেরে হোস্টেলে। মাঝে মাঝে দু’একদিন ফেরেও না। হোস্টেলের সুপারের চিঠি আসতে আরম্ভ করল আমার কাছে। প্রথমে আমি বিশ্বাস করিনি ওদের নালিশ। নিজ সন্তানের ওপর সব পিতারই অমন অন্ধ বিশ্বাস থাকে।
“কিন্তু ফোর্থ ইয়ারে উঠে কলেজের এক ছোকরা প্রফেসরের সাথে বাথরূমে ধরা পড়ায় রাসূটিকেট করা হলো ওকে।
“বিশ্বাস করুন, মি. রানা, এই একটি মাত্র মেয়ের দুঃখ হবে বলে বয়স থাকতেও আর বিয়ে করিনি আমি। ওকে চোখের মণি করে রেখে ওর মায়ের অভাব পূরণ করার চেষ্টা করতাম। যা চাইত, তাই পেত সে। এদিকে আমাকে সেই সময়টা দৌড়াদৌড়ির ওপর থাকতে হত। কয়েকটা কেসে গোলমাল হয়ে যাওয়ায় ধরা পড়বার উপক্রম হয়েছিল। ওর দিকে নজর দেবার সময় তেমন পেতাম না। নিজেকে শেষ করে ফেলল সে। সব ব্যাপার দেখে-শুনে এবার আমি কঠিন হবার চেষ্টা করলাম। কিন্তু হিতে বিপরীত হলো। আরও অবাধ্য হয়ে উঠল সে। হাত খরচের টাকা কমিয়ে দিলাম। তার ফলে আমার ওপর প্রতিশোধ নেবার জন্যেই বোধহয় সে প্রেমিকদের কাছে টাকা নিতে আরম্ভ করল, যেখানে-সেখানে ধার করতে আরম্ভ করুন।
সিগারেটটা অ্যাশট্রে-তে ফেলে চুপচাপ কিছুক্ষণ কি যেন ভাবল মোহাম্মদ জান। বোধহয় গুছিয়ে নিল কথাগুলো মনের মধ্যে।
“কিন্তু যত যা-ই করুক, ওর মনের একটা দিক নিরন্তর চাবুক মারত ওকে।

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top