পাল্টা ধাওয়া – আসাদ বিন হানিফ – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।
বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ আসাদ বিন হানিফ
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১৬৩
পাল্টা ধাওয়া – বইটির এক ঝলকঃ
মেয়েটির হাবভাবে মনে হয়, সে সব সময় এমনকি চব্বিশটা ঘন্টাই তার পাশেপাশে থাকে। সে চেঙ্গিসের প্রতিটি পদক্ষেপ ও পদধ্বনি শুনতে পায়। দিনের বেলা তো বটেই, এমনকি
অন্ধকার রাতেও।
চেঙ্গিস মেয়েটিকে দেখতে পেয়েই তার দায়িত্বের কথা ভুলে গেল। প্রতিদিনের মতই তারা বাগানের ভেতর অভিসারে ‘মেতে উঠল। এদিকে কেমন করে সময় গড়িয়ে গিয়ে সকাল হলো সেদিকে কোন খেয়ালই করলো না ।
এসব দিকে লক্ষ্য করার তার সময় কোথায়? সে তো এক মেয়ের প্রেমে মজে আছে। তার মন-মগজ আচ্ছন্ন করে বসে আছে এই মেয়ে। সে কাণ্ডজ্ঞান হারিয়ে সেখানেই পড়ে রইল, আজ রাতেও ইমাম সাহেবের কাছে যেতে পারলো না ।
এ জন্য তার মনে যে খুব দুঃখ বা আফসোস হলো, তাও না। কারণ মেয়েটা তার দুঃখের কাহিনী এমন ভাবে প্রকাশ করতে শুরু করলো যে, সে কথা শুনতে শুনতেই চেঙ্গিসের রাত কাবার হয়ে গেল ।
‘আমাকে তোমার আশ্রয়ে নিয়ে নাও।’ মেয়েটি কাঁদো কাঁদো স্বরে বললো, ‘দেখে তো আমাকে সবাই রাজকন্যা বলে, রাণী মনে করে। কিন্তু আমার জীবনটা এমন নরকময়! তুমি যদি
আমাকে কাছ থেকে দেখতে তবে তোমার পা থেকে মাথা পর্যন্ত শিউরে উঠতো। তোমার কাছে সত্য প্রকাশ করতে ‘আজ আর আমার কোন দ্বিধা নেই। কারণ আমি চাই না আমার পরিচয় গোপন করে তোমাকে প্রতারিত করি। তুমি ইচ্ছা করলে আমাকে ঘৃণা করতে পারো, কারণ আমি তোমার ধর্মের লোক নই ।
আমি এক মুসলমান মা-বাবার আদরের কন্যা। হরিণের সুস্বাদু গোশতই তার দুশমন। কারণ, হরিণের গোশত সুস্বাদু না হলে কেউ তাকে শিকার করতো না। তেমনি আমার সৌন্দর্যই আমার কষ্টের কারণ। আর এ যাতনা ক্রমশ বেড়েই চলেছে, শেষ হওয়ার কোন লক্ষণ নেই। পনেরো বছর বয়সে আমার বাবা আমাকে এক আরব বণিকের কাছে বিক্রি করে দেয়। আমার বাবা গরীব লোক ছিল না, কিন্তু লোভী ছিল। আমরা ছিলাম ছয় বোন। সে মেয়েদের প্রতি মোটেই দরদী ছিল না। আমার বড় দুই বোন পিতার ব্যবহারে বিরক্ত হয়ে তাদের প্রেমিকের সাথে পালিয়ে যায়। এই দুঃখে বাবা আমাকে বিক্রি করে দেয়।
এক বছর পর বণিক এক খৃস্টান সামরিক অফিসারের কাছে আমাকে উপহার স্বরূপ পাঠায়। কিছুদিন পর সে অফিসার যুদ্ধক্ষেত্রে মারা যায়। তখন আমি সেই অফিসারের বাস। থেকে পালিয়ে আসি। কিন্তু পালিয়ে আমি যাবো কোথায়? এক খৃস্টান আমাকে আশ্রয় দিল কিন্তু আমার দেহটাকে তার রুজি ও উপার্জনের উৎস বানিয়ে নিল। আমি কোন নিচু দরে। নিশিকন্যা ছিলাম না। সে আমাকে ক্রুসেড বাহিনীর উঁচু দরের অফিসার ও কমাণ্ডারদের কাছে কিছু দিনের জন্য পাঠিয়ে দিত। আমি সেই অফিসার বা কমাণ্ডারের কাছে রাণীর মত থাকতাম। তারা আমাকে খুশী করার জন্য অলংকার বানিয়ে দিত, মাঝে মধ্যে নগদ অর্থও দিত। আমার সর্বপ্রকার আরাম আয়েশের ব্যবস্থা করতো। মোট কথা, সেখানে আমি রাণীর হালেই থাকতাম ৷
কিন্তু তবু আমার মনে কোন শান্তি ছিল না। এই পেশাতে বড় বড় সামরিক অফিসারের সাথে আমার মেলামেশার সুযোগ হলো। আমি জন্ম থেকেই বুদ্ধিমতি ও বিচক্ষণ মেয়ে হিসাবে সবার প্রিয় ছিলাম। শীঘ্রই আমি শাসকশ্রেণী, এমনকি রাজা- বাদশাহর সাথেও পরিচিত হয়ে উঠলাম। তারা আমাকে গোয়েন্দাগিরীর প্রশিক্ষণ দিয়ে গোয়েন্দা কাজে ব্যবহার করতে লাগলো ।
একবার আমাকে বাগদাদে পাঠানো হলো। সেখানে নূরুদ্দিন জঙ্গীর এক সেনাপতিকে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে জড়াতে গিয়েছিলাম। আমি সেখানে খুবই সাফল্য লাভ করি এবং অত্যন্ত নিপূণভাবে আমার দায়িত্ব সমাধা করি। এতে গোয়েন্দা মহলে আমার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণ গোয়েন্দাদের চোখে আমি শ্রদ্ধেয় হয়ে উঠি। এরপর আমার ওপর আরো বড় বড় দায়িত্ব অর্পিত হয় এবং আমি কুশলী হাতেই সে সব দায়িত্ব পালন করি ।
আমি যদি এখন তোমাকে আমার গোয়েন্দা কর্মের ফিরিস্তি শোনাতে শুরু করি, তবে তুমি আশ্চর্য হয়ে যাবে। হয়তো সব কথা বিশ্বাসও করবে না। সেই লম্বা কাহিনী রেখে এবার আসল কথায় আসি । এক সময় আমার দায়িত্ব এই জেনারেলের হাতে পড়ে। তিনি – আমাকে তার আশ্রিতা হিসেবে রেখে দেন। এই জেনারেল একজন প্রবীণ ও বৃদ্ধ মানুষ। তিনি আমাকে সুখে শান্তিতে রাখতে চেষ্টার কোন ত্রুটি করছেন না। তিনি আমাকে সঙ্গে নিয়ে খুব গর্বের সাথে চলাফেরা করেন। লোকদেরকে এই বলে ধোঁকা দিতে চান, তিনি বৃদ্ধ নন। তিনি যুবতী মেয়েদেরকেও পরিপূর্ণ আনন্দ ও তৃপ্তি দানে সক্ষম
এই বুড়ো আমার সকল আবদার পূরণ করেন। এতদিন আমি তার সঙ্গে আক্রাতে ছিলাম। সেখানে হঠাৎ আমার সঙ্গে এক মুসলমান গোয়েন্দার সাক্ষাৎ হলো। সে গোয়েন্দা দামেশক থেকে এসেছিল।
‘তার নাম কি?’ চেঙ্গিস প্রশ্ন করলো।
“তার নাম শুনে তোমার কি লাভ?’ মেয়েটি বললো, ‘তুমি
তো আর তাকে চেনো না। এখন আমার কথা শোন। তোমার ভালবাসা আমার মুখের বাঁধন খুলে দিয়েছে। বলতে পারো আমার হৃদয়ের দুয়ারও খুলে দিয়েছে। আমি তোমার সামনে এমন গোপন তথ্য ফাঁস করছি, যার পরিণাম সোজা কারাগারে যাওয়া। যেখানে মানুষ অবর্ণনীয় কষ্ট সহ্য করতে করতে এক সময় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। কিন্তু আমার ইচ্ছা, আমি তোমার কোলে মাথা রেখে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করি।’
চেঙ্গিস কিছু বলতে যাচ্ছিল, তাকে থামিয়ে দিয়ে মেয়েটি বললো, ‘আমার কথা এখনো শেষ হয়নি। দামেশকের সেই গোয়েন্দা ধরা পড়েছিল। গ্রেফতার করার পর তাকে কারাগারের গোপন কক্ষে পাঠিয়ে দেয়া হলো ।
আমি ছিলাম ক্ষমতাধর এক জেনারেলের প্রিয় আশ্রিতা।
আমি আমার মুনীবের কাছে সেই গোয়েন্দাকে দেখার আবদার করলাম। যথারীতি সে আবদার মঞ্জুর হলো। গোয়েন্দার তামাশা দেখার জন্য আমি কারাগারের গোপন কক্ষে গেলাম । তাকে এমন কঠিন ও বর্বরোচিত শাস্তি দান করা হচ্ছিল যে, দেখে আমার মূর্ছা যাওয়ার দশা। তাকে জিজ্ঞেস করা হচ্ছিল, ‘তার অন্য সাথীরা কোথায়, আর সে এ যাবত কি কি তথ্য যোগাড় করেছে।’
তার নাক-মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছিল। চেহারা নীল হয়ে উঠেছিল। তবুও সে বলছিল, ‘আমার শরীরে এক মুসলমান পিতার রক্ত বইছে। আমাকে মেরে ফেলতে পারবে, কিন্তু আমি গাদ্দারী করতে পারবো না।’
সহসা আমার যেন কি হয়ে গেল। এতদিন পর হঠাৎ করেই আমারও মনে পড়ে গেল, আমার শিরাও তো এক মুসলিম পিতারই রক্ত বইছে! আর এ কথা মনে হতেই জেগে উঠলো আমার আপন সত্ত্বা। আমার চেহারা বিবর্ণ হয়ে গেল। গোয়েন্দার গায়ের প্রতিটি আঘাত মনে হলো আমারই শরীরে পড়ছে। লজ্জায়, ক্ষোভে, দুঃখে আমি কাঁপতে লাগলাম । সবাই ভাবলো, আমি দুর্বল চিত্তের মেয়ে মানুষ। সে কারণে আমি ওই অত্যাচার দেখে ভয় পেয়েছি।
ওরা আমাকে তাড়াতাড়ি ওখান থেকে সরিয়ে নিল। কিন্তু
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!