মিন্দানাওয়ের বন্দী – আবুল আসাদ – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।
বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ আবুল আসাদ
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১৩১
মিন্দানাওয়ের বন্দী – বইটির এক ঝলকঃ
আহমদ মুসা প্রায় মাসাধিকাল ধরে মিন্দানাও ও সোলো দ্বীপপুঞ্জ ভ্রমন করলো। সঙ্গে ছিল মুর হামসার। ভ্রমণকালে পিসিডা কর্মী ও মিন্দানাও বাসীদের সাথে ঘনিষ্ঠ আলাপ হলো আহমদ মুসার। এক হাতে ক্রস ও অন্য হাতে বন্দুক নিয়ে এসে জেঁকে বসা উপনিবেশিক খৃস্টান প্রভূদের বিরুদ্ধে তাদের মধ্যে সীমাহীন অসমেত্মাষ সে লক্ষ্য করলো, মুক্তির জন্য তারা অধীর। মিশনারীরা জ্ঞান বিতরণের নামে যে বিদ্যালয়সমূহ এবং চিকিৎসার নামে যে চিকিৎসালয়সমূহ খুলেছে, সেগুলো কেমন করে মিন্দানাওবাসীদের ধর্ম ও জাতীয়তার সমাধি রচনা করছে তার স্পষ্ট নিদর্শন প্রত্যক্ষ করল আহমদ মুসা। মিশনারীদের প্রেমের বাণী যেখানে মিন্দানাওবাসীদের বশ করতে ব্যর্থ হয়েছে এবং এর বিরুদ্ধে মিন্দানাওবাসীদের প্রতিরোধ বহ্নি যেখানে জ্বলে উঠছে সেখানে ট্রিপল সি’র বিষাক্ত থাবা গিয়ে মিন্দানাওয়ের অসহায় মানুষের ঘাড়ে চেপে বসছে। এ সবের বহু দৃষ্টান্ত আহমদ মুসা নিজের চোখে প্রত্যক্ষ করলো। আহমদ মুসা অনুভব করলো, মিন্দানাওবাসীদের দুর্জয় সাহস আছে। শুধু এগুলোকে সুপরিকল্পিতভাবে কাজে লাগাতে পারলেই মিন্দানাওবাসীরা মুক্তির স্বাদ পেতে পারবে।
আহমদ মুসা মাস খানেক ধরে শুধু নিরর্থক ভ্রমণ করেই কাটালো না। পিসিডার সংগঠনকে নতুন করে সাজাল। সমগ্র মিন্দানাও ও সোলো দ্বীপপুঞ্জকে ৫০ টি অঞ্চলে ভাগ করা হলো। ফিলিস্তিন থেকে ১০০ জন অভিজ্ঞ সাইমুম কর্মীকে আনা হয়েছিল। তাদের থেকে প্রত্যেক অঞ্চলের জন্য দু’জন করে পাঠানো হলো পিসিডা কর্মী এ স্থানীয় অধিবাসীদের প্রয়োজনীয় গেরিলা ট্রেনিং ও শিক্ষাদানের জন্য। আহমদ মুসা পিসিডার কেন্দ্রীয় কমিটিকে বুঝাতে সক্ষম হয়েছিল যে, সামরিক শক্তি যদি জাতীয় সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক চেতনা-নির্ভর না হয় তাহলে তার প্রাণ শক্তি থাকে না। আহমদ মুসার এ পদক্ষেপের ফলে গেরিলা ট্রেনিং শিবিরের পাশাপাশি গড়ে উঠল জাতীয় শিক্ষা জন্য জাতীয় বিদ্যালয়। নতুন উৎসাহের প্রাণ বন্যায় উদ্বেল হয়ে উঠল মিন্দানাও সোলো দ্বীপপুঞ্জের জনজীবন।
আহমদ মুসা নৌবাহিনীও গড়ে তুলল। ‘ট্রিপল সি’র কাছ থেকে দখল করা জাহাজে ৫০টি মেরিন ইঞ্জিন পাওয়া গিয়েছিল। তাই দিয়ে ৫০টি বোট সজ্জিত করা হল। মিন্দানাওবাসীরা ঐতিহ্যগতভাবে দুঃসাহসী নাবিক। সুতরাং অল্প সময়ের মধেই ক্ষুদ্র অথচ এক দক্ষ নৌ-ইউনিট গড়ে উঠল। যে মিন্দানাও সাগর, সোলো সাগর, মরো উপসাগর ও দাভাও উপসাগরে একদিন ক্রস পরিশোভিত মিশনারী ‘ট্রিপল সি’র একচেটিয়া রাজত্ব ছিল, সেখানে আজ পিসিডার কর্মীরাও ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ পেল। আহমদ মুসা নৌ-সদর দফতর হিসেবে জাম্বুয়াঙ্গোকে মনোনীত করলো। কিন্তু যেহেতু এ সমুদ্র শহরটি ফিলিপাইন সরকারের নামে ট্রিপল সি’র দখলে, তাই আপততঃ শহরটি মুক্ত করার পূর্ব পর্যন্ত নৌ-সদর দফতর আপো-সমুদ্র সৈকতেই থাকবে।
সাংগঠনিক সফর শেষে আহমদ মুসা ও মুর হামসার গভীর অরণ্য পথে আপো পর্বতের হেড কোয়ার্টারে ফিরছিল। চলতে চলতে মুর হামসার এক সময় বলল, মুসা ভাই, আমরা পনের বছরে যা পারিনি আপনি পনেরোর দুইগুণ তিরিশ দিনে তা করে ফেললেন।
-এমন করে কথা বলো না বন্ধু, তোমাদের সবই ছিল, আমি তাতে রংয়ের পরশ বুলাচ্ছি মাত্র।
-সার্থক শিল্পি আপনি
-কারণ আমরা মহিমাময় এক মহাশিল্পীর দাস।
মুর হামসার কথা বলল না কিছুক্ষণ। বলল পরে, এই যে দ্বন্দ্ব সংঘাত এর কি অবসান ঘটবে দুনিয়া থেকে?
-ন্যায়ের পাশে অন্যায় যতদিন থাকবে ততদিন নয়।
–ন্যায় কি অন্যায়ের মূলোচ্ছেদ করতে পারবে না? -পারতো, যদি ইবলিস এই জমিনে না আসতো। -তাহলে?
-অন্যায়ের প্রতিবিধান ও প্রতিরোধ সত্য ও সত্যসেবীদের শির চির উন্নত থাকবে, আল্লাহ তার বান্দাদের কাছ থেকে এটুকুই তো কামনা করেন। -এতো এক অনির্বান সংগ্রামের মহা আহবান
-ইবলিসের সাথে এই অনির্বান সংগ্রামের ভাগ্যলেখা নিয়েই তো বনি আদম তার যাত্রা শুরু করেছিল এই পৃথিবীর বুকে।
-এ ভাগ্যলেখা কি সকলের জন্য অবধারিত?
-নিশ্চয়ই। যারা এ সংগ্রামের পথ থেকে সরে দাঁড়াবে, যারা অন্যায়ের পদতলে সমর্পন করে দেবে নিজেকে, তারা শুধু কাপুরুষ নয়, তারা মানুষ নামের অনুপযুক্ত। এদের প্রতিই বিধাতার সীমাহীন লানত। জাহান্নাম তো এদেরই জন্য।
কেপে উঠল মুর হামসারের গোটা শরীর। আজ সে যেন প্রথমবারের মত বুঝল, কেন পর্বতের উপর কোরআন নাজিল হলে তা মহাশংকায় ধূলায় বিদীর্ণ হয়ে যেত। অনুভব করলো মুর হামসার বনি আদম এ দুরহ দায়িত্ব পালন করে বলেই আল্লাহর বড় প্রিয় সে এবং সৃষ্টি জগতের রাজ শিরোপা এ কারণেই জুটেছে তার মাথায়।
মুর হামসার আর কোন কথা বলতে পারলো না। আহমদ মুসাও নীরব। বনানীর সবুজ সাগরের বুক চিরে আপো পর্বত অভিমুখে তারা এগিয়ে চলেছে দু’টি প্রানী। মাঝে মাঝে ঘোড়ার পায়ের শব্দ উঠছে খট্ খট্ খট্।
আহমদ মুসা আগে, মুর হামসার পিছনে আবার কখনো তারা পাশাপাশি সামনে এগিয়ে চলছিল। সামনেই আপোয়ান উপত্যকা।একটি গিরীখাত পেরিয়ে ওপারে গেলেই তারা গিয়ে পৌছবে আপোয়ান উপত্যকায়।
পড়ন্ত বেলা। পশ্চিমের গিরী শৃঙ্গটির আড়ালে ঢাকা পড়েছে সূর্য। উপরে মেঘের কোলে রোদ চিকচিক করছে, কিন্তু নীচের ধরনী ঢাকা পড়েছে দৈত্যকার
এক ছায়ায়। সামনেই গিরীখাত। গিরীখাতের উপর কাঠের তৈরী একটি সেতু, সেতুটি লতা-পাতার ক্যামোফ্লেজে ঢাকা।
বামপাশে ঘুরে থুথু ফেলতে গিয়েছিল আহমদ মুসা। হঠাৎ একটি সিগারেটের কার্টুনে নজর পড়তেই সে ঘোড়ার লাগাম টেনে ধরল এবং নেমে পড়ল ঘোড়া থেকে?
রাস্তার ধার থেকে সিগারেটের বাক্সখানা সে ধীরে ধীরে তুলে নিল। ‘রেডক্লাগ’ সিগারেটের বাক্স। সোভিয়েট ইউনিয়নের মিনস্কে তৈরী এ দামী সিগারেট সাধারণতঃ সোভিয়েট অফিসিয়ালসরাই ব্যবহার করে থাকে। আহমদ মুসার সমগ্র অনুভূতি জুড়ে একটি প্রশ্ন জ্বলজ্বল করে উঠলঃ মিন্দানাওয়ের দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলের এই অজ্ঞাত রাস্তার ধারে এই সিগারেট এলো কি করে? সিগারেটের বাক্স উল্টিয়ে নিল আহমদ মুসা। একটি লেখার প্রতি নজর পড়তেই ভ্রু-কুঁচকে গেল তার। রুশ হস্তাক্ষর। কে যেন রুশ অংকে একটি হিসাব করেছে। ৩২০ মাইল, ১০ = ৩২ ঘন্টা। আরও খুটিয়ে দেখল সে। সিগারেটের বাক্সের ধারে কিছু পরিমাণ মাটি লেগে আছে। মাটি তখনও শুকিয়ে যায়নি। আহমদ মুসা অনুমান করলো, ঘন্টা খানেক আগে কেউ রাস্তার উপর থেকে ওখানে ওটা ছুড়ে মেরেছে। সতর্ক হয়ে উঠল আহমদ মুসা। শিকারী বাঘের মত একবার সে চারিদিকে চাইল।
পাশেই মুর হামসার বোবা দৃষ্টি মেলে চেয়েছিল আহমদ মুসার দিকে। আহমদ মুসা তাকে জিজ্ঞেস করলো, এখান থেকে জাম্বুয়াঙ্গোর দুরত্ব কত হামসার?
-৩২ মাইলের মত।
-ঠিক?
-হাঁ । কেন?
-কোন উত্তর না দিয়ে আহমদ মুসা আবার জিজ্ঞেস করলো, আমরা ফিরে আসছি আজ হেড কোয়ার্টারে এ কথা কেউ জানে মুর হামসার?
-জানে। -কে?
-শিরী।
-শিরীকে তুমি কবে জানিয়েছ? -গতকাল।
-কোন জায়গা থেকে? -জাম্বুয়াঙ্গো থেকে। -জাম্বুয়াঙ্গো থেকে?
-হাঁ ।
আহমদ মুসার চোখ দু’টি চিকচিক করে উঠল। যেন কিছু খুঁজে পেয়েছে সে। পুনরায় সে বলল, মুর হামসার, তুমি কী জানিয়েছিলে শিরীকে?
-জানিয়েছিলাম, আমরা কিছুক্ষণের মধ্যে যাত্রা করছি, পৌছব ইনশাআল্লাহ আগামীকাল বিকেলের দিকে।
আর কিছু বলল না আহমদ মুসা। মুহূর্তকালের জন্য চিন্তার অতল গভীরে চলে গেল সে। তারপর চোখ খুলে পুলের উপর দিয়ে সামনের রাস্তার দিকে চেয়ে সে বলল, হেড কোয়ার্টারে পৌছার জন্য এ ছাড়া আর কি দ্বিতীয় পথ নেই?
শুকনো কন্ঠে মুর হামসার বলল, না মুসা ভাই। একটু থেমে আবার সে বলল, কি ঘটছে তা কি জানতে পারি?
-নিশ্চয় বন্ধু। কিন্তু এখন নয়, আগে আমরা পৌছি।
-কিন্তু কোন পথে?
-গিরীখাত কত গভীর?
-প্রায় হাজার ফুটের মত।
-এই গিরীখাতের শেষ কোথায়?
-অনেকটা পথ ঘুরে আপোয়ান উপত্যকায় গিয়ে শেষ হয়েছে।
-চল আমরা গিরীপর্বতের পথ ধরে উপত্যকায় গিয়ে উঠবো।
আহমদ মুসা ও মুর হামসার ঘোড়া ছেড়ে দিয়ে রাস্তা পিছনে রেখে গিরীপর্বতের পথ ধরল। বড় কষ্টকর এ যাত্রা। মুহূর্তের অসাবধানতায় পা ফসকে গেলে ছয় শ” হাত গভীরে গিরীবর্তের বুকে চির সমাধি লাভ হবে।
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!