হিমু সমগ্র ১ম খন্ড – হুমায়ূন আহমেদ – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

হিমু সমগ্র ১ম খন্ড – হুমায়ূন আহমেদ – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ হুমায়ূন আহমেদ

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১৪৭৭

হিমু সমগ্র ১ম খন্ড – বইটির এক ঝলকঃ

ব্যাপারটা কি বলতে যাচ্ছিলাম, তার আগেই ফুপা আমাকে থামিয়ে দিলেন। বিরক্ত মুখে বললেন, তুমি যাও। পূর্ণিমা দেখ গিয়ে। ভাল করে দেখ। আসলেই অনেকদিন পূর্ণিমা দেখা হচ্ছ না। জোছনা রাতে পথে বের হলেই পূর্ণিমা দেখা যায় না। তার জন্যে দীর্ঘ প্রস্তুতি লাগে। পূর্ণিমা দেখতে হলে শরীর হালকা করতে হয় । সারাদিন কখনো গুরুভোজন করা যাবে না। অল্প আহার – ফলমূল, দুধ। দিনে কখনো চোখ মেলা যাবে না। সূর্যলোক দেখা বা গায়ে রোদ লাগানো পুরোপুরি নিষিদ্ধ। চাঁদ আকাশের মাঝামাঝি পর্যন্ত উঠলে তবেই চোখ মেলা যাবে। তবে তার আগে বরফ-শীতল পানিতে গোসল করে নিতে হবে। পূর্ণিমা দেখতে হবে বনে গিয়ে। আশেপাশে ইলেকট্রিকের আলো, কুপির আলো বা মোমের আলো কিছুই থাকবে না। জোছনা দেখা যাবে, তবে চাঁদের দিকে একবারও তাকানো যাবে না। সঙ্গে দ্বিতীয় কোন ব্যক্তি থাকতে পারবে না।
এমন কঠিন নিয়ম-কানুনে এখনো জোছনা দেখা হয়নি। তাছাড়া এভাবে জোছনা দেখা দুর্বলচিত্ত মানুষের জন্যে নিষিদ্ধ। এরা সৌন্দর্যের এই রূপ সহ্য করতে পারে না। প্রচণ্ড ভাবাবেশ হয়। যার ফল হয় সুদূরপ্রসারী। জোছনার অলৌকিক জগতে একবার ঢুকে গেলে লৌকিক জগতে ফিরে আসা নাকি কখনোই সম্ভব হয় না।
খুব শিগগিরই এক রাতে জোছনা দেখতে যাব। এদিকের কাজটা একটু গুছিয়ে নেই । রফিকের সমস্যাটা মিটে যাক। মনে অশান্তি রেখে চন্দ্রস্নাত পৃথিবী দেখার নিয়ম নেই।
বেল টিপতেই মোবারক হোসেন সাহেব নিজেই দরজা খুলে দিলেন। সহজ গলায় বললেন এস হিমু। যেন তিনি আমার জন্যেই অপেক্ষা করছিলেন।
সাধারণ মানুষ থেকে মন্ত্রী পর্যায়ে উঠা খুব কঠিন, কিন্তু নেমে আসাটা অত্যন্ত সহজ। মোবারক সাহেবকে দেখে তাই মনে হচ্ছে। উনার পরণে সাদা লুঙ্গি। খালি গা। কাঁধে ভেজা গামছা। তিনি সহজ গলায় বললেন, শরীরটা তেতে আছে। ভিজে গামছা দিয়ে রাখলাম। এতে শীরর ঠাণ্ডা থাকে। কোন খবর আছে হিমু?
“না কোন খবর নেই। আপনার খবর নিতে এসেছি।’
‘আমার খবর নেবার জন্যে তো বাড়িতে আসার দরকার পড়ে না। পত্রপত্রিকায়
রোজই কিছু না কিছু বেরুচ্ছে। পত্রিকা পড় না?”
‘মাঝে মাঝে পড়ি।’
“আমার খবর সব আপ-টু-ডেট জান তো?” ‘কিছু কিছু জানি।’
‘ব্যাংক একাউন্ট ফ্রাজ করা হয়েছে, এটা জান?”
‘না।’
ব্যাংক একাউণ্ট ফ্রীজ করা হয়েছে। বুদ্ধিমান লোক মাঝে মাঝে প্রথম শ্রেণীর বোকার মত কাজ করে, আমিও তাই করেছি। টাকা-পয়সা অনেক ব্যাংকেই ছিল। ছিল আমার নিজের নামে। কিছু যে অন্যের নামে রাখা দরকার, কিছু ক্যাশ দরকার, এটা কখনো মনে হয়নি।’
“আপনার ব্যাংকে কত টাকা আছে?”
জবাব দেবার আগে মোবারক সাহেব কিছুক্ষণ এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বললেন, পাঁচ কোটি টাকার মত।
আমার ঠিক আগের মত বারান্দায় বসলাম। মোবারক হোসেন সাহেব ইজিচেয়ারে শুয়ে মোড়ায় পা তুলে দিলেন। তিতলীকে ডেকে বললেন টক দৈ দিতে।
‘হিমু।’
‘জ্বি স্যার।’
‘পাঁচ কোটি টাকা আছে জানার পরেও তুমি দেখি তেমন অবাক হওনি। পাঁচ কোটি টাকা যে কত টাকা সে সম্পর্কে বোধহয় তোমার ধারণা নেই।
“অনেক টাকা বুঝতে পারছি।’
“পারছ বলে মনে হয় না। অনেক তো বটেই । সেই অনেকটা কত অনেক তা কি জান? পাঁচ কোটি টাকা দিয়ে কি করা যায় বল তো?”
‘পাঁচ কোটি টাকা দিয়ে দিয়াশলাই কেনা যায়। একটা দেয়াশলাইয়ের দাম এক টাকা। তবে একসঙ্গে এত টাকার দেয়াশলাই কিনলে কিছুটা বোধহয় সস্তায় দেবে। আট আনা পিস পাওয়া যেতে পারে। তাহলে দশ কোটি দেয়াশলাই পাওয়া যাবে। এই জীবনে আর দেয়াশলাই কিনতে হবে না।’
‘তুমি ব্যাপারটাকে ফানি সাইডে নিয়ে যাবার চেষ্টা করছ। ফানি সাইডে নেবার দরকার নেই-পাঁচ কোটি টাকা যে কি পরিমাণ টাকা আমি অন্যভাবে তোমাকে ধারণা দেই। ধর, টাকাটা তুমি যদি শুধু ব্যাংকে রেখে দাও তাহলে কি হবে? ফিফটিন পারসেন্ট রেটে ইন্টারেস্ট কত আসে? মনে মনে হিসাব করতে পার। ফাইভ টাইমস ফিফটিন, ডিভাইডেড বাই…’
আমি তাকিয়ে আছি । মোবারক হোসেন সাহেব চোখ বন্ধ করে হিসেব করে যাচ্ছেন। তিতলী যখন এসে বলল, বাবা দৈ নাও, তখন বিরক্ত মুখে চোখ মেললেন। তাঁর হিসেবে গণ্ডগোল হয়ে গেছে। অসময়ে আসার জন্যে তিনি মেয়ের দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে আছেন। তিতলী বলল, বাবা, আমি তোদের সঙ্গে বসব?
আমি সহজ গলায় বললাম, আমি আসলে একটা সুপারিশ নিয়ে এসেছি। একজনের চাকরি-বিষয়ে একটা সুপারিশ। আমার এক বন্ধুর চাকরি চলে গেছে। পুরোপুরি এখনো যায়নি, সামান্য সুতায় ঝুলছে। আপনার বাবার সুপারিশে হয়ত তার চাকরিটা হবে। তিতলী বিস্মিত চোখে তাকিয়ে রইল। মোবারক হোসেন সাহেব কৌতুহলী গলায় বললেন, তুমি কি সত্যি সুপারিশ নিতে এসেছ?
“জ্বি স্যার। সবাই তো মন্ত্রীত্ব থাকাকালিন সময়ে নানান সুপারিশ নিয়ে আসে, আমি এসেছি যখন আপনার মন্ত্রীত্ব নেই। কিছুই নেই।’
“তুমি তাহলে জেনেশুনেই এসেছ আমার সুপারিশে কাজ হবে না?”
‘তা নয় স্যার। আমি জানি, আপনার সুপারিশে এখন অনেক বেশি কাজ হবে। কারণ সবাই জানে, আপনি আবার স্টেজে আসবেন। আসার সম্ভাবনা অনেক বেশি। যদিও এখন আপনি কেউ না –নো বড়ি; তবু ভবিষৎত্তের কথা ভেবে তারা আপনাকে খুশি রাখবে।’
‘যার সুপারিশ করতে এসেছে তার নাম কি? সুপারিশ কার কাছে করতে হবে?” আমি পকেট থেকে কাগজ বের করতে করতে বললাম, সব এখানে লেখা আছে স্যার। ও আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। ওর নাম রফিক।
যাক।’
“তুমি বস, আমি টেলিফোন করে দেখি। তোমার কথা সত্যি কি-না পরীক্ষা হয়ে
আমি চুপচাপ বসে রইলাম। তিতলী নামের রাগী এবং অহংকারী মেয়েটি আমার সামনে বসে আছে। তার ঠোঁট হাসির ক্ষীণ আভাস। কি মনে করে সে হাসছে কে জানে। আমি বললাম, আপনার মা কেমন আছেন?
“ভাল না।’
“উনার ঠিকানাটা আমাকে দেবেন,উনাকে একটু দেখতে যাব?’
“কেন?”
‘এমনি যাব।’
“আপনি বিনা উদ্দেশ্যে কিছু করেন না। আপনার কোন একটা উদ্দেশ্য আছে। উদ্দেশ্যটা বলুন। তারপর ঠিকানা দেব।’
উদ্দেশ্য বলার সময় হল না। মোবারক হোসন সাহেব ফিরে এসেছেন। তিনি ইজিচেয়ারে বসতে বসতে বললেন, হিমু, তুমি তোমার বন্ধুকে আগামীকাল চাকরিতে জয়েন করতে বল। আমি কথা বলেছি।
“ধন্যবাদ স্যার, আমি তাহলে উঠি?”
‘বোস, চা খেয়ে যাও। চা আনছে।’
এদের বাড়ির বড়বুবু চা দিয়ে গেছে। মোবারক হোসেন সাহেব চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছেন। তিতলী চায়ের কাপ মুখের কাছে নিয়ে নামিয়ে রেখেছে। মনে হচ্ছে কিছু বলবে, কি বলবে তা গুছাতে সময় লাগছে। সে বাবার দিকে কঠিন দৃষ্টিতে তাকাল । মোবারক সাহবে বললেন, তোর কি হয়েছে?
“কিছু হয়নি।’
‘এরকম করে তাকাচ্ছিস কেন?”
‘যেভাবে আমি তাকাই সেই ভাবেই তাকাচ্ছি।’
‘তুই এখান থেকে যা। আমি হিমুর সঙ্গে কথা বলব।’
‘যা বলার আমার সামনেই বল। আমি কোথাও যাব না।’
সে আবারো চায়ের কাপে মুখের কাছে নিল, আবারো নামিয়ে রাখল। মেয়েটির এই হঠাৎ পরিবর্তনের কোন কারণ ধরতে পারছি না। আমি চা শেষ করে উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে বললাম, স্যার আজ যাই। অন্য আরেক দিন আসব।
তিতলী বলল, অন্যদিন টন্যদিন না। আপনি আর এ বাড়িতে আসবেন না। আর কেউ জানুক না জানুক আমি জানি ভাইয়া নিখোঁজ হয়েছে আপনার কারণে। আপনাকে আমি এত সহজে ছাড়ব না।
আমি আবার বসে পড়লাম। মোবারক সাহেব বললেন, কটা বাজে দেখতো হিমু। ‘স্যার আমার সঙ্গে ঘড়ি নেই।’

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top