ঈমানদীপ্ত দাস্তান ২য় খণ্ড – এনায়েতুল্লাহ আলতামাশ – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download

ঈমানদীপ্ত দাস্তান ২য় খণ্ড – এনায়েতুল্লাহ আলতামাশ – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।

মহান আল্লাহ বলেন –

পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন

আল কুরআন

জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ

অনুবাদঃ এনায়েতুল্লাহ আলতামাশ

পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ২৫৭

ঈমানদীপ্ত দাস্তান ২য় খণ্ড – বইটির এক ঝলকঃ

ক্যাম্পে যান আলী। আইওনার বলা নামের লোকটিকে খুঁজে বের করেন। প্রাথমিক কুশল বিনিময়ের পর ছেলে-মেয়ে আছে কিনা বৃদ্ধকে জিজ্ঞেস করেন তিনি। জবাবে বৃদ্ধ জানান-
দু’টি ছেলে আর একটি মেয়ে ছিল। ষোল বছর আগে আমার এই ক্যাম্পে নিক্ষিপ্ত হওয়ার প্রাক্কালে খৃষ্টান দস্যুদের হাতে নিজ ঘরে মায়ের সঙ্গে খুন হয় বড় ছেলে। ছোট ছেলে পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নেয় পাশের এক বাড়িতে। এই ক্যাম্পে বসে শুনেছিলাম, ওকে নাকি পরে সিরিয়া পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল। এখন বেঁচে আছে কিনা জানিনা। আর আর মেয়েটিকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে বদমাশরা। মেয়ের কথা বলতে গিয়ে সংযম হারিয়ে ফেলেন বৃদ্ধ । কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি। নিজেকে কিছুটা সামলে নিয়ে করুণ কণ্ঠে ভাঙ্গা গলায় বৃদ্ধ আবার বলেন, হায়! আমার সাত বছরের ফুটফুটে দুরন্ত মেয়েটিকে তুলে নিয়ে গেল ওরা! আহ! জানি না মেয়েটির আমার পরিণতি কি হয়েছে! অশ্রুতে ভিজে গেছে বৃদ্ধের দু’চোখের পাতা। ফোঁটা ফোঁটা অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে তার কপোল বেয়ে ।
মধ্যরাত। বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ায় আইওনা। ঘুম আসছে না তার। এ পর্যন্ত কেবল এপাশ-ওপাশ করে ছট্‌ফট্ করে কাটিয়েছে সে। আলী বিন সুফিয়ানের আচরণে আইওনা আন্দাজ করেছে যে, তাকে তারা এখনো বিশ্বাস করতে পারেনি। না জানি এখন পরিণতি কি ঘটে! আলীর মনে কিভাবে বিশ্বাস জন্মানো যায়, তা ভাবছে আইওনা ।
পাশাপাশি প্রতিশোধের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলছে তার মনে। আম্মাদের সঙ্গে নিজ বাড়িতে ঢুকে শৈশবের অনেক স্মৃতি-ই খুঁজে পেয়েছে সে। অপহরণের পর সীমাহীন আদর-যত্ন, আমোদ-আহলাদ আর উন্নত খাবার দিয়ে দেহে তার রূপের এই যে জোয়ার সৃষ্টি করা হয়েছিল, তারপর সেই জোয়ারে ভাসিয়ে দেয়া হয়েছিল তার অতীত, তার পরিচয়, তার সতীত্ব-সম্ভ্রম। তাকে পরিণত করা হয়েছে পাপের এক কালিমূর্তিতে, স্মৃতিপটে সব ভেসে উঠে আইওনার। এর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য উথাল-পাথাল করছে তার মন। ত্বরা সইছে না এক মুহূর্তও। আবার পিতার সঙ্গে সাক্ষাত করার ইচ্ছাও তার প্রবলতর হচ্ছে ধীরে ধীরে।
কিন্তু কক্ষ থেকে বের হওয়ার পথ কি? বাইরে দু’জন প্রহরী টহল দিয়ে বেড়াচ্ছে। কিছুই ভেবে পায়না আইওনা। কোন বুদ্ধি আসল না তার মাথায়
গাত্রোত্থান করে উঠে দাঁড়ায় আইওনা। কক্ষের দরজাটা ঈষৎ ফাঁক করে উঁকি দেয় বাইরে। কারো কথা বলার শব্দ কানে আসে তার। ডান দিকে গজ বিশেক দূরে সান্ত্রী দু’জনকে ছায়ার মত চোখে পড়ে। ওরাই ওখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গল্প করছে। দরজার দুই কপাটের ফাঁক দিয়ে মাথা বের করে ওদের প্রতি তাকিয়ে থাকে আইওনা । কেন যেন আরো খানিকটা দূরে অন্ধকারে সরে যায় সান্ত্রীদ্বয় ।
বেরিয়ে পড়ে আইওনা। পা টিপে টিপে অতি সাবধানে সন্তর্পণে ভবনের আড়ালে প্রহরীদের দৃষ্টির বাইরে চলে যায় সে।
বেগার ক্যাম্পের অবস্থা আইওনার পূর্ব থেকে-ই জানা। এই ক্যাম্প যে এখন কারাগার নয়- অতিথিশালা, তাও তার অবিদিত নয়। কাজেই ক্যাম্পে গিয়ে সান্ত্রীর হাতে ধরা পড়ার আশংকা তার নেই।
দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে আইওনা। হঠাৎ পিছনে কারো পায়ের আওয়াজ শুনতে পায় সে। পিছনে ফিরে তাকায় মেয়েটি। কিন্তু দেখতে পায় না কিছু-ই। ভ্ৰম মনে করে আবার হাঁটা শুরু করে। পিছনে আবারো সেই পদশব্দ। কে যেন লম্বা পায়ে এগিয়ে আসছে তার দিকে।
কেউ আসছে কিনা পিছনে ফিরে তাকায় আইওনা। চলার গতি থামিয়ে এই পিছন পানে দৃষ্টি দিবে বলে, হঠাৎ তার মাথা ও মুখমন্ডলে এসে পড়ে একটি মোটা বস্ত্ৰ । চোখের পলকে বস্ত্রটি জড়িয়ে ধরে আইওনাকে। দু’টি শক্ত বাহু ঝাঁপটে ধরে তুলে নিয়ে যাচ্ছে তাকে।
কেঁপে উঠে আইওনা । মাথার চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত সর্বাঙ্গ কাঁটা দিয়ে উঠে তার। ঝাপটা দিয়ে নিজেকে মুক্ত করে নেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় সে।
অন্ধকার রাত । জনমানবহীন অনাবাদী এলাকা। কিছুদূর অগ্রসর হওয়ার পর একটি কম্বলে পেঁচিয়ে গাঠুরীর মত করে কাঁধে তুলে নেয়া হয় মেয়েটিকে। তারা ছিল দু’জন।
আঁধা ঘন্টা পর কাঁধ থেকে নামিয়ে পুটুলি থেকে বের করা হয় আইওনাকে। আইওনা নিজেকে একটি কক্ষে আবিষ্কার করে। টিম্ টিম্ করে দু’টি প্রদীপ জ্বলছে কক্ষে ।
চারজন লোক তাকিয়ে আছে তার প্রতি। বিস্ময়াভিভূ নেত্রে এক এক করে সকলের প্রতি দৃষ্টিপাত করে আইওনা। বলে, ‘তোমরা এখনো এখানে? একি, মিঃ জেরাল্ড আপনি? আপনিও এখানে?’
‘আমরা গিয়ে আবার এসেছি- তোমাকে বের করে নেয়ার জন্য। ভালো-ই হল যে, তোমাকে পেয়ে গেছি!’
দুর্গ দখলের পর যেসব খৃষ্টান গোয়েন্দা মেয়ে মুসলমানদের হাতে ধরা পড়েছে, তাদেরকে বের করে নেয়ার জন্য এবং যারা শোবকে আত্মগোপন করে আছে, তাদের সংগঠিত করে সম্ভব হলে তাদের দ্বারা নাশকতামূলক কাজ করানোর উদ্দেশ্যে কাক থেকে চল্লিশ সদস্যের একটি কমান্ডো বাহিনীকে শোবকে প্রেরণ করা হয়েছিল। এ চারজন সে বাহিনীর সদস্য। আস্তাবলে ঢুকে ঘোড়ার খাদ্যে ও লঙ্গরখানায় মানুষের খাবারে বিষ মেশানো আর আগুন লাগানো এদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের প্রধান অংশ। গ্রুপ কমান্ডার জেরাল্ড এ কাজে বেশ পারদর্শী। আইওনা তার শিষ্য। গলায় গলায় ভাব ছিল দু’জনের।
কিন্তু এখন? লোকটিকে দেখামাত্র প্রবল ঘৃণা ও প্রতিশোধ স্পৃহায় মাথায় খুন চড়ে যায় আইওনার। কিন্তু তৎক্ষণাৎ সামলে নেয় সে নিজেকে। এটা ঘৃণার বহিঃপ্রকাশের জায়গা নয় । এখানে বসে প্রতিশোধ নেয়া যাবে না। কিন্তু আইওনা যে সম্পূর্ণ বদলে গেছে, জেরাল্ড তা জানবে কি করে?
‘কোথায় যাচ্ছিলে তুমি?’ আইওনাকে জিজ্ঞেস করে জেরাল্ড।
‘সুযোগ পেয়ে পালাতে চেয়েছিলাম।’ জবাব দেয় আইওনা ।
মিঃ জেরাল্ড আইওনাকে জানায়, নির্যাতিত মুসলমানের ছদ্মবেশে চল্লিশজনের কমান্ডো গুপ্তচর নিয়ে আমি এখানে এসেছি। সেদিন শোবকের প্রধান ফটকে তেমন কোন কড়াকড়ি ছিল না। যুদ্ধের কারণে মুসলিম সৈনিকরা হরদম যাওয়া-আসা করছিল। আশপাশের পল্লী অঞ্চলের মুসলমানরাও দলে দলে শহরে প্রবেশ করছিল। এ সুযোগে আমরাও বিনা বাধায় ভিতরে ঢুকে পড়ি।
জেরাল্ড আইওনাকে আরও জানায়, যে বাড়িটিতে আমাদের গোয়েন্দা মেয়েরা বন্দী হয়ে আছে, দু’দিন ধরে তার উপর আমরা সতর্ক দৃষ্টি রাখছি। প্রহরীদের গতিবিধির প্রতিও আমাদের বেশ কড়া নজর। সৌভাগ্যবশত আমরা তোমাকে পেয়ে গেলাম । অন্যদেরও বের করে আনা যায় কি করে বল। আইওনা বলে, ওদেরকে বের করে আনা দুরুহ হলেও অসম্ভব নয়। কৌশলে চেষ্টা করলে সফলতা আশা করা যায়।
রাতে-ই পরিকল্পনা প্রস্তুত হয়ে যায়। আইওনা জেরাল্ডকে জানায়, মেয়েরা যেখানে থাকে, সেটি জেলখানা নয়- উন্মুক্ত ক’টি কক্ষ মাত্র। প্রহরী মাত্র দু’জন। এ জাতীয় আরো অনেক তথ্য দেয় আইওনা।
মেয়েদের বের করে আনার জন্য কয়েকজন লোক সেখানে যাবে বলে সিদ্ধান্ত হল। অন্যরা থাকবে অমুক বাড়িতে।
সিদ্ধান্তের পর আইওনা বলে, আমার ফিরে যাওয়া দরকার। কারণ, আমার পলায়নের সংবাদ জানাজানি হয়ে গেলে মেয়েদের প্রহরা কঠোর হয়ে যাবে। ফলে আমাদের এ অভিযান ব্যর্থ হবে ।
আইওনার প্রস্তাবটি জেরাল্ডের মনঃপূত হল। সঙ্গে করে রাতারাতি আইওনাকে তার কক্ষের নিকটে পৌঁছে দিয়ে যায় সে। আইওনাকে বাইরে থেকে আসতে দেখে প্রহরীরা জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে, সে কোথায় গিয়েছিল, কেন গিয়েছিল, কি আশয়- বিষয় ইত্যাদি। আইওনা শান্ত কণ্ঠে বলে, বেশী দূরে নয়- ঐ তো ওখানে একটু ঘুরতে গিয়েছিলাম । মনটা ভাল লাগছিল না কিনা তাই । কক্ষে প্রবেশ করে আইওনা। প্রহরীরাও নিজেদের কর্তব্যে অবহেলার কথা স্মরণ করে চুপসে যায়।
পরদিন ।
আইওনা প্রহরীদের বলে, আমাকে তোমরা একটু আলী বিন সুফিয়ানের নিকট নিয়ে চল; তাঁর সঙ্গে আমার জরুরী কথা আছে। প্রহরীরা অসম্মতি জানিয়ে বলে, প্রয়োজন হলে তিনি-ই তোমাকে ডেকে পাঠাবেন, তোমাকে নিয়ে যাওয়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আইওনা প্রহরীদের প্রয়োজনের গুরুত্ব বুঝাবার চেষ্টা করে। বলে, দেখ, তার সঙ্গে অত্যন্ত জরুরী কথা আছে, দয়া করে আমাকে দিয়ে আস। অন্যথায় কারো মাধ্যমে শুধু এ সংবাদটা পৌছিয়ে দাও যে, আমার তাকে বড্ড প্রয়োজন । আইওনা একথাও বলে, তোমাদের অবহেলায় যদি সংবাদটা না পৌঁছে, তবে এর জন্য যে ক্ষতি হবে, তার মাশুল তোমাদেরও ভোগ করতে হবে বলে দিচ্ছি।
আলী বিন সুফিয়ান তার কক্ষে গুরুত্বপূর্ণ এক কাজে ব্যস্ত। ইত্যবসরে সালাম দিয়ে এক ব্যক্তি কক্ষে প্রবেশ করে। মাথা তুলে তাকান আলী। আগন্তুকের সালামের জবাব দেন। আগন্তুক নিজের পরিচয় দিয়ে বলে, গতকাল আইওনা নামের যে গোয়েন্দা মেয়েটিকে রেখে এসেছিলেন, সে আপনার সঙ্গে সাক্ষাত করতে চায়। আপনার সঙ্গে নাকি তার জরুরী কথা আছে। সংবাদটা আপনাকে না জানালে যে ক্ষতি হবে, তার জন্য প্রহরীদের শাস্তি ভোগ করতে হবে বলেও সে শাসিয়ে দিয়েছে। সংবাদ পাওয়া মাত্র আলী বিন সুফিয়ান আইওনাকে ডেকে পাঠান। কক্ষ ত্যাগ করে বেরিয়ে আসে আইওনা। সেই কক্ষে আর ফিরে যায়নি সে।
নীরব-নিস্তব্ধ গভীর রজনী। শোবকের কোথাও কেউ জেগে নেই। গভীর সুষুপ্তিতে নিমগ্ন সমগ্র নগরী। গোয়েন্দা মেয়েদের বন্দী করে রাখা ভবনটির চারদিকে নড়াচড়া করছে আট-দশটি ছায়ামূর্তি। কোন প্রহরী নেই। অবাক্ হল ওরা। হামাগুড়ি দিয়ে কাছে এগিয়ে যায় লোকগুলো। বন্দী মেয়েরা কোথায় কিভাবে থাকে, সব বলে এসেছিল আইওনা। দু’জন ঢুকে পড়ে এক কক্ষে। বাকীরা ঢুকে পড়ে অন্য কক্ষগুলোতে। কোন প্রহরী আছে কি-না, নিশ্চিত হওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি তারা । আইওনা বলেছিল, প্রহরী থাকে মাত্র দু’জন। এখন থাকলেও দু’জনকে ঘায়েল করা আট-দশজনের পক্ষে কঠিন হবে না। অবলীলায় সব ক’জন ঢুকে পড়ে মেয়েদের কক্ষগুলোতে। কিন্তু তারপর আর বের হল না একজনও ।
গত রাতে আইওনাকে যে ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, গেরাল্ড সে ভবনের একটি কক্ষে বসা ! পরিকল্পনা মোতাবেক এ বাড়িতে বিশজন লোক অবস্থান করছে। অন্যরা লুকিয়ে আছে এক খৃষ্টানের বাড়িতে। গেরাল্ড অপেক্ষা করছে অধীর চিত্তে। এতক্ষণে অভিযান সফল করে মেয়েদের নিয়ে ওদের ফিরে আসার কথা। কিন্তু আসছে না এখনো! অস্থির হয়ে উঠে গেরান্ডে মন। এ অভিযান তো ব্যর্থ হবার কথা নয় ! ঠক্‌ ঠক্‌ ঠক্ ।
দরজায় করাঘাতের শব্দ শুনতে পায় গেরাল্ড। তারই নির্ধারিত সাংকেতিক শব্দ । অতএব সন্দেহের কোন কারণ নেই। দ্রুত উঠে গিয়ে গেরাল্ড নিজে দরজার অর্গল খুলে দেয় । অমনি কে একজন ঝাপটে ধরে টেনে হেঁচড়ে বাইরে নিয়ে যায় গেরাল্ডকে। দেখতে না দেখতে ছুটে আসে একদল সৈনিক। দ্রুতপদে ঢুকে পড়ে তারা ভিতরে ।
প্রশস্ত একটি কক্ষে বসে আছে বিশজন সন্ত্রাসী গোয়েন্দা। আত্মসংবরণ করার সুযোগ পেল না তারা । একযোগে ঝাঁপিয়ে পড়ে সৈন্যরা কেড়ে নেয় তাদের অস্ত্র । তীর-তরবারী-খঞ্জর, যা ছিল সব।
ভবনটির মালিক একজন ধনাঢ্য খৃষ্টান। এখানেই স্বপরিবারে বাস করছে সে। পরিবার-পরিজনসহ তাকে এবং গ্রেফতারকৃত বিশ সন্ত্রাসী খৃষ্টানকে হাতকড়া পরিয়ে বের করে নিয়ে যায় সৈনিকরা।
বাদ বাকী খৃষ্টান সন্ত্রাসী অপর যে বাড়িটিতে প্রস্তুতি নিয়ে বসে ছিল, একই সময়ে হানা হয় সেখানেও। এ রাতে এভাবে আকস্মিক হানা হয় দশ-এগারটি বাড়িতে। রাতভর চলে মুসলিম বাহিনীর এ বিস্ময়কর অভিযান।
এ অভিযানে গ্রেফতারকৃত সন্ত্রাসী গুপ্তচরদের পরদিন সকালে সুলতান আইউবীর সামনে হাজির করা হয়। তন্মধ্যে খৃষ্টানদের প্রেরিত কমান্ডো বাহিনীর চল্লিশজন সদস্য, বাহিনী প্রধান গেরাল্ড ছাড়াও ছিল বিভিন্ন বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ধৃত আরো চল্লিশজন গুপ্তচর। এসব বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে পাওয়া গিয়েছিল বিপুলসংখ্যক অস্ত্র, প্রচুর পরিমাণ বিষ, অসংখ্য তীর, বিস্ফোরক ও মোটা অংকের নগদ অর্থ ।
এ অভিযানের কৃতিত্ব সম্পূর্ণ আইওনার। গেরাল্ডের সঙ্গে পরিকল্পনা তৈরি করে সহকর্মীদের কে কোথায় লুকিয়ে আছে জেনে নিয়ে ফিরে এসেছিল সে। আইওনার প্রতি পূর্ণ আস্থা ছিল গেরাল্ডের। পরদিন সকালে আইওনা সব পরিকল্পনা ফাঁস করে দেয় আলী বিন সুফিয়ানের নিকট। আলী বিন সুফিয়ানের গুপ্তচররা দিনাদিন সবগুলো বাড়ির অবস্থান জেনে নেয়।
এসব ঠিকানায় অভিযান পরিচালনার উদ্দেশ্যে সন্ধ্যার পর সুলতান আইউবীর বিশেষ কমান্ডো বাহিনীকে তলব করা হয়। বন্দী মেয়েদেরকে সরিয়ে নিয়ে লুকিয়ে রাখা হয় অন্যত্র। তাদের পরিবর্তে প্রতিটি কক্ষে বসিয়ে রাখা হয় তিনজন করে কমান্ডো সদস্য। তুলে নেয়া হয় প্রহরীদের। রাতের বেলা খৃষ্টান কমান্ডো সদস্যরা যেই মাত্র কক্ষগুলোতে হানা দেয়, অনি ওঁৎ পেতে থাকা মুসলিম কমান্ডোরা ধরে ফেলে তাদের।

বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!

বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Scroll to Top