ভারততত্ত্ব – আল বিরুনী – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ মুহাম্মদ জালালউদ্দীন বিশ্বাস
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ৩২২
ভারততত্ত্ব – বইটির এক ঝলকঃ
সেই সঙ্গে, হিদুশাস্ত্র বিষয়ক বইপুস্তকগুলোও বিভিন্ন ছন্দোবদ্ধ রচনা দ্বারা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। যা এই অভিপ্রায় থেকেই করা হয়েছে যে, ছন্দোবদ্ধ রচনা কণ্ঠস্থ করতে সহজ হয়, অন্যথায় পুস্তকগুলোতে কোথাও বা প্রক্ষেপ ও কোথাও বা বিলোপনের মাধ্যমে বিকৃত করা হয়। সেই সঙ্গে, তারা তাকেই প্রামাণ্য বলে মনে করে যা কণ্ঠস্থ হতে পারে। লিখিতরূপে যা কিছু বিদ্যমান রয়েছে, তাদের দৃষ্টিতে সে সবের কোনো গুরুত্ব নেই। একথা সর্বজনবিদিত সত্য যে, সব ধরনের ছন্দোবদ্ধ রচনায় এমন সব অস্পষ্ট ও ভারিক্কি শব্দাবলির প্রয়োগ করা হয় যার উদ্দেশ্য কেবল ছন্দের মিল রক্ষা করা আর এক ধরনের সংযোগ রক্ষা করা। আর এ কারণেই কম বেশি শব্দাড়ম্বর সেখানে অত্যাবশ্যক হয়ে দেখা দেয়। এটাও একটা কারণ যে, সেখানে একই শব্দ ভিন্ন ভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়।
এ সমস্ত বিবরণ থেকে একথা স্পষ্ট হয়ে যাবে যে, সাহিত্যিক রচনাবলি ছন্দোবদ্ধ হওয়ার কারণে সংস্কৃত সাহিত্যের অধ্যয়ন বিশেষভাবে দুরূহ হয়ে পড়েছে।
দ্বিতীয় কারণ : তাদের অতীতমুখী ধর্মীয় ধ্যান-ধারণা
দ্বিতীয়, ধর্মের ক্ষেত্রেও তারা আমাদের থেকে সর্বথায় ভিন্ন। কেননা, যে কথা আমরা বিশ্বাস করি, সে কথা তারা বিশ্বাস করে না আর তাদের বিপরীতে আমাদের যা বিশ্বাস, তা তাদের নেই। সব মিলিয়ে প্রশ্ন যেখানে ধর্মবিজ্ঞান বিষয়ক সেখানে তারা খুব জোর বিবাদাস্পদ তর্ক উপস্থিত করে ; যদি তারা কখনো ঝগড়া বিবাদেও লিপ্ত হয় তাহলে সে লড়াই ভাষার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, কিন্তু ধর্মের প্রশ্নে তারা কখনো নিজেদের আত্মা, শরীর বা সম্পদকে বাজি রাখে না। এর বিপরীতে তাদের ধর্মান্ধতার লক্ষ্য হলো তারাই- তাদের চোখে যারা বিদেশি অর্থাৎ স্বদেশিরা নয়। তারা বিদেশিদের ম্লেচ্ছ বা অপবিত্র জ্ঞান করে। তাদের সঙ্গে তারা যে কোনো প্রকারের সম্পর্ক রাখতে নিষেধ করে, তা সে আন্তর্বিবাহ হোক বা তাদের সঙ্গে ওঠা-বসা বা খানাপিনাই হোক। কেননা, তাদের ধারণা, এটা করলে তারা অপবিত্র হয়ে যাবে। বিদেশিরা যা কিছু স্পর্শ করে তাই তাদের কাছে অপবিত্র বলে বিবেচিত হয়। এমনকি পানি বা আগুনও। অথচ একথা আলোর মতো স্পষ্ট যে, আগুন ও পানি ছাড়া ঘর-গেরস্থালি চলে না। এ ছাড়া তাদের এ প্রবৃত্তি কখনোই হয় না, যে বস্তু এক কথায় অপবিত্র হয়ে যায় তাকে পবিত্র করে পুনরায় ব্যবহার করা হোক। কেননা, সাধারণ পরিস্থিতিতে যদি কোনো ব্যক্তি বা বস্তু অশুদ্ধ হয়ে যায় তাহলে সেই ব্যক্তি বা বস্তুকে পবিত্র করে তাকে পূর্বাবস্থায় ফিরে পাওয়ার চেষ্টা মানুষ সাধারণত করে থাকে। তারা তাদের স্বধৰ্মীয় লোক ছাড়া কোনো ব্যক্তিকেই নিজেদের ঘরে প্রবেশের অনুমতি দেয় না, তা সে তাদের ধর্মের প্রতি যতই আকৃষ্ট হোক না কেন। এটাও একটা অন্যতম কারণ যে, তারা তাদের সঙ্গে যে কোনো প্রকারের সম্পর্ক স্থাপনকে সর্বক্ষেত্রেই অসম্ভব বলে মনে করে। এটাই তাদের এবং আমাদের মধ্যেকার সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধক।
তৃতীয় কারণ : তাদের আচার-বিচার ও রীতি-নীতির মূল পার্থক্য
তৃতীয় কারণ এই যে, তাদের আচার-ব্যবহার ও রীতি-নীতির সঙ্গে আমাদের এত বিশাল পার্থক্য যে, তারা আমাদের বেশভূষা, নিয়মনীতি ও রীতি-রেওয়াজ থেকে তাদের সন্তানদের ভীতসন্ত্রস্ত করে রাখে, এমনকি তারা আমাদের রাক্ষস- খোক্কসের জাত বলে অভিহিত করে এবং আমাদের কার্যকলাপকে মন্দ এবং অনুচিত বলে মনে করে। সঙ্গে সঙ্গে একথাও স্বীকার করা কর্তব্য যে, বিজাতীয়দের প্রতি এ ধরনের ন্যক্কারজনক মনোভাব শুধু আমাদের আর হিন্দুদের মধ্যেই নয় ; বরং সমস্ত জাতির মধ্যে পরস্পরের প্রতি এই মনোভাব বিদ্যমান ।
চতুর্থ কারণ
চতুর্থ কারণ এই যে, হিদুদের বিজয়ী জাতির প্রতি ঘৃণা তখন বহুগুণে বেড়ে যায় যখন মুসলমানরা তাদের দেশের উপর আক্রমণ করতে শুরু করে। মুহম্মদ ইবন আল-কাসিম ইবন আল-মুনাব্বা সিজিস্তানের (সাকসাতিন) দিক থেকে সিন্ধুতে প্রবেশ করেন এবং বহমনওয়া ও মূলস্তান নামক নগর দুটি জয় করেন। তিনি প্রথম শহরটির ‘আল-মনসুরা’ ও দ্বিতীয় শহরটির ‘আল-মামুরা’ নামকরণ করেন । তিনি ভারতভূমির কেন্দ্রস্থল পর্যন্ত প্রবেশ করেন এবং কনৌজ পর্যন্ত অধিকার করেন। সেখান থেকে তিনি গন্ধার অভিমুখে অভিযান পরিচালনা করেন। ফেরার পথে তিনি কাশ্মিরের সীমা পর্যন্ত পৌঁছে যান। এই দীর্ঘ পথে তিনি কখনো বা অসি চালনা করেন আবার কখনো বা সন্ধি দ্বারা আপন উদ্দেশ্য সিদ্ধ করেন। তিনি স্বেচ্ছায় ইসলাম গ্রহণকারীদের যেমন গ্রহণ করেন তেমনই প্রাচীন ধর্মে বিশ্বাসী ব্যক্তিদের স্ব-স্ব ধর্মপালনের অধিকার স্বীকার করেন। এসব ঘটনা তাদের মনের গভীরে ঘৃণার বীজ বপন করে ।
মাহমুদ কর্তৃক ভারত আক্রমণ ও মুসলমানদের বিজয়লাভ
পরবর্তীকালে এমন কোনো মুসলিম-বিজেতার সন্ধান পাওয়া যায়নি যিনি কাবুলের সীমানা ও সিন্ধুনদ অতিক্রম করে আরও অগ্রসর হয়েছিলেন। অবশ্যই তুর্কি আমলে তা সম্ভব হয়েছিল, যখন তিনি গজনীর সামানী বংশের হাত থেকে ক্ষমতা অধিকার করেন এবং নাসিরুদ্দৌলা সবুক্তগীন ক্ষমতার উচ্চ শিখরে আরোহণ করেন। এই রাজকুমার জিহাদকে নিজের জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য বলে গ্রহণ করেন এবং সেজন্য নিজেকে ‘আল গাজি’ (আল্লাহর রাস্তায় জেহাদকারী) বলে অভিহিত করেন। তিনি তাঁর উত্তরাধিকারীদের হিত সাধনের উদ্দেশ্যে ভারত- রাষ্ট্রের সীমানাকে দুর্বল করে দেওয়ার জন্য রাস্তাঘাট নির্মাণ করেন আর সেই পথ ধরে তাঁর পুত্র ইয়ামিনউদ্দৌলা মাহমুদ ত্রিশ-চল্লিশ বা ততোধিক বছর যাবত ভারতের উপরে নিরন্তর আক্রমণ পরিচালনা করেন। আল্লাহ পিতা-পুত্র উভয়ের উপরেই রহমত বর্ষণ করুন। মাহমুদ দেশের সমৃদ্ধিকে নষ্টভ্রষ্ট করে দেন। আর সেখানে এমন ধুন্ধুমার আক্রমণ চালান যে, তার পরিণামে হিদুরা ছিন্নভিন্ন হয়ে ধূলিকণার ন্যায় চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। আর সে কথা জনসাধারণের মুখে অতীতের কাহিনিমাত্র হয়ে রয়ে গেল। তাদের সেই ছিন্নভিন্ন হওয়া উত্তরাধিকারীরা আজও পর্যন্ত মুসলমানদের প্রতি ঘৃণার মনোভাব পোষণ করে থাকে। এটাও অন্যতম কারণ যে, হিন্দুশাস্ত্র দেশের ঐ সকল স্থান থেকে দূরে চলে গেল যেখানে আমরা বিজয়লাভ করেছিলাম। এ সকল স্থান ত্যাগ করে তারা এমন সব স্থানগুলোতে অর্থাৎ কাশ্মির, বেনারস ও অন্যান্য নগর উপ-নগরে গিয়ে আশ্রয় নিল যেখানে আমাদের বিজয়ের রথ আজ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেনি। আর এগুলো হলো সে সমস্ত স্থান যেখান থেকে তারা সমস্ত বিজয়ী জাতির প্রতি ঘৃণা-বিদ্বেষ প্রচার করে যাচ্ছে। আর সেখান থেকে তারা রাজনৈতিক ও ধার্মিক দুরকম শক্তিই অর্জন করছে।
পঞ্চম কারণ : হিদুদের অভিযান ও তাদের সমস্ত বিজাতীয় জাতির প্রতি ঘৃণার মনোভাব
পঞ্চম কারণ হিসেবে এমন কিছু বিষয় এসে যায় যার উল্লেখ হাসির খোরাক জোগাতে পারে তাদের জাতীয় চরিত্রের বৈশিষ্ট্যগুলো তাদের মনের গভীরে বিদ্যমান কিন্তু তাদের আচরণ ও ধ্যান-ধারণায় তা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আমরা কেবল এতটুকুই বলতে পারি যে, মূর্খতা এমন একটা ব্যাধি যার কোনো ওষুধ নেই । আর হিন্দুদের বিশ্বাস হলো এই যে, তাদের মতো কোনো দেশ নেই। তাদের মতো না আছে কোনো জাতি, না আছে কোনো শাসক, না আছে কোনো দেশ, আর না আছে তাদের মতো কোনো বিজ্ঞান। তারা দাম্ভিক, আহম্মক, অহঙ্কারী এবং ভাবলেশহীন। তারা যা কিছু জানে, তার সম্পর্কে তারা স্বভাবগতভাবে এতটাই কৃপণ যে, অন্যে যাতে তা জেনে ফেলতে না পারে, তার জন্য তারা খুব সাবধানতা অবলম্বন করে। তারা যা কিছু জানে তা যেন অন্য জাতির নিকট পর্যন্ত পৌঁছাতে না পারে, সে ব্যাপারে তারা খুব সাবধান থাকে। আর তা কোনো বিজয়ী জাতি পর্যন্ত পৌঁছানোর তো কোনো প্রশ্নই ওঠে না। তাদের মতানুসারে এ জগৎ- সংসারে তাদের মতো আর কোনো দেশ নেই। তাদের মতো নেই কোনো জাতি এবং তাদের নিকট ছাড়া পৃথিবীতে আর কোনো জাতি নেই যাদের কাছে কোনো রকমের জ্ঞান বা বিজ্ঞান আছে। তাদের দর্পের আর একটা নমুনা হলো এই যে, যদি আপনি তাদের সামনে অন্য কোনো বিজ্ঞান বা খুরাসান ও ইরানের কোনো বিজ্ঞানের নাম উচ্চারণ করেন তাহলে সে আপনাকে শুধু মূর্খ নয়, মিথ্যাবাদী বলেও অভিহিত করবে। যদি তারা নিজের দেশের বাইরে যায় এবং অন্যান্য জাতির সঙ্গে মেলামেশা করে, তাহলে অনতিবিলম্বেই তাদের পরিবর্তন হয়ে যাবে বলে তারা মনে করে। কারণ, তাদের পূর্বপুরুষেরা এতটা সঙ্কীর্ণমনা ছিল না, যতটা বর্তমান প্রজন্ম ।
লেখকের ব্যক্তিগত সম্পর্ক
এখন ভারতের এটাই বাস্তবিক পরিস্থিতি। আমার বিষয়ে কাজ করতে গিয়ে আমাকে অনেক কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। যদিও এদের সঙ্গে আমি ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত, আর সম্ভবত, সে যুগে আমিই একমাত্র ব্যক্তি, যে সংস্কৃত গ্রন্থাবলি প্রাপ্তির জন্য এতটা কষ্ট স্বীকার করতে প্রস্তুত। এখানে আমার অর্থোপার্জন বা অন্যান্য লাভালাভের কোনো প্রশ্নই নেই। এখানে আমার সেই ব্যক্তিরই প্রয়োজন, এবং অনেক দূর হতেও এমন হিদু পণ্ডিতকে নিয়ে আমার প্রচেষ্টা চালাচ্ছি যিনি বোদ্ধা এবং আমাকে পড়াতে সক্ষম। আর এমন বিদ্যার্থী আর কোথায় পাবে, যার এ সব বিষয় অধ্যয়নের জন্য পর্যাপ্ত সময়ও রয়েছে ? এমন ঘটনা তো বিরল যাঁকে আল্লাহ তাঁর অনুগ্রহ থেকে দান করেন, কিন্তু সে সুযোগ তিনি আমায় দেননি – অর্থাৎ কাজের ক্ষেত্রে চলাফেরার প্রয়োজন, সেই পূর্ণ স্বাধীনতা থেকে আমি বঞ্চিত। আমি সেই পূর্ণ শক্তি ও সামর্থ্য কখনোই লাভ করিনি, যা আমার চাওয়া-পাওয়ার ক্ষেত্রে আমার দৃষ্টিতে খুবই শ্রেষ্ঠ প্রতিপন্ন হতে পারত। কিন্তু তা সত্ত্বেও আল্লাহ আমাকে যা দিয়েছেন সে জন্য আমি তাঁর শোকর আদায় করছি আর তিনি আমাকে যা দিয়েছেন, তা আমার জন্য যথেষ্ট বলে মনে
করি।
অ-ইহুদি ইউনানিদেরও খ্রিষ্টধর্মের আবির্ভাবের পূর্বে এমন অনেক মত ছিল, যেমনটি ছিল হিন্দুদের ; তাদের মধ্যেকার শিক্ষিত শ্রেণীর মধ্যেও এমন মত প্রচলিত ছিল, যেমনটি হিন্দুদের মধ্যেও আছে; তাদের মধ্যেকার সাধারণ মানুষেরাও হিদুদের ন্যায় মূর্তি পূজায় বিশ্বাসী ছিল…। কিন্তু ইউনানিদের মধ্যে দার্শনিকও ছিল যারা নিজেদের দেশে সামান্যতম অন্ধবিশ্বাসকেও প্রশ্রয় দেননি ; বরং তাদের জন্য বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব আবিষ্কার করলেন এবং তার সমাধান প্রস্তুত করলেন…। সক্রেটিসের যুগের ঐ সময়ের কথা কল্পনা করুন যিনি তাঁর স্বজাতীয়দের বিরোধিতা করেছিলেন… এবং… সত্যের প্রতি অবিচল আস্থা রাখতে গিয়ে নিজের জীবন বিসর্জন দিয়েছিলেন।
বিভিন্ন শাস্ত্রে জ্ঞানলাভে সমর্থ ও আগ্রহী ব্যক্তির সন্ধান হিন্দুদের মধ্যে পাওয়া যেত না। এর কারণ ছিল, হিন্দুদের মধ্যে তথাকথিত বৈজ্ঞানিক সাধনগুলো ভিন্নভিন্ন অবস্থায় পড়ে ছিল তাদের ছিল না কোনো যুক্তিসঙ্গত তার্কিক পদ্ধতি । আর সে জন্যই কোনো বিষয়ে কোনো যুক্তিসঙ্গত সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর আগেই তা হাস্যস্পদ বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়ে যেত…। তাদের গণিত ও জ্যোতিষ শাস্ত্র পর্যন্ত সাহিত্যের তুলনা, যে পর্যন্ত আমি নিজে অবগত আছি, তাকে ধুলামাটির সঙ্গে মিশে থাকা ঝিনুক, গোবরের সঙ্গে মিশে থাকা মোতি বা কাঁকরের সঙ্গে মিশে থাকা রত্নের সঙ্গে তুলনা করা যেতে পারে। তাদের দৃষ্টিতে এ দুই ধরনের বস্ত্র পরস্পরে যে সমান, এ জন্য যে, তারা নিজেদের বিশুদ্ধ যুক্তিসঙ্গত বৈজ্ঞানিক সিদ্ধান্ত পর্যন্ত টেনে নিয়ে যেতে অক্ষম।
আমি আমার পুস্তকের অধিকাংশ স্থল টীকা-টিপ্পনী ছাড়াই কেবল বর্ণনা লিপিবদ্ধ করেছি। আর যেখানে টীকা-টিপ্পনী অত্যাবশ্যক হয়ে পড়েছে, সেখানে তা দিয়েছি। আমি প্রয়োজনীয় সংস্কৃত নাম এবং পারিভাষিক শব্দগুলোকে একবারমাত্র উল্লেখ করেছি, আর তাও আমার ব্যাখ্যাসম্বলিত সন্দর্ভে যেখানে অত্যাবশ্যক ছিল আর শব্দ ‘মূল’ হলে এবং তার অর্থ আরবিতে দেওয়া সম্ভব হলে সেখানেই মাত্র আরবি প্রতিশব্দ ব্যবহার করেছি; আর বহুল প্রচলিত সংস্কৃত শব্দগুলোকে মূলরূপেই লিপিবদ্ধ করেছি এবং তার শুদ্ধ লিপ্যান্তরণের চেষ্টাও করেছি। যদি শব্দ গঠন বা ব্যুৎপন্ন হয় কিন্তু তার সাধারণ প্রয়োগও হয় তাহলে সে ক্ষেত্রেও তাকে অক্ষত অবস্থায় রেখে দিয়েছি, তা তার প্রতিশব্দ আরবিতে থাক বা না থাক। কিন্তু তার প্রয়োগের পূর্বেই আমি তার অর্থ স্পষ্ট করে দিয়েছি।
উপসংহারে আমার সিদ্ধান্ত যে, আমরা আমাদের চর্চিত বিষয়ে সাধারণত জ্যামিতিক পদ্ধতি কঠিনভাবে অনুসরণ করতে পারি না। যা কিছু আগে আসে তার উদ্ধৃতি তো পেশ করিই ; কিন্তু যা পরে আসে তার নির্দেশ কখনো দিতে পারি না । উদাহরণত, পরবর্তী কোনো অধ্যায়ে কখনো বা অজ্ঞাত কোনো ঘটকের উল্লেখ করতে হয়েছে, যার ব্যাখ্যা পুস্তকের অন্য কোনো অধ্যায়ে দেওয়া যেতে পারে। আল্লাহ সাহায্য করুন।
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!