অপূর্ব অপেরা – শফিউদ্দিন সরদার – ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড – Free PDF Download এই বইটি ডাউনলোড করে নিন এখনি। আরো নতুন নতুন বই পেতে ভিজিট করুন আমাদের বই লাইব্রেরি।
মহান আল্লাহ বলেন –
পড়ো! তোমার প্রভুর নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন
আল কুরআন
জগতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রত্যেক জমানায়, প্রত্যেক সময়ে কিছু মানুষ এমন ছিল যারা অজানাকে জানতে চেয়েছে, বুঝতে চেয়েছে। অনুধাবন করতে চেষ্টা করেছে বিশ্বজগতের গূঢ় রহস্য, অবলোকন করেছে পরম বিস্ময়ের সাথে মহাকাশের লীলাখেলা। এই মানুষগুলোর নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলেই আজ আমরা এখানে দাঁড়িয়ে আছি এবং এত সুন্দর কিছু প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারছি, পৃথিবী এগিয়ে যাচ্ছে উন্নয়নের সোপান বেয়ে তরতর করে। এই পথচলার মাঝেই আরেকটি ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের এই ওয়েবসাইট। এখানে বাংলাভাষায় এবং অন্যান্য সকল ভাষায় পরবর্তীতে সর্বাধিক বইয়ের লাইব্রেরি করার ইচ্ছা আমাদের রয়েছে। বারবার এই সাইট বন্ধ হয়েছে, অন্য নামে আবার এসেছে, আসবে। এইজন্যে আপনাদের সাপোর্ট প্রয়োজন। আপনারা প্রতিনিয়ত সাইটে ভিজিট করে যাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। আমাদের জানাবেন কোনো সমস্যা থাকলে।

বইটি সম্পর্কেঃ
অনুবাদঃ শফিউদ্দিন সরদার
পৃষ্ঠাসংখ্যাঃ ১৪১
অপূর্ব অপেরা – বইটির এক ঝলকঃ
আমার কথাঃ আশাভঙ্গের নিদারুণ মমব্যথার চেয়ে কিছুটা মিথ্যা আশা পোষণ করাও শ্রেয়ঃ। www.boighar.com
পরের দিন সালেহার কথায় বসে রইলাম, সারাবেলা। ধরা বাধা কথা হেনা নাকি আসবেই আজ সকালে। কিন্তু এলোনা। বিকেলে তার খোঁজে গিয়ে শুনি, সে বেড়াতে গেছে তার কোন এক বান্ধবীর বাড়ীতে। তার পরের দিনও বসে রইলাম অপেক্ষায়। কিন্তু নিষ্ফল। এলোইনা আর হেনা। বুঝলাম, বান্ধবীর বাড়ীতে বেড়াতে যাওয়ার সময় আছে যার, তার না আসা মানে, সে আর আসবে না। শেষের দিন বাইরে বসে ভাবতে লাগলাম, এবার ঘরে ফেরা প্রয়োজন। এই অকারণ কালক্ষয় জমা খরচের খাতায় যা যুক্ত করা শুরু করেছে তা দীর্ঘাকাল সমর্থন করা যায় না। খরচের হাত খাটো করা দরকার। সালেহার জিদ – আমার আর একবার যাওয়া উচিত সেখানে। কিন্তু আমি বুঝি, সে ঔচিত্যবোধের উৎস আমার শুকিয়ে গেছে নিঃশেষে। বিষয় বিত্তহীনতার এক উড়তি খবর পেয়েই যে পিছিয়ে যায় পেছেনে, তার পেছনে ধাওয়া করা ধাত বিরুদ্ধ আমার। কাউকে সেধে যেচে কাছে টানার উৎসাহ আমার কোথায় ? তা যদি একবিন্দুও থাকতো, নাদিরাও কমরূপসী নয়, ঘর ছেড়ে পথে নামার প্রশ্নই আর এ জীবনে উঠতো না । যে পরমার্থের অপেক্ষায় কেটে গেল দুপুর, বাস্তবে তার অস্তিত্ব নাও যদি থাকে, বিকেলটাও কেটে যাক আশায় আশায়, তবু হতাশ হয়ে দুধের স্বাদে ঘোল খেয়ে আত্মপ্রবঞ্চনা করবো না। কাজেই, হেনার কাছে গিয়ে আর কাজ নেই মর্মব্যাথা বাড়িয়ে । আমার আমিত্বে আমি যেমন ছিলাম তেমনি থাকবো এই তো আমার ষ্টার। অতীত আমার সাফা, বর্তমান শূন্য, ভবিষ্যৎ অন্ধকার। অন্ধকারটা অন্ধকারই থাক। সেখানেও টর্চ মেরে মহাশূন্য দেখার চেয়ে, থাক না একটা মিথ্যা আশার উৎস। কাছে গিয়ে নিঃস্ব হওয়ার চেয়ে, ভবিষ্যতের জন্যে কিছু
সম্বল রাখা ভাল।
সালাম সাব । মতোই আমার সবকিছু শুরু হয় সাড়ম্বরে, শেষ হয় অশ্বড়িম্বের আকারে । মুখ তুলতেই একটা চিরকুট বাড়িয়ে ধরলো গোঁফওয়ালা। বললো, আম্মার চিঠি ।
খুলে দেখি, হেনা লিখেছে, একটা বিতর্কের আসর বসেছে বাড়ীতে। আপনি তার সভাপতি। পত্র পাঠ মাত্র চলে আসুন বাবু লালের সাথে। প্লীজ, আসবেন কিন্তু অবশ্যই।’
বাহকের নাম বাবুলাল । লোকটা বাবু নয়, তার গোঁফটা কালোর চেয়ে লালই বেশী । সামঞ্জস্য আছে একটা। জিজ্ঞেস করলাম, তোমার পিতার নাম কি বিহারী লাল না ব্রজলাল ? বললে আজ্ঞে না, লালু খা। বললাম, মানে। সে বলল, মানে লাল মোহাম্মদ খা
মে গড সেভ হিজ আইডেন্টিটি।
ডেকে যখন পাঠিয়েছেই তখন না যাওয়াটা ঠিক নয়। গিয়ে দেখি, নরক গুলজার। রং বেরং এর স্ত্রীপুরুষে ড্রয়িংরুম ভর্তি। ড্রয়িংরুমে ঢুকতেই বাধা দিলো বাবুলাল । বললো, এদিকে নয় ঐ সামনের ঘরে আসুন ।
সামনের ঘরে ঢুকে দেখি, একা বসে হেনা। তার উস্কোখুস্কো মুখমন্ডল কাল বৈশাখীর মেঘ। আমাকে দেখেই সে আক্রমণ করলো সরাসরি। বললো, কাউকে কোন কথা দিয়ে সে কথা রক্ষে করা শুধু ভদ্রতাই নয়, মানুষের ওজনটাও যাচাই হয় তাদিয়ে। এটুকু জ্ঞান আপনার আছে বলেই ধারণা ছিল আমার।
আমার ত্রুটিটা বুঝলাম। কিন্তু খুশী হতে পারলাম না হেনার কথা বলার ধরণে। হঠাৎ এমন বৈরী সুলভ আচরণ করবে হেনা এটা কল্পনাও করিনি। বললাম, আপনি কি একথা শুনানোর জন্যেই ডেকে পাঠিয়েছেন আমাকে ?
ঐ একই রকম কন্ঠস্বরে হেনা আবার বললো-
– আপনাকে কি জন্যে ডেকে পাঠিয়েছি, তা জানিয়েছি লিখেই। কাউকে ব্লাফ দেয়ার অভ্যাস আমার নেই । – ত্রুটি আমার স্বীকার করছি। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, আমি এমন কিছু করিনি, যা ব্রাফের পর্যায়ে পড়ে। সে দিন আসতে না পারলেও তার পরের দিন এসেছিলাম ঠিকই । – সেটা যে আমার জন্যে কতখানি ক্ষতিকর হয়েছে তা বলে আর লাভ নেই এখন। তা ছাড়া একটা কুমারী মেয়ের আমন্ত্রণের চেয়ে বন্ধুর সাথে গঞ্জে যাওয়াটাই বড় হয় যার কাছে, তাকে বলার প্রয়োজনও নেই আদৌ ।
হেনার এ ইঙ্গিতে গরম হলো কর্ণমূল। একটু উষ্ণ গলায় বললাম, কি বলতে চান আপনি ?
হেনা বললো, জানেন আপনার জন্য সারাবেলা চা নিয়ে বসে ছিলাম আমি, যা আমি কারো জন্য কোনদিন করিনি?
আপনার সেই কষ্টের জন্যে আমি দুঃখিত আর আপনার সেই বদান্যতার জন্যে আমি কৃতজ্ঞ । শুধুই কৃতজ্ঞ ? আর কিছুই নয় ? আর কিছু। – আমার সঙ্গে দু’টো কথাবলার সুযোগ পেলে বর্তে যায় কতজন, আমার হাতের একপেয়ালা চা পেলে ধন্য হয় কত রথী মহারথী – এ খবর কি রাখেন? – আমার কাছে সেটা কোন গুরুত্বপূর্ণ খবর নয়। আর একজনের হাতের এক পেয়ালা চা পেলেই ধন্য হবো- এত ছোট আমি মনে করি না নিজেকে । জমজমাট আসর চলছে সঙ্গীতের। দেখলাম, অভ্যাগত ছাড়াও অনাহুত অতিথিদের ভীড় জমেছে চারদিকে। সকলেই গান নিয়ে তন্ময়, আমার উপর নজর দেয় কে। চুপ করে শুনতে লাগলাম গান। এক আধুনিকা সপুলকে গাইছেন, ফুলের বনে অলির মেলা, মোর কাননে অলি নেই।’ তার বিলাপের যথার্থতা অনুধাবন করতে আমার দেরী হয়নি আদৌ। বুঝতে পারলাম, তার অলিকুলের হরতালের কারণ। সেটা তার রূপ নয়। চেহারা তার মোটা মুটি ভালই। সমস্যা তার কন্ঠ। এমন পুরুষোচিত গলা অনেক পুরুষেরও নেই। চেহারা না দেখে শুধু কণ্ঠ শুনে এলে তার কাননে অলিনীরা আসতে পারে ঝাঁকে ঝাঁকে, কোন অলি আসার কিছুমাত্র কারণ নেই। তবু ভদ্রতার কারণেই তার গান শেষ হতেই হর্ষোৎফুল্ল আওয়াজ এলো- আর একখানা, আর একখানা ।
আল্লাদে আটখানা হয়ে ভদ্রমহিলা আর একখানা গাওয়ার উদ্যোগ করতেই ঘরে ঢুকলো হেনা। পরনে তার একে বারেই সাদা মোটা আটপৌরে পোষাক। সে ঘরে ঢুকতেই পাল্টে গেলা পরিস্থিতি। সবাই হেনার দিকে তাকিয়ে কলকণ্ঠে বলে উঠলো, কি আশ্চর্য। সেই গেলেন আর এলেন এতো পরে ? এটা ভারি অন্যায়। সবাই আমরা উদগ্রীব আছি আপনার গান শোনার জন্যে- আর আপনি আসি বলে নেই ?
অভিযোগের সুরে হেনার খালা বললেন, কি এমন কাজ ছিলরে ভেতরে ? এরা সবাই বসে রইলেন এখানে, আর তুই বেরিয়ে গিয়ে করলি কি ? সবাই এতো করে বলছেন, গা না একখান গান ।
হেনা একপলকে আমায় একটু দেখে নিয়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে গেল হারমোনিয়ামের কাছে। পূর্ববর্তী গায়িকাটি বিদ্যুৎ পিষ্ট রোগীর মতো পান্ডুর মুখে ছেড়ে দিলেন হারমোনিয়াম। হেনার আগমনে আর একটু বিলম্ব কেন হলো না, এই তার মর্মব্যথা। হারমোনিয়ামে টান দিয়ে গান ধরলো হেনা, –
শুধু মুখের কথাটি শুনে গেছো তুমি, শোননি মনের ভাষা।’ আলতো চোখে আমার দিকে চেয়ে চেয়ে সে গাইতে লাগলো সম্মোহনী সুরে। দরদ দিয়ে গান গাইতে অনেককে দেখেছি। এমন ভাবে হৃদয় ঢেলে গাওয়ার নজীর বিরল। গান শেষ হওয়ার পরও মনে হলো একটা বেদনা সিক্ত করুণ সুর তখনও ঝরে পড়ছে ঘরে বাইরে সর্বত্র। বুঝলাম, হেনা শুধু রূপসী আর বিদুষীই নয়, একজন উঁচুদরের গয়িকাও বটে। উদগত অশ্রুধারা সম্বরন করতে করতে হারমোনিয়াম ছেড়ে দিয়ে উঠে এলো হেনা। বসলো তার পাশের এক সিটে। বিপুল হাত তালি, ভুয়শী প্রশংসা এবং আর একখানা গানের জন্যে সকলের সনির্বন্ধ অনুরোধ-
বইটি ডাউনলোড করে নিন নিচের দেয়া লিঙ্ক থেকে এবং পড়ে নিন সহজেই। লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করতে না পারলে আমাদের জানিয়ে দিন। ফিক্স করে দেয়া হবে। অথবা নিচে কমেন্ট করুন কেমন লাগলো বইটি!
বই পড়া অনেকের জন্য নেশা, অনেকের জন্য পরম ভালোবাসার একটি বস্তু। এই বইকে আমরা সহজলভ্য এবং সহজে পাওয়ার বস্তু হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছি, তাই আমাদের সাইট আমরা ডিজাইন করেছি ইউজার ফ্রেন্ডলিনেস বজায় রেখে। সাইটের কোনো ধরনের ইস্যু নিয়ে কোনো মতামত থাকলে জানাতে পারেন, এবং বই এর জন্যে রিকুয়েস্ট করতে পারেন উপরে বাটন দেয়া আছে নিচেও লিঙ্ক দেয়া আছে। সর্বোপরি সকলের সহযোগিতা কাম্য সাইট চালাতে হলে, ইনশাআল্লাহ আমরা সকলেই বই পড়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারবো!